নিজস্ব প্রতিনিধি: প্রথমে এসেছিল সুসংবাদ। তাতে শুধু যে গ্রামের মানসম্মান বেড়েছিল তাই নয়, আগামী দিনে গ্রামের অর্থনীতির চাকা বদলের সম্ভাবনাও দেখা দিয়েছিল। কিন্তু সেই গ্রামেই শনি সকাল থেকে নেমে এল শোকের ছায়া। নজরে মুর্শিদাবাদ(Murshidabad) জেলার সতীপীঠ কিরীটেশ্বরী গ্রাম(Kiriteshwari Village)। গত সপ্তাহেই সামনে এসেছিল দেশের সেরা গ্রামীণ পর্যটন কেন্দ্র হিসাবে কেন্দ্র সরকারের পর্যটন মন্ত্রকের পুরষ্কার পাওয়ার ঘটনা। সেই ঘটনায় ট্যুইট করে গ্রামবাসীদের শুভেচ্ছা জানিয়েছিলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়(Mamata Banerjee)। বস্তুত তিনিই ওই ঘটনা সবার সামনে এনেছিলেন। কিন্তু সেই পুরষ্কার নিয়ে দিল্লি থেকে ফিরেই শুক্রবার মাঝরাতে মৃত্যু হল কিরীটেশ্বরী মন্দির কমিটির সম্পাদক(Kiriteswari Mandir Committee Secretary) প্রভাতচন্দ্র দাসের(Prabhat Chandra Das)। বয়স হয়েছিল মাত্র ৫৪ বছর। তাঁর এহেন আকস্মিক প্রয়াণে শোকস্তব্ধ এখন গোটা গ্রাম।
জানা গিয়েছে, ২৭ তারিখ দিল্লিতে প্রভাতবাবু ও তাঁর সঙ্গীরা পর্যটন মন্ত্রকের কাছ থেকে গ্রামের জন্য পুরষ্কারটি গ্রহণ করেন। তারপর থেকেই খুশিতে ডগমগ করছিল গোটা গ্রাম। ওই পুরস্কার নিতে সোমবার বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন প্রভাতবাবু। বুধবার মন্দির কমিটির পক্ষ থেকে পর্যটন মন্ত্রকের দেওয়া সেরা পর্যটন গ্রামের খেতাব গ্রহণ করেন তিনি। আনুষ্ঠানিক পর্ব সেরে শুক্রবার দুপুরে দিল্লি থেকে গ্রামে পৌঁছোন প্রভাতচন্দ্র। ওই শিক্ষকের পরিবার সূত্রে খবর, বাড়ি ফিরে কোনও শারীরিক অসুস্থতা না থাকলেও দীর্ঘ ট্রেনযাত্রা ধকলে খানিকটা দুর্বল বোধ করছিলেন উনি। তবে শুক্রবার রাত্রি ১২টা নাগাদ হঠাৎ শ্বাসকষ্ট অনুভব করতে শুরু করেন কিরীটেশ্বরী মন্দিরের সম্পাদক। তড়িঘড়ি তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার প্রস্তুতি নেয় পরিবার। হাসপাতাল নিয়ে যাওয়ার পথেই রাত ১টা ৪৫ মিনিটে তিনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন বলে জানিয়েছে পরিবার।
মুকুন্দবাগ উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক ছিলেন প্রভাতচন্দ্র। পাশাপাশি, প্রাচীন মন্দিরের সম্পাদকের ভার ছিল তাঁর উপর। মৃতের ভাই বাপি দাসের কথায়, ‘সেরা পর্যটন গ্রামের স্বীকৃতির খবর ঘোষণার পর থেকে ভীষণ উত্তেজিত ছিল দাদা। পুরস্কার নিয়ে গতকাল দুপুরে দিল্লি থেকে গ্রামে ফিরে এসে গ্রাম নিয়ে অনেক পরিকল্পনার কথা জানিয়েছিল দাদা। রাতে শুতে যাওয়ার সময় বলল, বুকে সামান্য ব্যথা অনুভব করছে। মধ্যরাতে হঠাৎ শ্বাসকষ্ট শুরু হল দাদার। হাসপাতাল নিয়ে যাওয়ার সময়টুকু পেলাম না আমরা।’