নিজস্ব প্রতিনিধি: আবারও ভারতসেরা বাংলা(Bengal)। এবার দেশের সেরা গ্রামীণ পর্যটনকেন্দ্র(Best Tourism Village of India) হিসাবে পুরষ্কৃত হতে চলেছে মুর্শিদাবাদ(Murshidabad) জেলার লালবাগ ব্লকের কিরিটেশ্বরী(Kiriteshwari) গ্রাম পঞ্চায়েত। এই গ্রাম পঞ্চায়েতের কিরিটকোনা গ্রামেই রয়েছে সতীপীঠ কিরিটেশ্বরী। এদিন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়(Mamata Banerjee) একটি ট্যুইট করে জানিয়েছেন, ‘খুবই আনন্দের সঙ্গে জানাচ্ছি যে পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদ জেলার কিরিটেশ্বরীকে ভারত সরকারের পর্যটন মন্ত্রক(Ministry of Tourism) দেশের সেরা গ্রামীণ পর্যটনকেন্দ্র হিসাবে বেছে নিয়েছে। ২০২৩ সালের সেরা গ্রামীণ পর্যটনকেন্দ্র বাছাইয়ের জন্য যে প্রতিযোগিতা হয়েছিল সেখানেই দেশের ৩১টি অঙ্গরাজ্য ও কেন্দ্র শাসিত এলাকার মোট ৭৯৫টি আবেদনের মধ্যে থেকে কিরিটেশ্বরীকে বেছে নেওয়া হয়েছে। আগামী ২৭ সেপ্টেম্বর নয়া দিল্লিতে এই পুরষ্কার দেওয়া হবে। আমি কিরিটেশ্বরী গ্রামের সকল বাসিন্দাকে এই ঘটনার জন্য শুভেচ্ছা জানাচ্ছি। জয় বাংলা।’
হিন্দুপুরাণ মতে দেশের ৫১টি সতীপীঠ আছে। পুরাণ বলছে, দক্ষযজ্ঞকালে সতীর দেহত্যাগের পরে ভগবান শঙ্কর যে তাণ্ডবলীলা শুরু করেছিলেন তাতে বিশ্বসংসার ধ্বংস হয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়েছিল। সেই ঘটনা থেকে বিশ্বকে বাঁচাতে ভগবার শ্রীবিষ্ণু তাঁর সুদর্শন চক্রের মাধ্যমে সতীর দেহ টুক্রো টুকরে করে দিয়েছিলেন। সতীর সেই দেহ ৫১টি খণ্ডে বিভক্ত হয়ে ভারতীয় উপমহাদেশের ৫১টি স্থানে ছড়িয়ে পড়ে। এর মধ্যে সব থেকে বেশি সতীপীঠ গড়ে ওঠে এই বাংলার বুকে। শুধুমাত্র বীরভূম জেলার মধ্যেই রয়েছে ৫টি সতীপীঠ। এগুলি হল – বক্রেশ্বর, নলহাটি, সাঁইথিয়া, কঙ্কালিতলা ও ফুল্লরা। দেশের মধ্যে আর কোনও জেলায় এতবশি সতীপীঠ নেই। সেই বীরভূমের প্রতিবেশী জেলা মুর্শিদাবাদেই রয়েছে কিরিটেশ্বরী মন্দির। পুরাণ মতে এখানে দেবীর মাথার মুকুট পড়েছিল। তাই এই পীঠস্থানের অধিষ্ঠীত দেবীকে মুকুটেশ্বরীও বলা হয়। যদিও দেবীকে এখানে বিমলা নামেই ডাকা হয়। দেবীর ভৈরব শিবেরই রূপ সম্ভর্তা।
গ্রামবাসীদের দাবি, এই তীর্থকেন্দ্র হাজার বছরেরও বেশি পুরাতন। কিন্তু এটা এখনও জানা যায়নি প্রথম কে এই স্থানকে সতীপীঠ হিসাবে চিহ্নিত করেছিল। তবে একটি টিলার ওপর দেবীর অবস্থান এবং বহুবার তাঁর মন্দির নির্মীত হয়েছে, সংস্কার হয়েছে। গ্রামবাসীদের দাবি, দেবী এখানে প্রতিদিন রাতে ঘুমাতে আসেন। তাই রাতে তাঁরা মন্দিরচত্বরে আসেন না। কেননা তাঁরা চান না দেবীর নিদ্রায় ব্যাঘাত ঘটুক। কিরিটেশ্বরী গ্রাম দিয়েই লালবাগ-নবগ্রাম জেলা সড়ক চলে গিয়েছে। জেলার সদর শহর বহরমপুর থেকে তাই সড়কপথেই এখানে গাড়ি ভাড়া করে চলে আসা যায়। বাস থাকলেও পর্যটেক্রা বা তীর্থযাত্রীরা গাড়ি করে আসতেই পছন্দ করেন। এর বাইরে গ্রাম থেকে মাত্র ৫কিমি দূরে রয়েছে পূর্ব রেলের হাওড়া-কাটোয়া-আজিমগঞ্জ শাখার ডাহাপাড়াধাম স্টেশন। সেখান থেকেও টোটো ভাড়া করে আসা যায় এই মন্দিরে।