নিজস্ব প্রতিনিধি: তাপপ্রবাহের জেরে কেবল মানুষের প্রতিদিনের জীবনে হাঁসফাস অবস্থা হয়েছে তা নয়। অতি গরম এবং বৃষ্টির আকালের জেরে ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে গ্রীষ্মকালীন ফলেরও। বৈশাখের মাঝামাঝি সময়ে এসেও দক্ষিণবঙ্গে বৃষ্টি না হওয়ায় চলতি মরসুমে লিচুর ফলনে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে বলে জানালেন চাষিরা। চাষের ক্ষতি হওয়ায় এই বছর আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়বেন বলে আশঙ্কা করছেন তাঁরা।
অত্যাধিক তাপমাত্রার কারণে গাছে থাকা লিচুর উপরের অংশ পুড়ে যাচ্ছে। এর পর ধীরে ধীরে গোটা লিচুটা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। বাগানে একের পর এক গাছের লিচু এইভাবে পুড়ে যাওয়ায় ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়ছেন চাষিরা। নদিয়ার এক লিচু চাষি এই বিষয়ে জানান, “লিচু বাগান রয়েছে দেড়শ থেকে দুইশ বিঘা। সূর্যের প্রখর তাপের কারণে অধিকাংশ লিচুর উপরের অংশ পুড়ে যাচ্ছে। বৃষ্টি না হলে আরও ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে বলে জানান তিনি। কিছু কিছু চাষিরা দোকান থেকে ধার করে ওষুধ নিয়ে আসছে লিচু গাছে দেওয়ার জন্য। তাতেও তেমন একটা কাজ দিচ্ছে না। এই সমস্যা থেকে রেহাই পেতে একমাত্র পর্যাপ্ত পরিমাণে বৃষ্টি দরকার বলে জানান তিনি।
লিচুর ফলন ভাল হয় উষ্ণ ও আর্দ্র জলবায়ুতে। বাৎসরিক বৃষ্টিপাত ১৫০ সেমি. ও বাতাসের আপেক্ষিক আর্দ্রতা ৭০-৮৫% লিচু চাষের পক্ষে উপযোগী। মাটি ও জলবায়ুর ধরণ অনুযায়ী ঋতু অনুযায়ী দিতে হয় জলসেচ। গ্রীষ্মকালে লিচুবাগানে এক সপ্তাহ থেকে ১০ পর পর সেচ দিতে হয়। শীতকালে ১০ থেকে ১২ দিন অন্তর দিতে হয় জলসেচ। তবে যদি সারাবছর ১২৫ সেমি.র বেশি বৃষ্টিপাত হয়, তবে আর লিচু গাছে সেচের প্রয়োজন হয় না বলে জানান চাষিরা। টাকা খরচ করে লিচু চাষ করার পর ফলন না হলে উপার্জন হবে না, সেক্ষেত্রে কী ভাবে চলবে তাদের সংসার। একইসঙ্গে ঋণ নিয়ে যে চাষিরা চাষের কাজে ব্যবহারের জন্য ওষুধ ও কীটনাশক কিনেছেন তার খরচ কোথা থেকে উঠবে তা নিয়ে চিন্তায় ঘুম উড়েছে তাঁদের।