নিজস্ব প্রতিনিধি, মালদা: মায়ের জন্য কিছু করতে না পারার কষ্ট তাড়িয়ে বেড়াচ্ছিল ৩৩ বছরের একান্ত মণ্ডলকে৷ তার উপর নিজেও পেটের অসুখে ভুগছিলেন৷ এসব নিয়ে মানসিক অবসাদে দিন কাটছিল তাঁর৷ শেষ পর্যন্ত সেই অবসাদে আত্মঘাতী হন তিনি৷ তা নিয়ে তিনি সুইসাইড নোটও লিখে গিয়েছেন৷ শনিবার সকালে বাড়ি থেকে সামান্য দূরে একটি আমবাগানের গাছ থেকে তাঁর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার করে পুলিশ৷ ঘটনাটি ঘটেছে পুরাতন মালদার(Old Malda) মুচিয়া মনোহরপুর গ্রামে৷ গোটা ঘটনায় শোকের ছায়া ছড়িয়ে পড়েছে ওই এলাকায়৷ ৩৩ বছরের একান্ত এলাকায় এই নামেই পরিচিত৷
নামের সঙ্গে তাঁর চরিত্রগত মিলও রয়েছে৷ জানা যাচ্ছে, সবসময় একা থাকতেই ভালোবাসতেন তিনি৷ মা ছাড়া তাঁর দ্বিতীয় কেউ পৃথিবীতে ছিল না৷ বিয়েও করেননি৷ রাজমিস্ত্রির কাজ করতেন৷ সম্প্রতি পেটের রোগে আক্রান্ত হন তিনি৷ তাঁর কিছু হয়ে গেলে মায়ের কী হবে, তা নিয়ে সবসময় ভাবতেন৷ সেকথা কাজের জায়গায় সহকর্মীদের কাছেও বলেছিলেন৷ দুই দাদা পরিবার নিয়ে পৃথক থাকেন৷ মাকে নিয়ে তিনি থাকতেন৷ গতকাল সন্ধে থেকে তাঁর কোনও খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না৷ বাড়ির লোকজন ভেবেছিলেন, হয়তো তিনি শিবরাত্রি উপলক্ষ্যে শিবলিঙ্গে জল ঢালতে গিয়েছেন৷ এদিন সকালে তাঁকে খুঁজতে বেরোন বৃদ্ধা মা সাবিত্রী মণ্ডল৷ তখনই বাড়ি থেকে সামান্য দূরে একটি আমগাছে(Mango Tree) তাঁর ঝুলন্ত দেহ দেখতে পাওয়া যায়৷ গ্রামবাসীদের কাছে খবর পেয়ে দেহটি উদ্ধার করে নিয়ে যায় মালদা থানার পুলিশ৷
একান্তের এক বন্ধু প্রসেনজিৎ দেবনাথ জানান, ‘একান্ত আমার ছেলেবেলার বন্ধু৷ ভালো ছেলে৷ কিন্তু খুব চাপা স্বভাবের ছিল৷ আজ সকালে জানতে পারি, গতকাল সন্ধে থেকে ওকে পাওয়া যাচ্ছিল না৷ শেষ পর্যন্ত আজ সকালে বাড়ি থেকে সামান্য দূরে একটি বাগান থেকে ওর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়েছে৷ ওর পকেট থেকে সুইসাইড নোটও(Suicide Note) পাওয়া গিয়েছে৷ সেখানে ও তার মাকে নিয়ে দুশ্চিন্তায় থাকার কথা জানিয়েছে৷ মাকে নিয়েই ও মানসিক অবসাদে ভুগছিল৷ সম্ভবত সেই অবসাদের জেরেই ও আত্মহত্যা করেছে৷’