নিজস্ব প্রতিনিধি: দুই স্থানের ব্যবধান ১০০ কিলোমিটারেরও বেশি। অথচ সেই দুইস্থানকেই এদিন জুড়ে দিলেন তিনি। বীরভূম(Birbhum) জেলার সিউড়ি(Suri) থেকে তিনি সরব হলেন উত্তর ২৪ পরগনা(North 24 Pargana) জেলার সন্দেশখালি(Sandeshkhali) নিয়ে। একই সঙ্গে কাঠগড়ায় তুললেন বাম-গেরুয়া আর মিডিয়াকেও। নজরে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়(Mamata Banerjee)। এদিন অর্থাৎ রবিবার তিনি সিউড়িতে গিয়েছিলেন সরকারি পরিষেবা প্রদানের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে সেই সভা থেকেই সন্দেশখালি নিয়ে সরব হলেন তিনি। জানালেন, ‘একটা ঘটনা ঘটেছে। ঘটনা ঘটানো হয়েছে। প্রথমে ED-কে পাঠিয়েছে। তার পর তাদের বন্ধু বিজেপি(BJP) ঢুকেছে। তিলকে তাল করা হয়েছে। শান্তির পরিবর্তে আগুন লাগাচ্ছে। আমি অফিসার পাঠাব, যার যা অভিযোগ আছে, বলবেন। কেউ যদি কিছু নিয়ে থাকে, সব ফেরত দেওয়া হবে। আজ পর্যন্ত কোনও মহিলা, কোনও অভিযোগ করেননি। আমি পুলিশকে বলি, স্বতঃপ্রণোদিত ভাবে পদক্ষেপ করতে। আমাদের ব্লক প্রেসিডেন্ট গ্রেফতার হয়েছেন। আমি কিছু বললে, করে দেখাই। ভাঙড়ে আরাবুলও তো গ্রেফতার হয়েছে। ও তো আমাদের কর্মী! তোমরা কতজনকে গ্রেফতার করেছো।’
এর পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘কেউ যদি কিছু নিয়ে থাকে, সব ফেরত দেওয়া হবে। কোনও অভিযোগ হয়নি। আমি সুয়োমোটো করতে বলেছি। আমি কি পারি না গদ্দারদের অ্যারেস্ট করতে। একটু সময় দিচ্ছি। সুতো ছাড়ছি। গদ্দারদের সব চুরি, দুর্নীতির মামলা। সবাইকে বলে চোর। ওরা চোরেদের ঠাকুরদা। মায়েরা বলেন, শূন্য কলসি বড্ড বাজে বেশি। এরা হচ্ছে শূন্য কলসি। কিচ্ছু নেই। দিল্লি হ্যাঁ বললে ধিতাং ধিতাং বলে নৃত্য করে। না বললে মন খারাপ করে ঘরে বসে থাকে। দিল্লির দয়ায় রাজনীতি করে। বাংলাকে ভালবাসে না। এরা বাঙালিবিরোধী, মহিলাবিরোধী, দলিত বিরোধী, কৃষক বিরোধী। সিউড়িতেও নানান চক্রান্ত চলছে। বীরভূমেও চলছে। মনে রাখবেন আমরা বসন্তের কোকিল না। আমরা ৩৬৫ দিন মানুষের পাশে থাকি। আমরা জমিদার নই। আমরা পাহারাদার। আমরা মানুষের সুখ-দুঃখে তাঁদের পাশে আছি। যখন কেউ বলে বাংলায় কাজ হয়েছে কোথায়? আমি তখন বলি দেখতে পাও না ৩৪ বছর সিপিএম ছিল কী করেছে! বিজেপি ১৮টা সাংসদ নিয়ে গিয়েছে। কী করেছে? ১০০ দিনের কাজের টাকা বন্ধ করে দিয়েছে। সব ট্যাক্স তুলে নিয়ে যায় কেন্দ্র। এ তো মাছের তেলে মাছ ভাজা। ১০০ দিনের কাজে যাঁরা টাকা পায়নি তাঁদের এই মাসের ২৬ তারিখ থেকে টাকা দেবে রাজ্য। কেন্দ্রের কাছে আর হাত পাতব না। আমাদের টাকা তুলে নিয়ে যেতে পারবে না। রাজ্যের টাকা রাজ্যেই থাকবে। নির্বাচন এলেই ক্যা ক্যা বলে চিৎকার করে। জানেন CAA হলে কী হবে? পাঁচ বছরের জন্য সব বাতিল হয়ে যাবে, ভোটার তালিকা-সহ সব তালিকা থেকে নাম বাদ যাবে। সব অধিকার চলে যাবে আপনার। পাঁচ বছর পর নাগরিক হবেন। কিন্তু আপনারা তো ইতিমধ্যেই নাগরিক? কেন আবার নিতে হবে? কী ভাবে ওরা? শরীরকে কেটে দু’ভাগ করে চলে না? আমি বলি, খ্যাপা, মুণ্ডু গেলে খাবি কী? হৃদয় আমাদের একটাই, সেটাকে ভাগ করলে চলবে কী করে?’
এর পাশাপাশি এদিন মিডিয়াকেও একহাত নিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। জানিয়েছেন, ‘আমি সাংবাদিকদের দোষ দিই না। কারণ মিডিয়াগুলোকে কিনে নিয়েছে। সকাল থেকেই বলে দেয় কী দেখানো হবে আর কী দেখানো যাবে না। সব হাতের পুতুল হয়ে গিয়েছে। ভাবছে এভাবেই সব চলে যাবে। আসলে যারা কিনছে তাঁদেরই যাওয়ার দিন হয়ে গিয়েছে। যা খুশি একটা ছবি বানিয়ে ভিডিয়ো বানিয়ে ছেড়ে দিচ্ছে। একদম ওইসব ছবি আর ভিডিয়ো বিশ্বাস করবেন না। প্রয়োজনে ক্রস চেক করুন। সব ফেক নিউজ ছড়াচ্ছে। মধ্য প্রদেশের ঘটনাকে বাংলায় হচ্ছে বলে চালিয়ে দিচ্ছে। ত্রিপুরার ঘটনাকে বাংলা বলে দেখাচ্ছে। উত্তরপ্রদেশের ছবিকে বাংলার ছবি বলে চালিয়ে দিচ্ছে। ওই সব চ্যানেল একদম দেখবেন না। বাম বিজেপি কংগ্রেস সব এক হয়ে গিয়েছে। আমরা একলাই লড়ছি, একলাই লড়বো। কেউ কিছুতে ভয় পাবেন না। আমি আছি পাশে।’