নিজস্ব প্রতিনিধি: পাহাড়ের উন্নয়ন আর শান্তির লক্ষ্যে ২০১১ সালে পরিবর্তনের পরেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়(Mamata Banerjee) গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার সঙ্গে আলোচনা শুরু করেন। তারই ফলশ্রুতি জিটিএ(GTA) বা গোর্খাল্যান্ড টেরিটোরিয়াল অ্যাডমিনস্ট্রেশনের জন্ম। যদিও সেই জিটিএ দার্জিলিংয়ের(Darjeeling) পাহাড়ের বুকে শান্তি এনে দিয়েছে একথা বলা যায় না। একই সঙ্গে সেই শান্তি না এনে দেওয়ার জন্য রাজ্য সরকারকেও দোষ দেওয়া যায় না। বরঞ্চ সেই দোষের ভাগিদার মোর্চার শীর্ষ নেতৃত্ব বিমল গুরুং এবং অবশ্যই বিজেপির। যদিও গুরুংয়ের সঙ্গে বিজেপির ঘনিষ্ঠতা এখন অতীত। গুরুং এখন অনেক বেশি মমতাপন্থী। যদিও পাহাড়ের বুকে বার বার একের পর এক নির্বাচনে সামনে আসছে যে পাহাড়ের মানুষ আর তাঁকে সেভাবে চাইছেন না। গুরুংয়ের সেই দাপটও আজ আর নেই। এই অবস্থায় পাহাড় যাত্রার পূর্বে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সমতল থেকেই জিটিএ নির্বাচন নিয়ে স্পষ্ট বার্তা দিলেন। বার্তা দিলেন পাহাড়ে ত্রিস্তর পঞ্চায়েত(Panchayet) নির্বাচন নিয়েও। বার্তা দিয়েছেন পাহাড়ের মানুষকে পাট্টা(Patta) প্রদান নিয়েও।
মুখ্যমন্ত্রী এদিন জিটিএ প্রসঙ্গে জানান, ‘আমার পাহাড়ে যাওয়া আর সেখানে থাকা নিয়ে অনেকে অনেক কথা বলছে। কেউ বলছে আমি ছ’দিন থাকব৷ কেউ বলছে সাতদিন৷ কেউ বলছে ১৫ দিন৷ আমি তিনদিন পাহাড়ে থাকব৷ পাহাড়ে থেকে জিটিএ নিয়ে আলোচনা করব৷ আমি চাই জিটিএ নির্বাচন হোক৷ ওই নির্বাচনটা মে-জুনে করতে চাই৷ আমি চাই পাহাড়েও পঞ্চায়েত নির্বাচন হোক। ওখানে এখন দ্বিস্তরীয় পঞ্চায়েত আছে। আমরা চাই ওখানেও ত্রিস্তরীয় পঞ্চায়েত ব্যবস্থা গড়ে উঠুক। জেলা পরিষদ হোক। কিন্তু এ জন্য আইন সংশোধন করতে হবে৷ সেটা কেন্দ্রই পারবে৷ কেন্দ্রকে বলব আইনটা সংশোধন করুন৷’ উল্লেখ্য মুখ্যমন্ত্রীর এই সফরের ঠিক আগে কালিম্পংয়ের নির্দল বিধায়ক রুদেন লেপচা তাঁকে একটি চিঠি দেন। সেই চিঠিতে তিনি দাবি করেন, কালিম্পং মহকুমা এলাকাকে জিটিএ থেকে বাদ দিতে হবে। কালিম্পংকে যেহেতু আলাদা জেলা হিসাবে ঘোষণা করা হয়েছে। তাই জিটিএ-এর সঙ্গে একে যুক্ত করে রাখার প্রয়োজন নেই। বরং সেখানে ত্রিস্তরীয় পঞ্চায়েত ব্যবস্থা চালু হোক এখানে। গঠিত হোক জেলা পরিষদ। এদিন মুখ্যমন্ত্রীর মুখেও পাহাড়ের পঞ্চায়েত নির্বাচন নিয়ে সেই একই বার্তা শোনা গেল যা বেশ তাৎপর্যপূর্ণ।
একই সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী এদিন পাহাড়ের আমজনতা থেকে সমতলের জনতাকেও জমির পাট্টা প্রদান নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ বার্তা দেন। তিনি বলেন, ‘আমি উচ্ছেদে বিশ্বাসী নই৷ সেই জন্য সমস্ত উদ্বাস্তু কলোনিকে পাট্টা দিয়েছে সরকার৷ কিন্তু জমি নিয়ে আইনি জটিলতার কারণে পাহাড়ে পাট্টা বিলি করা যায়নি৷ কিন্তু এবার পাহাড়ের মানুষও জমির পাট্টা পাবেন৷ ২৯ মার্চ দার্জিলিয়ের ম্যালে একটি অনুষ্ঠান থেকে উদ্বাস্তুদের পাট্টা দেব আমি৷ বাংলা যা পারে তা অন্য কেউ পারে না৷ দার্জিলিয়ের উদ্বাস্তুদের জমির পাট্টা দেওয়া হবে৷ কাউকে উচ্ছেদ করা হবে না৷ এমনকি যারা রেলের জমিতেও আছেন তাঁদেরও উচ্ছেদ করা হবে না। তাঁরাও জমির পাট্টা পাবেন। রাজ্য সরকার ৮৪টি কলোনিকে সরকারি অনুমোদন দিয়েছে। আস্তে আস্তে রাজ্যের সব কলোনিকেই এই স্বীকৃতি দেওয়া হবে।’