নিজস্ব প্রতিনিধি: তীব্র গরম উপেক্ষা করে বুধ সকাল থেকেই মেদিনীপুর(Midnapur) কলেজ মাঠে ভিড় করতে শুরু করেছিলেন রাজ্যের শাসক দলের কর্মী ও নেতারা। ভিড় জমান মহিলাদের পাশাপাশি আমজনতাও। আর সেই ভিড়ে ঠাসা সভা থেকেই দলের প্রতিটি স্তরের কর্মী ও নেতাদের জন্য বড় বার্তা দিয়ে দিলেন তৃণমূল(TMC) সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়(Mamata Banerjee)। মঙ্গলবার থেকেই শুরু হয়েছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ৪ দিনের জঙ্গলমহল(Junglemahal) সফর। গতকাল তিনি প্রশাসনিক বৈঠক সেরেছেন পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার আধিকারিকদের নিয়ে। বুধ সকালে মেদিনীপুর কলেজ মাঠে ছিল মুখ্যমন্ত্রীর দলীয় কর্মীসভা। কিন্তু সেই দলীয় কর্মীসভাই এদিন পরিণত হয় জনসভায়। সেই সভার মঞ্চ থেকে দাঁড়িয়েই মমতা যেমন ফের কেন্দ্রকে বকেয়া না মেটানোর জন্য আক্রমণ শানিয়েছেন তেমনি দলীয় কর্মীদের(Party Workers) কাছেও বড় বার্তা দিয়ে দিয়েছেন।
এদিনের সভা থেকে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘যে জেলায় প্রশাসনিক বৈঠক থাকবে, সেখানে বুথ কর্মীদের সঙ্গেও কথা বলব। বুথ কর্মীরাই তৃণমূল কংগ্রেসের আসল সম্পদ। নেতা গাছ থেকে পড়ে না, কাজের মধ্যে দিয়ে তৈরি হয়। মানুষের পাশে যে দাঁড়ায়, সেই নেতা। কিছু লোক আছে যাঁরা কুকর্ম করে, তাঁদের মানুষ চিনে নেয়। যারা মাঠে বসে থাকে তাঁরাই দলের আসল কর্মী। যাঁরা মঞ্চে বসে থাকেন তাঁরা বড় নন। মাঠে যারা বসেন তাঁরাই বড়। মানুষের জন্য কাজ করতে হবে। কারণ নেতা কাজের মধ্যে দিয়ে তৈরি হয়। যে কাজ করে সেই নেতাদের আমি পছন্দ করি। সাধারণ মানুষের জন্য সব সময় কাজ করতে হবে। সাধারণ মানুষকে সাহায্য করতে হবে। যে মানুষের পাশে দাঁড়ায় সেই আসল নেতা। মঞ্চে বসে থাকে হাতে গোনা কজন। আর নীচে বসে থাকে লক্ষ লক্ষ জন। কারা বড় কর্মী, সেটা মানতে হবে। তৃণমূল কংগ্রেস একদিন সারা বিশ্ব জয় করবে। মানুষ যাদের ভালোবাসে না, আমিও তাদের ভালোবাসব না। এই জেলা সংগ্রামের জন্ম দেয়। তাই ৯ অগাস্ট ভারত ছাড়ো আন্দোলনের বর্ষপূর্তিতে ফের মেদিনীপুরে আসব।’
বুধবার সকাল থেকেই ট্রেনে, বাসে, ভাড়ার গাড়িতে করে তৃণমূলের কর্মীরা কলেজ মাঠে জড়ো হতে শুরু করেন। মমতার ছবিতে মুড়ে দেওয়া হয় গোটা শহর। আর সভার শুরুর মুখেই দেখা যায় তা আর কর্মী সভায় আটকে থাকেনি। কার্যত জনসমুদ্রে পরিণত হয়েছে। সেই ভিড়ে ঠাসা সভা থেকেই মমতা জানান, ‘বেলপাহাড়িতে একসময় মানুষ পিঁপড়ে খেয়ে থাকত। এখন সেখানে সমস্ত সরকারি সুযোগ সুবিধার প্রকল্প মিলছে। একদিন মিষ্টি না খেয়ে যিনি খেতে পাচ্ছেন না তাঁর কাছে গিয়ে বলতে হবে মাসিমা আপনি খান।’ তবে লক্ষ্যণীয় ভাবে এদিনের সভা থেকে মমতা দিল্লি জয়ের ডাকও দিয়েছেন। বলেছেন, ‘তৃণমূলকে দেশের অন্যতম শক্তি হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। আমাদের চিন্তা ভাবনাই সকলের থেকে শ্রেষ্ঠও। আজ আমরা যা ভাবি গোটা দেশ অনেক পরে তা ভাবে। রাজ্যে ক্ষমতা ধরে রাখার মধ্যেই দলকে সীমাবদ্ধ রাখলেই চলবে না। নতুন দেশ গড়ার লক্ষ্যে আমাদের প্রত্যেক দরজায় গিয়ে কাজ করতে হবে। লোকের কী অসুবিধা আছে হিয়ে জানতে হবে।’