নিজস্ব প্রতিনিধি,খড়দা: ফের শহরতলীর বুকে মিললো মাওবাদী পোস্টার। যাকে ঘিরে ছড়িয়ে পড়েছে চাঞ্চল্য। মঙ্গলবার সকালে উত্তর চব্বিশ পরগনা জেলার ব্যারাকপুর কমিশনার অন্তর্গত খড়দা থানা এলাকায় বিভিন্ন জায়গায় দেওয়ালে মাওবাদীদের নামে ছাপানো পোস্টার দেখতে পান সাধারণ মানুষজন। এরপরই খবর পায় খড়দা থানার(Kardaha P.S.) পুলিশ। তারা খড়দা বাজার ও স্টেশন সংলগ্ন বিভিন্ন জায়গা থেকে ওই পোস্টার গুলি ছিড়ে নিয়ে যায়। জঙ্গল ছেড়ে খুব শহরের বুকে মাওবাদীদের লাল ও অন্যান্য রঙে ছাপানো পোস্টার কে বা কারা দেওয়ালে সাঁটালো তা নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
গত কয়েক মাস আগে বেলঘড়িয়া এক্সপ্রেস সংলগ্ন এলাকা থেকে মাও কার্যকলাপে যুক্ত থাকার অপরাধে এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। খড়দহ, সোদপুর(Sodepur) এবং ব্যারাকপুর এলাকায় মাওবাদী(Maoist) সংগঠনের বেশ কিছু নেতা গোপনে কার্যকলাপ চালাচ্ছে বলে গোয়েন্দাদের কাছে আগাম খবর রয়েছে। জঙ্গলমহলে হারিয়ে যাওয়া মাটি পুনরুদ্ধার করতে ইতিমধ্যেই রাতের অন্ধকারে ঝাড়খন্ড(Jharkhand) সীমান্তবর্তী এ রাজ্যের গ্রামগুলিতে আসা-যাওয়া শুরু করেছে ভিন রাজ্যের মাও নেতারা। গোয়েন্দাদের দাবি জঙ্গলমহলে সংগঠন দুর্বল হয়ে পড়ায় মাওবাদীদের একটি অংশ শহর শহরতলীতে গোপনে ফের নিজেদের সংগঠন বিস্তার করার জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছে। তারই প্রতিফলন খড়দহের বুকে মাও পোস্টার।
খড়দহ সংলগ্ন এলাকায় এক নম্বর প্ল্যাটফর্ম ও চার নম্বর প্লাটফর্মে দুপাশে পরলো মাওবাদী পোস্টার। সেই পোস্টারে লেখা বাইশে এপ্রিল কমরেড লেলিনের নামে আমাদের শপথ ফ্যাসিবাদকে গুঁড়িয়ে দাও শ্রমিক কৃষক রাজ বানাও ঘরে ঘরে বেকার বাজারে ই ভিএম ছুড়ে ফেলেএবারে জাগুন। সরকার বদল পন্ডাশ্রম বিপ্লবী রায় ওদের জম মাওবাদী লেলিনবাদী সংগঠন এর নামে লেখা পোস্টারে এলাকা ভরে গেছে, । তৃণমূলের দাবি এলাকায় সন্ত্রাস সৃষ্টি করতে ভয় দেখিয়ে এ ধরনের পোস্টার লাগানো হচ্ছে। অপর দিকে বিজেপির দাবি প্রশাসন যদি কড়া হাতে দমন না করে তাহলে এই সুযোগে মাওবাদীরা তাদের ডানা বিস্তার করবে।
কোথা থেকে এই পোস্টার গুলি ছাপানো হয়েছে এবং এই পোস্টার গুলিতে যে ধরনের ভাষা ব্যবহার করা হয়েছে তাতে কিসের ইঙ্গিত বহন করছে তা খতিয়ে দেখতে রাজ্য পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের মাও কার্যকলাপ দমন বিভাগের অফিসাররা সক্রিয় হয়ে উঠেছেন। তবে রাজ্যে পুলিশের গোয়েন্দাদের একাংশের দাবি, যখন শহরের বুকে মাওবাদীদের আনাগোনা জানান দিচ্ছে, সেই সময় রাজ্য পুলিশের আইবি(IB) দপ্তরের সোর্স ফান্ড একদম তলানিতে এসে ঠেকেছে। কারণ রাজ্যের কোষাগারে যেহেতু টান পড়েছে তাই বর্তমান এডিজি আইবি মনোজ ভার্মা দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে অফিসারদের সমস্ত সোর্স ফান্ড বন্ধ করে দিয়েছেন। তাই খবর সংগ্রহের ক্ষেত্রে মাও কার্যকলাপ দমনে পটু গোয়েন্দারা বেশ কিছুটা বাধার সম্মুখীন হচ্ছেন। এই পরিস্থিতিতে খড়দহের বুকে মাওবাদীদের লাল পোস্টার তাই ঘাড়ে নিশ্বাস ফেলছে আইবি’র সদর দফতর লর্ড সিনহা রোডে।