এই মুহূর্তে

WEB Ad Valentine 3

WEB Ad_Valentine

মমতার প্রকল্পেই আস্থা মোদির, ভাবনায় সস্তার রেশন

নিজস্ব প্রতিনিধি: মুখে হাজারো বিরোধিতা, কেন্দ্রীয় এজেন্সিকে লেলিয়ে দেওয়া, নিত্যদিনের মিথ্যাচার। এত কিছু করেও বাংলার মাটিতে ছাপ ফেলতে ব্যর্থ নরেন্দ্র মোদির(Narendra Modi) সরকার ও তাঁর দল বিজেপি। এদিকে সময় ক্রমশই এগিয়ে আসছে। হাতে আর মাত্র দেড় বছর। তারপর আরও একবার ভোটের লাইনে দাঁড়াতে হবে মোদি সরকারকে। সেই ভোট বৈতরণী যাতে নির্বিঘ্নে পার হওয়া যায় তার জন্য এবার মমতা(Mamata Banerjee) মডেলের জনমুখী প্রকল্পগুলিকেই হাতিয়ার করতে চলেছে মোদি শিবির। আর সেই সূত্রেই মোদি সরকার এখন দেশের সকল নাগরিককে সস্তায় রেশন(Ration) দেওয়ার কথা ভাবনাচিন্তা করছে। সব কিছু ঠিক থাকলে ২০২৩ সাল থেকেই দেশজুড়ে এই সস্তার রেশন চালু করে দিতে পারে নরেন্দ্র মোদির সরকার।

একুশের বিধানসভা নির্বাচনে বাংলা দখলের জন্য ঝাঁপিয়ে পড়েছিল গেরুয়া শিবির। প্রধানমন্ত্রী থেকে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, কেন্দ্রের শাসক দলের জাতীয় সভাপতি বাংলায় ডেলি প্যাসেঞ্জারি শুরু তো করেইছিলেন সেই সঙ্গে তৃণমূলকে ভাঙানোর পাশাপাশি কেন্দ্রীয় এজেন্সিকে লেলিয়ে দেওয়া, কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে ভয় দেখানো এসবই চলেছিল যথেচ্ছারে। সেই সঙ্গে ছিল ক্রমাগত বাংলা, বাঙালি, বাংলার কৃষ্টি ও সংস্কৃতি মায় ভাষাকেও আক্রমণের পালা। কিন্তু এত কিছু করেও কিছু হয়নি। বাংলার মানুষ বাংলার মেয়ের হাতেই আবারও বাংলার দায়দায়িত্ব তুলে দিয়েছে। বিজেপি ৭৭টা আসন পেয়েছিল ঠিকই কিন্তু বাংলার বিধানসভা থেকে অতিবড় মমতা বিরোধী বাম আর কংগ্রেসকে ভ্যানিশ করে দিয়েছেন বাংলার জনতা। সেই ভোটে হারের ধাক্কা এখনও কাটিয়ে উঠতে পারেনি গেরুয়া শিবির। সময় যতই এগিয়েছে, দেশে মোদির বিকল্প মুখ হিসাবে ক্রমশই শক্তিশালী হিসাবে উঠে এসেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মুখ। বাংলার বুকে ঠিক ততটাই দ্রততার মধ্যে পায়ের তলার মাটি, জনপ্রিয়তা, গ্রহণযোগ্যতা হারাচ্ছে বিজেপি।

এই অবস্থায় মোদি সরকার অপ বিজেপির নানান সমীক্ষা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে মমতার এই জনপ্রিয়তার মুখে রয়েছে তাঁর চালু করা প্রায় শতাধিক জনমুখী প্রকল্প। খাদ্যসাথী, সবুজসাথী, স্বাস্থ্যসাথী, লক্ষ্মীর ভাণ্ডার, কন্যাশ্রী, ঐক্যশ্রী, সবুজশ্রী, জয় জোহর, বার্ধক্য ভাতা, বিধবা ভাতা, স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ড, বাংলার বাড়ি, গতিধারার মতো অজস্র প্রকল্প বাংলার মানুষকে সমৃদ্ধ করেছে ও বাংলার অর্থনীতিকে শক্তিশালী করে তুলেছে। অতিবড় কোভিড ঝড় ও লকডাউনও তাই বাংলার বুকে বড়সড় কোনও ক্ষতি করে যেতে পারেনি। পাশাপাশি সমীক্ষায় এটাও উঠে এসেছে মমতার সরকার সবাইকে যেভাবে বিনামূল্যে রেশন দিচ্ছে তা বাংলার মানুষকে মমতামুখী করে তুলেছে। সেখানে তাই অন্য কোনও দল বা সরকার দাঁত ফোটাতে পারছে না। এই তথ্য সামনে আসার পরে পরেই মোদি সরকার এবার সিদ্ধান্ত নিয়েছে মমতার সরকারের ধাঁচেই দেশের সকল নাগরিককে সস্তায় রেশন দেওয়া হবে।

নানা কারণে মোদি সরকারের জনপ্রিয়তা ও গ্রহণযোগ্যতা এখন পড়তির দিকে। জনপ্রিয়তা কমছে খোদ মোদিরও। এই অবস্থায় চব্বিশের লোকসভা নির্বাচনে ভোটারদের মন জয়ে মমতা-মডেলই এখন ভরসা গেরুয়া শিবিরের। খাদ্য ও গণবণ্টন মন্ত্রকের তৈরি ‘গোপন’ ক্যাবিনেট নোট(Cabinet Note) সেরকম ইঙ্গিতই দিচ্ছে। মোদি সরকারকে নীতি আয়োগের সুপারিশ, স্রেফ জাতীয় খাদ্য সুরক্ষা আইনের(National Food Security Act) আ‌ওতায় থাকা নাগরিকই নন, সবাইকে সস্তায় রেশন দেওয়া হোক। লোকসভা নির্বাচনের দিকে তাকিয়ে ‘থিঙ্ক ট্যাঙ্ক’-এর এই সুপারিশ হয়তো মেনে নিতে চলেছে মোদির মন্ত্রক। জাতীয় খাদ্য সুরক্ষা আইন বা এনএফএসএ’র আওতায় থাকা নাগরিকদের এখন সস্তায় চাল, গম এবং দানাশস্য দেয় কেন্দ্র। রেশন দোকানের মাধ্যমে চাল মেলে ৩ টাকা কেজি দরে। গম ২’টাকায়। জোয়ার, বাজরা, রাগি, ভুট্টার মতো দানাশস্য ১ টাকা কেজিতে। দেশের প্রায় ৮০ কোটি মানুষকে এই খাদ্যশস্য দেওয়া হয়। কিন্তু বাকিরা? তাঁদের খাদ্যশস্য কিনতে হয় বাজার থেকেই। অর্থাৎ, দেশের নাগরিক হয়েও গণবণ্টন ব্যবস্থার কোনও সুবিধা তাঁরা পান না।

যদিও এ ব্যাপারে ব্যতিক্রমী একমাত্র বাংলা। রাজ্যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ক্ষমতায় আসার পর সব নাগরিকই সস্তায় খাদ্যশস্য পান। জাতীয় খাদ্য সুরক্ষা আইনের আওতার বাইরে থাকা নাগরিকদের জন্য চালু হয় রাজ্য খাদ্য সুরক্ষা যোজনা-ওয়ান এবং টু। সরকারি হিসেব বলছে, এনএফএসএ’র অধীনে পশ্চিমবঙ্গে ৫ কোটি ৯৮ লক্ষ ৫ হাজার ৯৭৬ জন চাল-গম পেয়ে থাকেন। বাকি ২ কোটি ৯৪ লক্ষ ৭১ হাজার ২৬৭ জন নন-এনএফএসএকে সস্তায় খাদ্যশস্য দেয় রাজ্য সরকার। কোভিড পর্বে আরও জনমুখী হয় মমতার এই প্রকল্প। ২০২০ সালের পর থেকে রাজ্যের সব বাসিন্দাকে বিনামূল্যে রেশন দিচ্ছে রাজ্য। কেন্দ্র বিনামূল্যে রেশন প্রকল্প সেপ্টেম্বর মাসের পর বন্ধ করে দেওয়ার ঘোষণা করলেও মমতা জানিয়ে দিয়েছেন, রাজ্যে এই প্রকল্প চলবে আগের মতোই। অর্থাৎ নাগরিকরা চাল-গম পাবেন বিনামূল্যে। মমতার এই মডেল অনুসরণ করার পরামর্শই মোদি সরকারকে দিয়েছে নীতি আয়োগ।

খাদ্য ও গণবণ্টন মন্ত্রককে তারা জানিয়েছে, গণবণ্টন ব্যবস্থাকে সর্বজনীন করা যেতেই পারে। যাঁদের রেশন কার্ড নেই, তাঁদেরও নির্দিষ্ট দরে চাল, গম এবং দানাশস্য দেওয়া যেতে পারে। এজন্য দামও নির্ধারণ করে দিয়েছে নীতি আয়োগ। তারা জানিয়েছে, চাল দেওয়া হোক ২৫ টাকা কিলো দরে। গম ২০ টাকা এবং দানাশস্য ১৮ টাকা কিলো দরে। ভোট-ব্যাঙ্কের স্বার্থে নীতি আয়োগের এই সুপারিশ ‘গোপন’ ক্যাবিনেট নোটে যুক্ত করেছে মন্ত্রক। ক্যাবিনেট নোটে তারা লিখেছে, নীতি আয়োগ যে সুপারিশ করেছে, প্রয়োজন মতো সেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে। অর্থাৎ, এই প্রস্তাব কার্যকরে মন্ত্রকের আপত্তি নেই। এখন অপেক্ষা নরেন্দ্র মোদির সিলমোহরের। সব কিছু ঠিক থাকলে ২০২৩ সালেই এই ব্যবস্থা চালু হতে চলেছে দেশজুড়ে।

Published by:

Ei Muhurte

Share Link:

More Releted News:

পরবর্তী দু’দফার ভোটে কেন্দ্রীয় বাহিনী বাড়ছে, জানালেন মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক

১৯ মে নাগাদ আন্দামান-নিকোবর দ্বীপপুঞ্জে প্রবেশ করছে বর্ষা: আবহাওয়া দফতর

অনুব্রত মণ্ডলকে জেলে ভরে ভোট আটকানো যাবে না, প্রমাণ করল জনতা: শতাব্দী রায়

লেশমাত্র টেনশন নেই, ভোটের দিন দেদার নিজস্বী তুলে সময় কাটালেন মহুয়া

নদিয়ায় ইভিএম বিভ্রাট, সব ভোট নাকি পড়ছে বিজেপিতে, তুমুল উত্তেজনা দিনভর

স্মৃতিচারণ থেকে কটাক্ষ, উনিশের সংঘর্ষ থেকে বন্দুকের কারখানা, নোয়াপাড়ায় ছুঁয়ে গেলেন মমতা

Advertisement
এক ঝলকে
Advertisement

জেলা ভিত্তিক সংবাদ

দার্জিলিং

কালিম্পং

জলপাইগুড়ি

আলিপুরদুয়ার

কোচবিহার

উত্তর দিনাজপুর

দক্ষিণ দিনাজপুর

মালদা

মুর্শিদাবাদ

নদিয়া

পূর্ব বর্ধমান

বীরভূম

পশ্চিম বর্ধমান

বাঁকুড়া

পুরুলিয়া

ঝাড়গ্রাম

পশ্চিম মেদিনীপুর

হুগলি

উত্তর চব্বিশ পরগনা

দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা

হাওড়া

পূর্ব মেদিনীপুর