নিজস্ব প্রতিনিধি: মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের(Mamata Banerjee) বাংলার সাফল্যকে স্বীকৃতি দিতে বাধ্য হল কেন্দ্রে ক্ষমতাসীন নরেন্দ্র মোদির(Narendra Modi) সরকার। পরিবেশ রক্ষা ও প্রাকৃতিক দুর্যোগ প্রতিরোধে সুন্দরবনে(Sundarban) ম্যানগ্রোভ জাতীয় গাছ(Mangrove Trees) লাগানোর যে উদ্যোগ মমতার সরকার নিয়েছে তাকেই কার্যত স্বীকৃতি দিয়েছে মোদি সরকার। আর তার জেরেই দেশের উপকূলীয় এলাকায় ৯টি রাজ্যে ম্যানগ্রোভ জাতীয় গাছ লাগানোর কাজে বাংলার মডেল(Bengal Model) অনুসরণ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্র সরকার। ২০০ কোটি টাকা খরচে গোটা দেশে ‘মিষ্টি’(Mishti) নাম দিয়ে এই প্রকল্পের কাজ করা হবে। গুজরাত উপকূল থেকে শুরু করে ওড়িশা উপকূল পর্যন্ত বিস্তৃত অংশে এই প্রকল্পটি রূপায়ণ করা হবে। আর কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্তই বলে দিচ্ছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার বাংলার উন্নয়নের জন্য সঠিক পথে এগোচ্ছে কি এগোচ্ছে না। কার্যত মমতার দেখানো পথে এক বার নয় বার বার হাঁটা দিচ্ছে দেশের সরকার।
আরও পড়ুন দারিদ্রতা কমার নিরিখে এগিয়ে বাংলা, রিপোর্ট নীতি আয়োগের
২০২০’র আম্ফান বাংলার বুকে প্রভূত ধ্বংসের ছাপ রেখে গিয়েছে। সেই সময় রাজ্যের উপকূলবর্তী দুই ২৪ পরগনা জেলা এবং পূর্ব মেদিনীপুর জেলার বিস্তীর্ণ এলাকা ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছিল। সেই ঝড়ের পরে এবং ভবিষ্যতের কথা মাথায় রেখে সামুদ্রিক ঘূর্ণিঝড়ের হাত থেকে কলকাতা সহ দক্ষিণবঙ্গকে বাঁচাতে এবং সুন্দরবনকে সুরক্ষিত রাখতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে রাজ্যের বনদফতর সুন্দরবন এলাকায় কয়েক কোটি ম্যানগ্রোভ চারা পোঁতার কর্মসূচি নেয়। এই উদ্যোগে যুক্ত করা হয় স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলিকে। সাফল্যের সঙ্গে শেষ হয় সেই কর্মসূচি। একই সঙ্গে তা গোটা দেশের নজরও কেড়ে নিয়েছিল। এবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দেখানো সেই পথে হেঁটেই দেশের উপকূলবর্তী রাজ্যগুলিতে একই পথে হাঁটা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিল নরেন্দ্র মোদির সরকার। জি-২০ সম্মেলন উপলক্ষ্যে এই কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। গোটা দেশে এবার পশ্চিমবঙ্গ মডেলে স্বনির্ভর গোষ্ঠীকে যুক্ত করে ম্যানগ্রোভ লাগানোর কাজ করা হবে।
আরও পড়ুন মুখ্যমন্ত্রীর সুপারিশ সত্ত্বেও ৮টি কোর্স চালুর অনুমোদন পেল না কলেজ
নানা সমীক্ষায় দেখা যাচ্ছে বিশ্বজুড়ে উষ্ণায়নের জেরে খুব দ্রুত গলে যাচ্ছে সব হিমবাহ। তার জেরে সমুদ্রের জলস্তরও বাড়ছে। একইসঙ্গে এটাও দেখা যাচ্ছে ভারতীয় উপমহাদেশের বুকে আবহাওয়ার পরিবর্তন ঘটে গিয়েছে খুব দ্রুত হারে। একই সঙ্গে বেড়ে গিয়েছে বঙ্গোপসাগরে ঘূর্ণিঝড় জন্মের হারও। পাশাপাশি সুন্দরবন ক্ষয়ে যাওয়ার ছবিও ধরা পড়েছে নানান সমীক্ষায়। পরিবেশবিদরা কার্যত জানিয়ে দিয়েছেন, আগামী দিনে কলকাতা সহ দক্ষিণবঙ্গের ভবিষ্যৎ সুরক্ষা করতে হলে সুন্দরবনকে বাঁচাতেই হবে। আর সেটা তখনই সম্ভব হবে যখন ম্যানগ্রোভ অরণ্যের পরিমাণ বাড়বে। সেই লক্ষ্যেই বাংলায় সুন্দরবন এলাকায় ম্যানগ্রপভ গাছ লাগানো হচ্ছে। আগামী বছরের মধ্যে সুন্দরবনে ১ কোটি ম্যানগ্রোভ বসানোর লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে। তার জেরে শুধু যে সুন্দরবন বাঁচবে তাই নয়, বাঁচবে কলকাতা ও দক্ষিণবঙ্গের একটা বড় অংশই। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই সিদ্ধান্তকেই এবার দেশের বুকে রূপায়িত করতে চলেছে মোদি সরকার। লাভবান হবে ওড়িশা, অন্ধ্রপ্রদেশ, পণ্ডিচারী, তামিলনাড়ু, কেরল, কর্ণাটক, গোয়া, মহারাষ্ট্র ও গুজরাতের মতো ৯টি রাজ্য।
