নিজস্ব প্রতিনিধি: বিজেপি সহ বাংলার বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলির অভিযোগ বাংলায়(Bengal) কৃষকদের(Farmers) অবস্থা নাকি খুবই সঙ্গিন। তাঁরা নাকি তাঁদের উৎপাদিত শস্যের ভাল দাম পান না, বিক্রির বাজার পান না, চাষে লাভের মুখে দেখেন না। এই সব অভিযোগের বাস্তব ভিত্তি যে নেই তা বার বার প্রমাণ করে দিচ্ছে নানা ঘটনা, নানা সমীক্ষা। আর সেই সূত্রেই সামনে এল বাংলার প্রায় ২০ লক্ষ কৃষক তাঁদের নাম নথিভুক্ত করেছেন চলতি খরিফ মরশুমে শস্যবিমার(BSB) আওতায় আসার জন্য। পার্থ-অর্পিতা, কেষ্ট-সিবিআই, এসএসসি-ইডি, গরুপাচার, কয়লাপাচার – যে বাংলার কৃষকমহলে কোনও প্রভাবই ফেলতে পারেনি সেটাই কার্যত চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিলেন বাংলার কৃষকেরা। একই সঙ্গে তাঁরা এটাও বুঝিয়ে দিলেন বিরোধীদের প্রতি নয়, তাঁদের আস্থা রয়েছে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের(Mamata Banerjee) প্রতিই।
নবান্ন সূত্রে জানা গিয়েছে, শস্যবিমা প্রকল্পে এখনও পর্যন্ত চলতি খরিফ মরশুমে ২০ লক্ষ কৃষক তাঁদের নাম নথিভুক্ত করেছেন। আরও বেশি কৃষক যাতে বাংলা শস্যবিমা প্রকল্পে নাম নথিভুক্ত করেন, তার জন্য সক্রিয় হয়েছে রাজ্য সরকার। প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে যদি ফসল কম হয়, তাহলে বিমা করা থাকলে ক্ষতিপূরণ পান কৃষকরা। এবার এখনও পর্যন্ত রাজ্যে কোথাও অতিবৃষ্টির কারণে বন্যা হয়নি। কিন্তু দক্ষিণবঙ্গের সিংহভাগ জেলা এমনকী, উত্তরবঙ্গের কয়েকটি জেলায় স্বাভাবিকের থেকে কম বৃষ্টি হয়েছে। বৃষ্টি কম হলে ধানের ফলন মার খাবে। আবার বেশি বৃষ্টি হলেও ক্ষতি হতে পারে ধানের। বাংলা শস্যবিমা প্রকল্পে খরিফ মরশুমে ধান ও ভুট্টার বিমা করা যায়। এর জন্য কৃষককে প্রিমিয়াম গুনতে হয় না। পুরো প্রিমিয়ামই দেয় রাজ্য সরকার। আর এই বিমার আওতায় আসার জন্য আগামী ৩১ আগস্ট পর্যন্ত সময় আছে।
রাজ্যের কৃষি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, রাজ্যের আরও বেশি সংখ্যক কৃষক যাতে বাংলা শস্যবিমার আওতায় আসে, তার জন্য দফতরের তরফে বাড়তি উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। রাষ্ট্রায়ত্ত কৃষি বিমা সংস্থার মাধ্যমে বাংলা শস্যবিমা প্রকল্প কার্যকর করা হয়। রাজ্য সরকার প্রিমিয়ামের টাকা বিমা সংস্থাকে দেয়। এলাকাভিত্তিক ক্ষতির মাত্রা যাচাই করে বিমা সংস্থা ক্ষতিগ্রস্তদের অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠিয়ে দেয়। গত খরিফ মরশুমে প্রায় ৪২ লক্ষ কৃষক ধানের জন্য বাংলা শস্যবিমা করিয়েছিলেন। এবার সেই সংখ্যাকে টপকানোই রাজ্য সরকারের লক্ষ্য। তাই বিমা করানোর জন্য সরকারি পর্যায়ে সক্রিয়তা বেশি দেখা যাচ্ছে। শুধু কৃষিদফতরই নয়, ব্লক পর্যায়েও তৎপরতা বেড়েছে। এবার প্রচারের জন্য এই প্রথম রাস্তায় ট্যাবলো পর্যন্ত নামানো হয়েছে জেলায় জেলায় গ্রামীণ এলাকায়। তাতে তুলে ধরা হচ্ছে যে, কম ফলন হলে তো বটেই, এমনকী প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে শেষ পর্যন্ত ধান চাষ করতে না পারলেও যাঁরা বিমা করিয়েছেন, তাঁরা ক্ষতিপূরণ পাবেন। ওই ক্ষতিপূরণের টাকায় তাঁরা বিকল্প কোনও চাষ করতে পারবেন তাঁরা।