নিজস্ব প্রতিনিধি: রবিবার মধ্যরাতে উল্টোডাঙার উড়ালপুল থেকে যেভাবে গাড়ি উড়ে গিয়ে নিচে পরলো সেই ঘটনায় তৎপর হয়ে উঠেছে কলকাতা পুলিশ। উড়ালপুল গুলিতে রাতে বেপরোয়া গাড়ি চলাচলের ওপর নিয়ন্ত্রণ আনার পাশাপাশি শহরে লাগাতার নাকা চেকিং করার সিদ্ধান্ত নিতে চলেছে লালবাজার। শুধু তাই নয় ট্রাফিক কন্ট্রোল রুম থেকে ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরার(CCTV)মাধ্যমে বেপরোয়া গতির গাড়ির ওপর নজরদারি জোরদার করার চিন্তাভাবনা শুরু হয়েছে। রবিবার রাত্রি প্রায় একটা নাগাদ লেকটাউন থেকে সল্টলেক গামি যে উল্টোডাঙ্গা ব্রিজ রয়েছে সেই ব্রিজের উপর থেকে একটি চারচাকা গাড়ি ব্রিজের ব্যারিকেড ভেঙে নিচে পড়ে যায়।স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গাড়িটি লেকটাউন থেকে উল্টোডাঙ্গা ব্রিজ হয়ে সল্টলেকের দিকে রাস্তাটিতে যাচ্ছিল এবং বেপরোয়া গতির থাকার কারণে গাড়িটি নিয়ন্ত্রণ না রাখতে পেরে ব্রিজের বেরিকেড ভেঙে উপর থেকে নিচে পড়ে যায়। নিচে বস্তি ছিল। সেই বস্তির একটি ঝুপড়ি ঘরের উপর গাড়িটি গিয়ে পড়ে।
উক্ত ঘটনায় গাড়ির যে ড্রাইভার ছিলেন তিনি আহত হয়েছেন। মাথার পিছনে আঘাত পেয়েছেন তিনি।তাকে উদ্ধার করে আর জি কর হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়া হয়। তবে যেই বাড়ির উপরে গাড়িটি গিয়ে পড়ে সেই বাড়িতে কোন লোক ছিলেন না । ফলে সেখানে কেউ আহত হন নি। তবে গাড়ির যিনি চালক ছিলেন তাকে পরবর্তী সময় মেডিকেল করানো হয়। তিনি মদ্যপ অবস্থায় ছিলেন কিনা তা যাচাই করে দেখা হচ্ছে।তবে রাতের কলকাতায় বেপরোয়া গতি কেন বা হচ্ছে তা কিন্তু একটি বড় প্রশ্নের মধ্যে থেকেই যাচ্ছে। শুধু উল্টোডাঙ্গা ,ভিআইপি রোড কিংবা লেকটাউন(Laketown) এলাকা নয়, বিধাননগর কমিশনারেটের বাগুইআটি থানার অন্তর্গত বাগজোলা খালের পাশে জগৎপুর বাজার থেকে যাত্রাগাছি এলাকার মধ্যে রাত হলে একদল বাইক চালক বেপরোয়া গতিতে মোটরসাইকেল(Motorcycle) নিয়ে ছুটছে। বাগজোলা খাল সংলগ্ন জগৎপুর বাজার , আদর্শপল্লী এবং মৃধা মার্কেট এইসব এলাকায় একদল যুবক বেপরোয়া গতিতে প্রতিনিয়ত মাথায় হেলমেট বিহীনভাবে বিকট আওয়াজ যুক্ত মোটরসাইকেল নিয়ে রেস প্রতিযোগিতায় মত্ত হয়ে উঠছে।
তাদের মাথায় নেই কোন হেলমেট, পুলিশের নেই কোন নজরদারি। জগৎপুর বাজারে গুটি কয়েক যে পুলিশ কর্মীরা বসে থাকেন, তারা মাথা নিচু করে মোবাইল ফোন দেখতে ব্যস্ত থাকেন। এদিকে এলাকার মানুষ এই মোটরসাইকেল চালকদের গভীর রাতে দাপিয়ে বেড়ানোর ঘটনায় রীতিমতো ভীত ও সন্ত্রস্ত। নিউটাউন থানা, বাগুইহাটি থানা(Baguiati P.S.) এবং আদর্শপল্লী পুলিশ ক্যাম্পের পুলিশ কর্মীরা এসবে নজর দিতে নারাজ। ফলে ইতিমধ্যেই ওই এলাকায় রাত দুপুরে পথ দুর্ঘটনা ঘটেছে একাধিক। আগামী দিনেও যে দুর্ঘটনা ঘটবে না এবং প্রাণহানি হবে না সেই গ্যারান্টি কোথায়? রাতের শহরে বেপরোয়া গাড়ির গতিতে পুলিশের উদাসীনতা প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার সংখ্যাকে বাড়াতে সাহায্য করছে। অথচ দিনের বেলায় ‘সেভ ড্রাইভ সেফ লাইফ’ স্লোগান বলবৎ হলেও রাতের অন্ধকারে তা দুর্বল হয়ে যাচ্ছে।