নিজস্ব প্রতিনিধি: রাজ্যের মানুষ বিনামূল্যে যাতে সরকারি পরিষেবার সুযোগ পান তার জন্যই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়(Mamata Banerjee) রাজ্যজুড়ে বাংলা সহায়তা কেন্দ্র(BSK) চালু করেছেন। এখনও পর্যন্ত এ রাজ্যে মোট ৩,৫৬১টি বাংলা সহায়তা কেন্দ্র তৈরি করা হয়েছে। আগামী দিনে আরও ১,৪৬৪টি কেন্দ্র খোলার পরিকল্পনা রয়েছে রাজ্য সরকারের। চলতি বছরে প্রায় ১১ লাখ ১৬ হাজার মানুষ এই সহায়তা কেন্দ্রগুলি থেকে নানা পরিষেবা বা তথ্য জানার সুযোগ পেয়েছেন। ২০২০ সালের অগাস্ট মাস থেকে রাজ্যে চালু হওয়া বাংলা সহায়তা কেন্দ্রের মাধ্যমে এতদিন পর্যন্ত প্রায় ৬ কোটি মানুষ পরিষেবা পেয়েছেন। এখনও পর্যন্ত বাংলা সহায়তা কেন্দ্রের মাধ্যমে রাজ্যের ৪০টি দফতরের মোট ২৮৩টি প্রকল্পের সুবিধা মেলে। এবার সেই জায়গাতে আরও ৩টি নতুন প্রকল্প যুক্ত হতে চলেছে। শুধু তাই নয়, এবার থেকে রাজ্যের বুকে নানান রেশন দোকানেই(Ration Shop) খোলা হচ্ছে বাংলা সহায়তা কেন্দ্র। এর জন্য ইচ্ছুক রেশন ডিলারদের(Ration Dealers) তালিকা তৈরির নির্দেশ দিয়েছে রাজ্যের খাদ্য দফতর(Food Department)।
জানা গিয়েছে, রাজ্যের খাদ্য দফতরের রেশনিং এবং ডিডিপিএস অধিকর্তাকে রেশন দোকানে বাংলা সহায়তা কেন্দ্র খোলার জন্য উদ্যোগী হতে বলেছে খাদ্য দফতরের সচিবালয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে জেলাগুলিতেও সংশোধিত ও বিধিবদ্ধ রেশন এলাকার আধিকারিকরা বিজ্ঞপ্তি জারি করেছেন। সূত্রে খবর, এখনও এই ব্যাপারে ডিলারদের তরফে কেউ বিশেষ আগ্রহ দেখাননি। তবে আগামী দিনে রেশন দোকানে বাংলা সহায়তা কেন্দ্র চালু করার ব্যাপারে আশাবাদী রাজ্যের খাদ্য দফতর। কিন্তু কেন রেশন দোকানে বাংলা সহায়তা কেন্দ্র খুলতে আগ্রহ দেখাচ্ছেন না রেশন ডিলাররা? জানা গিয়েছে, রেশন ডিলাররা কমিশন বৃদ্ধির জন্য অনেকদিন ধরেই আন্দোলন করছেন। কিন্তু সেই কমিশন বৃদ্ধির দাবি মেনে না নিয়ে রাজ্য সরকার ডিলারদের বিকল্প আয়ের ব্যবস্থা করার জন্য রেশন দোকানে বাংলা সহায়তা কেন্দ্র চালুর প্রস্তাব দিয়েছে। কেন্দ্র সরকার চাইছে, রেশন দোকানে Common Service Center বা CSC চালু হোক। সেই সূত্রে রাজ্যও চাইছে, রেশন দোকানে বাংলা সহায়তা কেন্দ্র চালু হোক।
জানা গিয়েছে, রেশন ডিলাররা যাতে তাঁদের রেশন দোকানে বাংলা সহায়তা কেন্দ্র চালুর জন্য রাজী হন তাঁর জন্য ডিলারদের পরিষেবা পিছু নির্দিষ্ট হারে টাকা দিতে পদক্ষেপ করছে রাজ্য সরকার। তবে সেক্ষেত্রে বাংলা সহায়তা কেন্দ্র চালুর জন্য প্রয়োজনীয় পরিকাঠামো, কর্মী ও পরিচালন খরচ বহন করতে হবে ডিলারকে। খাদ্য দফতরের আশা করছে, আগামী অর্থবর্ষে ৫-৬ হাজার রেশন ডিলার তাঁদের রেশন দোকানে বাংলা সহায়তা কেন্দ্র চালু করতে আগ্রহী হবেন। অন্যদিকে কেন্দ্র সরকার আবার রেশন দোকানের মাধ্যমে ‘ভারত’ ব্র্যান্ডের চাল, ডাল, আটা বিক্রি করতে চাইছে।
গোটা দেশে ৫ লক্ষ ৩৮ হাজার রেশন দোকান রয়েছে। এতদিন সেখানে স্রেফ ‘জাতীয় খাদ্য সুরক্ষা আইনে’র আওতায় চাল, গম আর দানাশস্য বিক্রি করা হতো রেশন গ্রাহকদের মধ্যে। নতুন ব্যবস্থায় যে কেউ রেশন দোকান থেকে ‘ভারত’ ব্রান্ডের চাল, ডাল, আটা কিনতে পারবেন। চানা ডাল বিক্রি হবে ৬০ টাকা কিলোয়। আটার ১০ কেজির প্যাকেট পাওয়া যাবে ২৭৫ টাকায়। চাল মিলবে ২৫ টাকা কেজি দরে। এছাড়া আরও ২০টি নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস মিলবে রেশন দোকান থেকে। ভারত মুগ ডালও বিক্রিরও পরিকল্পনা চলছে। বাজার দরের চেয়ে ১৫ টাকা ভর্তুকিতে মুগের ডাল মিলবে বলেই খাদ্য ও গণবণ্টন মন্ত্রক সূত্রে জানা গিয়েছে।