নিজস্ব প্রতিনিধি: সংবাদপত্রে তাঁর চোখ আটকে গিয়েছিল দুঃস্থ ও মাধ্যমিকে কৃতী ছাত্রের খবরে। তখনই ৭৯ বছরের বৃদ্ধের মনে পড়ে গিয়েছিল নিজের কথা। অনটনের মধ্যে পড়াশোনা করেছিলেন তিনি। সংবাদপত্রের দুঃস্থ ও মেধাবী ছাত্রের খবর পড়েই কৃতী ছাত্র ও বিদ্যালয়ের নাম লিখে নেন তিনি। বাড়িয়ে দিলেন সাহায্যের হাত। সাহায্যকারী বৃদ্ধ কলকাতা টেলিফোন দফতরের প্রাক্তন কর্মী দিলীপ কুমার মণ্ডল। তিনি পৌঁছে গিয়েছিলেন মাধ্যমিকে দশম স্থান অধিকারী সৌনক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে।
বর্ধমানের এক দুঃস্থ পরিবারের সন্তান সৌনক। বাবার চাকরি গিয়েছে লকডাউনে। তার বাবা পেশায় টোটো চালক। সেই টোটো চালিয়েই জুগিয়েছেন সংসার ও সন্তানের পড়ার খরচ। এই পরিবারের সন্তান সৌনকের প্রাপ্ত নম্বর ৬৪৮। মাধ্যমিকে দশম স্থান অধিকার করেছে।
স্কুলের (SCHOOL) নাম খবরের কাগজেই (NEWS PAPER) দেখেছিলেন দিলীপ কুমার মণ্ডল। মঙ্গলবার স্কুল শুরু হওয়ার আগেই পৌঁছে গিয়েছিলেন কৃতী ছাত্রের স্কুল সিএমএসে। তারপর অপেক্ষা করতে থাকেন প্রধান শিক্ষক মিন্টু রায়ের আসার জন্য। প্রধান শিক্ষক আসতেই তিনি জানান, তিনি সৌনককে ১ লক্ষ টাকা সাহায্য করতে চান। স্কুলের অন্যান্য অভাবী শিক্ষার্থীদের (STUDENT) জন্য ২ লক্ষ টাকা সাহায্য (HELP) (DONATE) করতে চান। আর তারপরেই প্রধান শিক্ষকের হাতে স্কুলের জন্য ও সৌনকের হাতে তুলে দেন টাকার চেক।
উদার হৃদয়ের বৃদ্ধ জানিয়েছেন, বাবার সঙ্গে ১২ বছর বয়সে পড়াশোনা করার জন্য কাটোয়ার গ্রামের বাড়ি থেকে এসেছিলেন রিষড়ায়। সপ্তম শ্রেণির ছাত্র ছিলেন তখন। তার আগে বিদ্যালয়ে যেতে হত ৩ কিলোমিটার রাস্তা পেরিয়ে। অভাব-অনটন এর মধ্যে চালিয়ে যেতে হয়েছিল পড়াশোনা। এরপর বঙ্গবাসী কলেজে পড়াশোনা করেন তিনি। তারপর যোগ দিয়েছিলেন কলকাতার টেলিকম দফতরের কাজে। এখন তিনি থাকেন বর্ধমান শহরের মিঠাপুকুর এলাকায়। সঙ্গী তাঁর স্ত্রী। খবর পড়ে তাঁর ছোট বেলার দিন মনে পড়ে গিয়েছিল, এই কথা জানিয়েই বলেন, তাই দুঃস্থ ও মেধাবী ছাত্রদের পাশে দাঁড়িয়েছেন তিনি।