নিজস্ব প্রতিনিধি: বাংলার বুকে ১০০ দিনের কাজের(100 Days Work) প্রকল্প নিয়ে বিস্তর অভিযোগ পৌঁছেছিল কেন্দ্র সরকারের কাছে। তার জেরে বাংলায় ১০০ দিনের কাজের টাকা আটকে রেখে দিয়েছে কেন্দ্র। গত বছরের ডিসেম্বর মাসের পর কেন্দ্র এই প্রকল্পে আর ১ পয়সাও বরাদ্দ করেনি বাংলার জন্য। এমনকি চলতি বছরে এই প্রকল্পের ক্ষেত্রে বাংলার জন্য কোনও লক্ষ্যমাত্রাও দেওয়া হয়নি। পাশাপাশি বাংলার কোন জেলায় ১০০ দিন কাজের প্রকল্পে ঠিক কীরকমের কাজ হয়েছে তা খতিয়ে দেখতে রাজ্যে কেন্দ্রীয় প্রতিনিধিদল পাঠিয়েছে মোদি সরকার। সেই দল বাংলার জেলায় জেলায় ঘুরে বেড়িয়ে সরাসরি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে রিপোর্ট দেবে। আর এই কেন্দ্রীয় প্রতিনিধিদলের সফর কালেই নদিয়া(Nadia) জেলার তেহট্ট-১(Tehatta-1) ব্লকের বেতাই-২(Betai-2) গ্রাম পঞ্চায়েতে ১০০ দিনের কাজের প্রকল্পে প্রায় ২০ লক্ষ টাকার তছরুপের(Corruption) অভিযোগ সামনে এল। আর সেই অভিযোগ সামনে আসার পর থেকেই উধাও হয়ে গিয়েছেন ওই গ্রাম পঞ্চায়েতের পঞ্চায়েতের প্রধান, পঞ্চায়েত কর্মী ও সুপার ভাইজার সহ মোট ১৩জন। আর তার জেরে ওই গ্রাম পঞ্চায়েতের নিত্যদিনের কাজও বন্ধ হয়ে গিয়েছে।
জানা গিয়েছে, বেতাই-২ গ্রাম পঞ্চায়েতের স্থানীয় বাসিন্দারা চলতি বছরের এপ্রিল মাসে ১০০ দিনের কাজের প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে বিডিওকে লিখিত অভিযোগপত্র দিয়েছিলেন। তাঁদের অভিযোগ ছিল পঞ্চায়েত প্রধান সঞ্জিত পোদ্দার, কয়েকজন পঞ্চায়েতকর্মী এবং বেশ কিছু সুপারভাইজার ১০০ দিনের কাজের প্রকল্পে কাজ হয়েছে দেখিয়ে লক্ষ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করেছেন। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে তেহট্ট-১ ব্লকের বিডিও শুভাশিস মজুমদার তদন্তের নির্দেশ দেন। ওই তদন্তেই প্রায় ২০ লক্ষ টাকা তছরুপের ঘটনা ধরা পড়ে। এরপরেই বিডিও অভিযুক্তদের শোকজ করেন। যদিও সেই শোকজের কোনও উত্তর তাঁরা দেননি। তার জেরে বিডিও স্থানীয় থানায় ওই ১৩জনের নামে এফআইআর দায়ের করতেই তারা গা ঢাকা দেন। আর এর জেরেই এখন স্তব্ধ হয়ে পড়েছে ওই গ্রাম পঞ্চায়েতের নিত্যদিনের কাজ।
এই অবস্থায় স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, পঞ্চায়েত খোলা থাকলেও কোনও কাজ হচ্ছে না সেখানে। পরিষেবা না পেয়ে তাঁদের হয়রান হ্তে হচ্ছে। পঞ্চায়েত অফিসের মেনগেট খোলা থাকলেও প্রধানের ঘর তালাবন্ধ রয়েছে। যে কারণে বিভিন্ন প্রয়োজনে এসে তাঁদের হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে। স্থানীয় বাম নেতৃত্বের অবশ্য অভিযোগ, ২০ লক্ষ টাকা নয়, প্রায় ১ কোটি ৩০ লক্ষ টাকা তছরুপের ঘটনা ঘটেছে। গোটা ঘটনা প্রশাসন এখন ধামাচাপা দিতে চাইছে। অভিযুক্ত ১৩জনকে কেন এখনও গ্রেফতার করা হচ্ছে না সেই প্রশ্নও তুলেছেন স্থানীয় বাম নেতৃত্ব। তাঁরা অভিযুক্ত ওই ১৩জনকে গ্রেফতারির দাবি তুলেছেন। সেই সঙ্গে বিডিও-কে গোটা ঘটনায় দ্রুত হস্তক্ষেপ করতে বলেছেন যাতে ওই গ্রাম পঞ্চায়েতের নিত্যদিনের কাজ ফের শুরু হয় ও সাধারন মানুষ যেন সেখান থেকে পরিষেবা পান।