24ºc, Haze
Thursday, 23rd March, 2023 3:17 am
নিজস্ব প্রতিনিধি: রাত পোহালেই ২৩ জানুয়ারি। নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর(Netaji Subhash Chandra Basu) ১২৬তম জন্মদিন। ঠিক তার আগে মুর্শিদাবাদ(Murshidabad) জেলার লালবাগ মহকুমার জিয়াগঞ্জ(Jiaganj) পুরসভা এলাকার ভট্টপাড়ায়(Bhattapara) নেতাজির স্মৃতিবিজড়িত বাড়ি সংরক্ষণ করার দাবি তুললেন এলাকারই বাসিন্দারা। বাড়িটি স্থানীয়রা ‘অধিকারীদের বাড়ি’(Adhikaris House) হিসাবেই চেনেন। তাঁদের দাবি, ১৯২৯-১৯৩৯ সালের মধ্যে জিয়াগঞ্জ শহরের ভট্টপাড়ার সুকুমার অধিকারীর এই বাড়িতে চারবার এসেছিলেন নেতাজি। সেই বাড়িই এখন দেখভাল ও রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে জঙ্গলাকীর্ণ হয়ে ভুতুড়ে বাড়িতে পরিণত হয়েছে। তাই দ্রুত এই বাড়ি সংস্কার করা না হলে ও তা হেরিটেজ বিল্ডিং হিসাবে ঘোষিত না হলে দ্রুত ভাঙা পড়বে নয়তো নষ্ট হয়ে যাবে। জিয়াগঞ্জবাসীর এই দাবি সম্পর্কে পূর্ণ ভাবে ওয়াকিবহাল জিয়াগঞ্জ পুরসভা কর্তৃপক্ষ। কিন্তু বাড়িটি ব্যক্তিগত সম্পত্তি বলে পুরসভা এককভাবে কিছু করতে পারছে না বলে জানিয়েছে। আবার বাড়িটি যাদের সেই পরিবারও এখনও সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি যে বাড়িটি নিয়ে তাঁরা ঠিক কী করবে।
আরও পড়ুন পর্যটক টানতে বাংলায় এবার পাখির চোখ ‘জল-পর্যটন’
স্থানীয় দাবি নেতাজি সুকুমার অধিকারীর এই বাড়িতে চারবার এসেছিলেন। প্রথমবার ১৯২৯ সালে বঙ্গীয় প্রাদেশিক আইনসভার নির্বাচনে কংগ্রেস প্রার্থী তাজবাহাদুর দুগারের হয়ে প্রচার করতে জিয়াগঞ্জে এসেছিলেন। ভোটপ্রচারে এসে সুকুমার অধিকারীর বাড়িতে আতিথ্য গ্রহণ করে রাত্রিযাপন করেন তিনি। এরপরে ১৯৩৭, ১৯৩৮ এবং ১৯৩৯ সাল এই তিন বছরে তিনবার ভট্টপাড়ার অধিকারী বাড়িতে এসেছিলেন নেতাজি। অধিকারী পরিবারের বর্তমান সদস্যরা কর্মসূত্রে দীর্ঘদিন ধরে জিয়াগঞ্জে থাকেন না। স্বাভাবিকভাবেই দেখভাল ও রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে জঙ্গলাকীর্ণ হয়ে এটি কার্যত ভুতুড়ে বাড়িতে পরিণত হয়েছে। বাড়ির চত্বরে গজিয়ে ওঠা আগাছায় ঢাকা পড়েছে বাড়ির প্রবেশ গেট থেকে অন্দরমহলের প্রবেশ পথ। অথচ একসময় এই বাড়ি মানুষজনে গমগম করত।
আরও পড়ুন নিজস্ব লোগো পাচ্ছে ডুয়ার্সের চা, ভাবনা ছোট বাগান নিয়েও
স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, নেতাজির সঙ্গে সুকুমার অধিকারীর নিয়মিত যোগাযোগ ছিল। নেতাজি জিয়াগঞ্জে এলেই ভট্টবাড়িতে আতিথ্য গ্রহণ করতেন। জিয়াগঞ্জের অন্য কোথাও তাঁর খাওয়ার জন্য এলাহি আয়োজন করা হলেও এই বাড়িতেই খাওয়া-দাওয়া সারতেন তিনি। স্বাধীনতা সংগ্রামী মুর্শিদাবাদ জেলার যে সব মহিলাদের নাম জানা যায় তাঁদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন মৃণাল দেবী। তিনি একাধারে ছিলেন সুভাচন্দ্রের ঘনিষ্ঠ ও সুকুমার অধিকারীর স্ত্রী মণিমালা দেবীর সহদোরা। সেই সূত্রেই মণিমালা দেবীকে দিদি বলে ডাকতেন নেতাজি এবং তাঁর হাতের রান্না বিশেষ করে গলদা চিংড়ির মালাইকারী নেতাজি খেতে খুবই ভালবাসতেন। সেই নেতাজির স্মৃতিবিজড়িত বাড়ি এখন পড়ে আছে চরম অবহেলা ও অযত্নে। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, ভারতের স্বাধীনতা যুদ্ধের অন্যতম প্রধান সৈনিক নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর স্মৃতি বিজড়িত এই বাড়িটিকে হেরিটেজ ঘোষণা করে সংরক্ষণের জন্য স্থানীয় প্রশাসন ও পুরসভা এগিয়ে আসুক। যদিও জিয়াগঞ্জ-আজিমগঞ্জ পুরসভার চেয়ারম্যান প্রসেনজিৎ ঘোষ জানিয়েছেন, ‘বাড়িটি সংস্কার করে সংরক্ষণের জন্য পুরসভার পক্ষ থেকে একটা চিন্তাভাবনা রয়েছে। তবে অধিকারী পরিবারের বর্তমান সদস্যরা এই বিষয়ে আমাদের কোনও প্রস্তাব দেননি। প্রস্তাব পেলে সংস্কার ও সংরক্ষণের প্রক্রিয়া শুরু করা হবে।’