-273ºc,
Saturday, 3rd June, 2023 4:09 am
নিজস্ব প্রতিনিধি: বাংলার চা-শিল্পের(Tea Industry) জন্য বড়সড় সুখবর। চলতি বছরের এপ্রিল মাসের প্রথম সপ্তাহেই পাহাড়ে দার্জিলিংয়ের(Darjeeling) বুকে বসতে চলেছে G-20 সম্মেলন। সেখানেই ভারতীয় চায়ের(Indian Tea) ওপর একটি প্রদর্শনী করতে চায় ভারতীয় চা পর্ষদ বা Tea Board of India। সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে, সেখানেই নিজস্ব লোগো বা প্রতীক(Logo) নিয়ে হাজির থাকবে ডুয়ার্সের চা(Dooars Tea)। যা ডুয়ার্সের চা-কে ভারত সহ বিশ্বের চা বাজারে নিজস্ব পরিচিতি দেবে ও তার বিপণনের ক্ষেত্রেও সহায়ক হয়ে উঠবে। অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যক ভাবে ডুয়ার্সের চা শিল্পকে অনেকতাই তাজা অক্সিজেন জোগাবে যা উত্তরবঙ্গের চা শিল্পকে ফের উন্নতির শিখরে নিয়ে চলে যাবে। শুধু তাই নয়, উত্তরবঙ্গের ছোট ছোট চা বাগানগুলিকে নিয়েও এবারে ভাবছে Tea Board। তার জন্য তৈরি হল ছোট চা বাগানের জন্য আলাদা কোর কমিটি(Core Comeety)। দশ হেক্টরের বেশি বড় নয়, এমন বাগান নিয়ে নীতি প্রচলন করবে Tea Board’র এই নতুন কমিটি। ছোট বাগানের পাতার গুণমান, চাষপদ্ধতি, বিপণনের নতুন নীতিও ঘোষণা করতে পারে Tea Board।
আরও পড়ুন কেরোসিনে বঞ্চনার শিকার বাংলা, মাসে মাত্র ২২,৩৫৬ কিলোলিটার
দার্জিলিং কিংবা অসম চায়ের নিজস্ব পরিচিতি বা প্রতীক থাকলেও ডুয়ার্স চায়ের সে অর্থে নিজস্ব পরিচিতি নেই। চা বিশেষজ্ঞেরা জানাচ্ছেন, স্বাদে এবং গন্ধে ডুয়ার্স এবং তরাইয়ের চা পাতায় কোনও মিলই নেই। সে কারণে ডুয়ার্স এবং তরাইয়ের চা পাতাকে এক বন্ধনীতে রাখা যুক্তিযুক্তও নয়। সেই কথা মাথায় রেখেই ডুয়ার্সের চা বিপণনের জন্য নিজস্ব পরিচিতি তৈরি করাটা এখন খুবই প্রয়োজনীয় হয়ে পড়েছে। যদি ডুয়ার্স চায়ের নিজস্ব পরিচিতি থাকে তবে আর্ন্তজাতিক বাজারেও সে চা বিক্রি করা যাবে। সকলে চিনতে পারবে। ডুয়ার্সের চায়ের নিজস্ব পরিচিতি হবে, নিজস্ব লোগো থাকবে। Tea Board সূত্রেই সেই প্রশ্নে জানা গিয়েছে, ডুয়ার্স চায়ের নিজস্ব পরিচিতি গড়ে তোলার জন্য সুপারিশ এসেছে। এই বিষয়ে কেন্দ্র সরকার সবুজ সঙ্কেত দিলেই দ্রুত পদক্ষেপ করা হবে। আশা করা যাচ্ছে এপ্রিলে দার্জিলিংয়ের বুকে যে G-20 সম্মেলন বসবে সেখানেই ডুয়ার্সের চা তার নতুন লোগো নিয়ে হাজির থাকবে।
আরও পড়ুন সুন্দরবনের জৈব দুধ কাঁচের বোতলে ভরে বিক্রি শহরে
এরই পাশাপাশি উত্তরবঙ্গের ছোট্ট চা-বাগান নিয়েও ভাবছে চা-পর্ষদ বা Tea Board of India। কেননা দেশের মোট চা উৎপাদনের ৫১ শতাংশেরও বেশি ছোট বাগান থেকে আসছে। তাই ছোট বাগানকে সরিয়ে নীতিগত সিদ্ধান্ত নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না Tea Board’র কাছে। চায়ের বর্তমান পরিস্থিতি বুঝতেও ছোট বাগানের পরিস্থিতি নিয়ে চর্চা জরুরি বলে মনে করছেন তাঁরা। সেই কারণেই এবার Tea Board তৈরি করে ফেলেছে ছোট চা বাগানের পরিস্থিতি খতিয়ে দেখার জনায় সম্পূর্ণ আলাদা কোর কমিটি। সেই কমিটির মাথায় বসানো হয়েছে Tea Board’র ডেপুটি চেয়ারম্যানকে, যিনি আবার Tea Board’র মূল পরিচালক। কয়েক দশক ধরেই ছোট চা-বাগানের প্রচলন রয়েছে উত্তরবঙ্গে। উত্তর দিনাজপুর, কোচবিহারের মতো জেলা, যেখানে বড় চা-বাগান নেই, সেখানে শয়ে শয়ে ছোট চা-বাগান তৈরি হয়েছে। উত্তরবঙ্গ ছাড়াও অসম এবং দক্ষিণ ভারতের নীলগিরিতেও ছোট ছোট চা বাগান রয়েছে। সরকারি পরিসংখ্যান বলছে, ২০২১ সালে দেশের মোট উৎপাদিত চায়ের পরিমাণ ছিল প্রায় ১৩৪ কোটি কেজি। এর মধ্যে ছোট বাগানে থেকেই এসেছিল ৫৮ কোটি কেজিরও বেশি চা। বেশ কয়েক বছর ধরেই কার্যত দেখা যাচ্ছে ছোট চা বাগানের উৎপাদন বাড়ছে। এই প্রেক্ষিতে ছোট বাগানের জন্য কোর কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত বাংলার পাশাপাশি অসম এবং তামিলনাড়ুর চা শিল্পকে উক্সিজেন জোগাবে বলেই মনে করা হচ্ছে। যে নতুন কমিটি গড়ে তোলা হয়েছে সেখানে Tea Board’র ডেপুটি চেয়ারম্যান ছাড়াও থাকছেন বাংলা, অসম, কেরল, তামিলনাড়ু সহ দেশের ৮টি রাজ্যের প্রতিনিধিরা।