নিজস্ব প্রতিনিধি: পুলিশের মানবিক মুখ দেখল ডুয়ার্সের বাসিন্দারা। দরিদ্র পরিবারের এক কন্যার বিয়েতে সহযোগিতার হাত বাড়াল জলপাইগুড়ি জেলার বানারহাট থানার আই সি শান্তনু সরকার এবং তাঁর দল। পুলিশের এমন ভূমিকায় খুশি ওই কন্যার পরিবার।
জলপাইগুড়ি জেলার বানারহাট থানার গয়েরকাটা এলাকার বাসিন্দা দিলীপ ভাওয়াল। পেশায় তিনি একজন দিন মজুর। বৃদ্ধ বয়সে নানাবিধ রোগে আক্রান্ত হওয়ায় তেমনভাবে কোনও কাজ করতে পারছিলেন না। কেবল ১০০ দিনের কাজ করেই চলত সংসার। কিন্তু গত কয়েকমাস ধরে ১০০ দিনের কাজের টাকাও পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ। এই নিদারুন আর্থিক সংকটের আবহে তাঁর কন্যা স্মৃতিকা ভাওয়ালের বিয়ে ঠিক হয়। জলপাইগুড়ির শান্তি পাড়া এলাকার বাসিন্দা পেশায় বেসরকারি সংস্থার কর্মী কৃষ্ণ দাসের সঙ্গে স্মৃতিকা ভাওয়ালের বিয়ে ঠিক হয়।
কিন্তু কী ভাবে বিয়ের খরচ সামলাবেন তিনি তা বুঝে উঠতে পারছিলেন না। প্রতিবেশীদের কাছে গোটা বিষয়টি খুলে বলেন দিলীপবাবু। এর পর এলাকার মানুষজন বিষয়টি নিয়ে দ্বারস্থ হন বানারহাট থানার ট্রাফিক গার্ডের অফিসে। সবকিছু শোনার পর ট্রাফিক গার্ডের পক্ষ থেকে বিষয়টি জানানো হয় থানার আই সি শান্তনু সরকারকে। বিষয়টি শোনার পর তিনি জানিয়ে দেন এই পরিবারের পাশে পুলিশ দাঁড়াবে। এর পর পুলিশের তরফে বিয়ের অনুষ্ঠানের প্রীতিভোজ-সহ অন্যান্য বিষয়ে আর্থিকভাবে সহযোগিতা করা হয়। বৃহস্পতিবার রাতে বিয়ের নির্দিষ্ট লগ্নে দিলীপবাবুর বাড়িতে বানারহাট থানার আই সি শান্তনু সরকার নিজে উপস্থিত হন। সাক্ষী থাকেন বিয়ের। অন্যদিকে এইভাবে পাশে দাঁড়ানোয় পুলিশকে ধন্যবাদ দিয়েছেন দিলীপবাবু। ওই কন্যার পরিবারের পাশাপাশি পুলিশকে ধন্যবাদ দিয়েছেন এলাকার মানুষজনও। এই বিষয়টি নিয়ে আই সি শান্তনু সরকার জানান, ‘মূলত আমাদের ট্রাফিক পুলিশ এই সুন্দর উদ্যোগটি নিয়েছে। ওনারা আমাকে বিষয়টি জানান। এরপর আমি ও আমার পক্ষ থেকে যতটা সম্ভব স্মৃতিকার বিয়েতে সাহায্য করেছি। এভাবেই মানুষের পাশে মানুষ দাঁড়াক এটাই চাই। ওরা দুজনে সুখে সংসার করুক এটাই চাই।’ যার জন্য এত আয়োজন সেই স্মৃতিকা বিয়ের পিঁড়িতে বসে জানান, ‘আমার বিয়ের আয়োজন না করতে না পারার জন্য বাবাকে ডুকরে কাঁদতে দেখেছি। লোকে পুলিশের অনেক বদনাম করে। কিন্তু আমার মনে বানারহাট পুলিশ এক অন্য জায়গায়তেই চিরদিন থাকবে।’