নিজস্ব প্রতিনিধি: রবি রাতে এসেছে বিশ্ব ঐতিহ্যের তকমা। সোম সকালে শুরু তরজা। গতকালই UNESCO শান্তিনিকেতনকে World Heritage তকমা প্রদান করেছে। আর তার জেরে খুশির হাওয়া বয়ে চলেছে শান্তিনিকেতন(Shantiniketan), বোলপুর ও বীরভূমের বুকে। সেই খুশির মধ্যেই ফের বিস্ফোরক বিতর্কের জন্ম দিলেন বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের(Viswabharati University) উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী(Bidyut Chakrabarty)। তবে তাঁর বিতর্কিত মন্তব্যের জেরেই এদিন দুপুর থেকেই পোস্টারে পোস্টারে ছেয়ে গিয়েছে বিশ্বভারতী চত্বর। একইসঙ্গে এই শুভমুহুর্তেও শান্তিনিকেতনবাসী সরব হয়েছেন নতুন করে তাঁর অপসারন চেয়ে।
প্রতিবছর শ্রীনিকেতনে বিশ্বকর্মা পুজোর দিন শিল্প উৎসবের আয়োজন করা হয়। এবারেও তা করা হয়েছে। তবে এদিন সকালে সেই উৎসবে বহু মানুষের মেলবন্ধন ঘটেছিল বিশ্ব ঐতিহ্যের তকমা পাওয়ার আনন্দে। এদিন সকাল থেকেই শান্তিনিকেতন ও বিশ্বভারতীজুড়ে আবির খেলা হয় বিশ্বঐতিহ্যের শরিক হয়ে ওঠায়। সেই অনুষ্ঠানেই অংশগ্রহণ করেছিলেন বিদ্যুৎ। মঞ্চ থেকেই বক্তব্য রাখতে গিয়ে প্রাক্তনী থেকে আশ্রমিক ও রাবীন্দ্রিকদের কড়া ভাষায় আক্রমণ করে তিনি বলেন, ‘আশ্রমিক, প্রাক্তনীরা কার্যত জঞ্জাল। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর যদি বেঁচে থাকতেন, তা হলে তিনি প্রথমেই আশ্রমিক এবং প্রাক্তনীদের তাড়াতেন। তারা এই কর্মকাণ্ডের জন্য বা এই স্বীকৃতির জন্য কোনওরকম সহযোগিতা করেননি।’ তাঁর এহেন মন্তব্যই ক্ষোভ ছড়িয়েছে শান্তিনিকেতনের বুকে। তবে উপাচার্যের এই ধরনের অপমানজনক মন্তব্য নতুন কিছু ঘটনা নয়। অতীতেও একাধিকবার আশ্রমিক ও প্রাক্তনীদের একাংশকে প্রকাশ্যে আক্রমণ করতে দেখা গিয়েছে উপাচার্যকে। নাম না করে তাঁদের ‘অশিক্ষিত’, ‘অল্পশিক্ষিত’, ‘বুড়ো খোকা’ বলতে শোনাও গিয়েছিল।
তবে উপাচার্যের এদিনের মন্তব্যের জেরে দুপুর থেকেই পাল্টা পোস্টারে পোস্টারে ছেয়ে যায় বিশ্বভারতী চত্বর। কোনটিতে লেখা, ‘বিশ্বভারতীর ক্ষতির কারিগর উপাচার্য’, আবার কোনটিতে লেখা ‘হেরিটেজ সংক্রান্ত কোনও দায়িত্ব উপাচার্যকে দেওয়া হয়নি’। আবার শান্তিনিকেতনকে বিশ্বঐতিহ্যের তালিকাভুক্ত না করার জন্য UNESCO-কে বিদ্যুৎ চিঠি দিয়েছিলেন বলেও পোস্টারে অভিযোগ করা হয়েছে। তবে কে বা কারা এই পোস্টার দিয়েছে, তা জানা যায়নি। এই অবস্থায় এদিন শান্তিকেতনবাসী কার্যত এককাট্টা হয়ে বিদ্যুতের অপসারণের দাবি তুলেছেন। যদিও শোনা যাচ্ছে বিদ্যুতের মেয়াদ বাড়াবার কথা ভাবছে নরেন্দ্র মোদির সরকার। তাঁর মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা চলতি বছরের নভেম্বরে। কিন্তু তার পরেও তাঁকে ওই পদেই রেখে দিতে চাইছে কেন্দ্র সরকার। বঙ্গ বিজেপি সূত্রে তেমনটাই জানা গিয়েছে।