নিজস্ব প্রতিনিধি: হৃদয়ে আশা জাগিয়ে শেষে সেই আশার দ্বীপ নিভিয়ে দিল বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়(Viswabharati University) কর্তৃপক্ষ এবং শান্তিনিকেতন ট্রাস্ট(Shantiniketan Trust)। এ বছর শান্তিনিকেতনে পৌষমেলার(Poush Mela) আয়োজন হচ্ছে না। সোমবার কর্মসমিতির দীর্ঘ বৈঠকের পর জানিয়ে এমনটাই জানিয়ে দিলেন বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ এবং শান্তিনিকেতন ট্রাস্ট। একটি যৌথ বিবৃতিতে তাঁরা জানিয়েছেন, সদিচ্ছা থাকা সত্ত্বেও ছোট করেও ঐতিহ্যবাহী পৌষমেলার আয়োজন করা সম্ভব হচ্ছে না। আর এই ঘোষণাই অনেকের মন ভেঙে দিয়েছে। বিদ্যুৎহীন শান্তিনিকেতন ও বিশ্বভারতীতে পৌষ মেলার আয়োজন হবে, এমনটাই আশা নিয়ে বুক বেঁধেছিলেন অনেকেই। রাজ্য সরকার ও জেলা প্রশাসনের তরফ থেকেও সাহায্যের যাবতীয় আশ্বাস প্রদান করা হয়েছিল। তারপরেও এদিন মেলা আয়োজন না করারই সিদ্ধান্ত নিল বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এবং শান্তিনিকেতন ট্রাস্ট। এই সিদ্ধান্তে ধাক্কা খেলেন বোলপুরের ব্যবসায়ীরাও। ধাক্কা খেল বীরভূম(Birbhum) জেলার পর্যটন শিল্পও(Toursum Industry)।
উল্লেখ্য, চলতি বছরে পৌষ মেলার আয়োজন নিয়ে এর আগের বৈঠকেই বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের তরফে জানানো হয়েছিল যে, এ বার পূর্বপল্লির মাঠে ছোট আকারে পৌষমেলা হবে। পরিবেশ আদালতের দূষণবিধি মেনে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। শান্তিনিকেতন ট্রাস্ট অবশ্য আশায় ছিল বড় আকারেই মেলা হবে। কিন্তু এদিনের বৈঠকের পরে তাঁরাও পিছু হঠেছেন। বিদ্যুৎ জমানায় শান্তিনিকেতনে গৈরিকিকরণের প্রয়াস চলেছিল সর্বস্তরে। বন্ধ করে দেওয়া হয় পৌষ মেলার আয়োজন এবং বসন্ত উৎসবে আমজনতা ও পর্যটকদের অংশগ্রহণও। বিদ্যুৎ বিদায় হতেই তাই সবাই আশায় বুক বেঁধেছিলেন পৌষ মেলাকে ঘিরে। মেলায় আয়োজন হবে, একথা শুনে তা সাধুবাদ জানিয়েছিলেন আশ্রমিক থেকে শান্তিনিকেতনের স্থানীয় বাসিন্দা এবং সর্বোপরি ব্যবসায়ীরা। এদিন তাঁদেরও মন ভেঙেছে।
বিশ্বভারতীর পৌষমেলার আয়োজনের ভার থাকে শান্তিনিকেতন ট্রাস্টের ওপর। মেলার তত্ত্বাবধানের দায়িত্বে থাকে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়। সূত্রে জানা গিয়েছে, দু’পক্ষের দু’রকম মতে জটিলতার সৃষ্টি হয় মেলায় আয়োজন ঘিরে। বিশ্বভারতী চেয়েছিল, এবছর অন্তত পরিবেশবিধি মেনে ছোট করে পৌষ মেলার আয়োজন করা হোক। কিন্তু ট্রাস্টের দাবি, মেলা হলে বড় করেই হবে। ছোট করে স্বল্প সময়ের মেলা করে কোনও লাভ নেই। এই নিয়েই এদিন বিশ্বভারতীর ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য সঞ্জয়কুমার মল্লিক এবং অন্যান্য কয়েক জন শান্তিনিকেতন ট্রাস্টের সদস্যসদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন। সেখানেই সিদ্ধান্ত হয় যে, এ বছর আর পৌষমেলা করা সম্ভব নয়। বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, মূলত সফটঅয়্যার ডেভেলপমেন্ট-সহ সময় কম থাকার জন্য পৌষমেলা হচ্ছে না। শান্তিনিকেতন ট্রাস্টের সম্পাদক অনিল কোনার জানিয়েছেন, ‘চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়েছে যে, এ বছর আর পৌষমেলা করা সম্ভব হচ্ছে না।’