নিজস্ব প্রতিনিধি: রাজ্যে শিক্ষক-শিক্ষিকা নিয়োগের ক্ষেত্রে বড়সড় দুর্নীতির অভিযোগ তুলে কলকাতা হাইকোর্টে(Calcutta High Court) দায়ের হয়েছে একের পর এক মামলা। সেই সব মামলা ঘিরে রীতিমত তোলপাড় চলছে রাজ্য রাজনীতিতে। ইতিমধ্যেই কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে চাকরি গিয়েছে মন্ত্রীকন্যা সহ ২৭০জনের। কিন্তু যে আদালতে সুবিচারের আশায় মানুষ দলে দলে সুবিচারের আশায় ছুটে মামলা দায়ের করছেন সেই আদালতে কর্মী নিয়োগের ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা আছে কিনা কোনওদিন কেউ খোঁজ নিয়ে দেখেছেন? দেখলে চমকে উঠতেন। কেননা সেখানেও অস্বচ্ছতার নিদর্শন মিলবে ভুরি ভুরি। এবার সেই ঘটনার জেরেই কলকাতা হাইকোর্টে দায়ের হল জনস্বার্থ মামলা(Public Interest Litigation)।
জানা গিয়েছে, রাজ্যে বিচার বিভাগে চতুর্থ শ্রেণি বা গ্রুপ-ডি(Group-D Staff) পদের কর্মী নিয়োগের ঘটনায় দুর্নীতির অভিযোগ ওঠায় তা নিয়ে জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়েছে কলকাতা হাইকোর্টে। আগামিকাল অর্থাৎ বুধবার এই মামলার শুনানি হওয়ার কথা। এই মামলাটি দায়ের করেছেন মৌয়াজ আশরাফ। তাঁর দাবি, পশ্চিম বর্ধমান জেলা আদালতে(Asansol District Court) কর্মী নিয়োগের জন্য ২০১৯ সালে ২১ ফেব্রুয়ারি একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছিল। বলা হয়েছিল, স্টাফ রিক্রুটমেন্ট এগজামিনেশনের মাধ্যমে ওই নিয়োগ হবে। ২০১৯ সালে বিজ্ঞপ্তি জারি হলেও লিখিত পরীক্ষা হয় চলতি বছরের ২০ ফেব্রুয়ারি। সারা রাজ্যে ওইদিন বিভিন্ন পরীক্ষা কেন্দ্রে ওই পরীক্ষা ঘিরে ব্যাপক অনিয়ম হয়েছে। বহু পরীক্ষার্থী ভুয়ো কাগজপত্র দেখিয়ে পরীক্ষায় বসেন। পরবর্তীকালে নিয়োগের ক্ষেত্রেও অনিয়ম হয়েছে। পুলিশকে অভিযোগ জানানো সত্ত্বেও তাঁরা আজ পর্যন্ত ওই অনিয়মের বিষয়ে কারও বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেয়নি। ওই নিয়োগে বহু অস্বচ্ছতা ধরা পড়েছে। এর জন্যই তিনি বিষয়টি আদালতের গোচরে আনতে বাধ্য হয়েছেন। মোশারফের আর্জি বিশেষ তদন্তকারী দল বা সিট গঠন করে কিংবা কোনও কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাকে দিয়ে এই অভিযোগের তদন্ত করা হোক। সঠিক তদন্ত হলে এই ক্ষেত্রেও বড় ধরনের বেনিয়ম ধরা পড়বে।
মোশারফের আরও দাবি, ২০১৯ সালে ২১ ফেব্রুয়ারি নিয়োগের জন্য বিজ্ঞপ্তি জারি হল। অথচ লিখিত পরীক্ষা নেওয়া হল ঠিক দু’বছর পর। কেন এত বিলম্ব, তা বোধগম্য হচ্ছে না। পরীক্ষা হওয়ার পর চার মাসের মধ্যে যুদ্ধকালীন ক্ষিপ্রতায় গোটা নিয়োগ প্রক্রিয়া শেষ করা হয়েছে। তাতে বিস্তর অনিয়ম হয়েছে। যে আদালতে মানুষ বিশ্বাস নিয়ে সুবিচারের আশায় ছুটে আসে সেই আদালতে কর্মী নিয়োগের ক্ষেত্রেও যদি এহেন অস্বচ্ছতা ধরা পড়ে তাহলে আদালতের প্রতি মানুষের বিশ্বাস অটুট থাকবে কী করে! তাই রাজ্যের উচ্চ আদালত গোটা বিষয়টি খতিয়ে দেখে তদন্তের নির্দেশ দিক।