নিজস্ব প্রতিনিধি: সারনা ধর্মকে(Sarna Dharma) পৃথক ধর্মের স্বীকৃতি দিতে হবে। সেই দাবিকে সামনে রেখেই এদিন রাজ্যজুড়ে ১২ ঘন্টার বনধের(Strike) ডাক দিয়েছে একাধিক আদিবাসী সংগঠন(Tribal Organizations)। সেই সঙ্গে রাজ্যের একাধিক জায়গায় শুরু হয়েছে রেল অবরোধ(Rail Blocked)। পুরুলিয়ার(Purulia) কাঁটাডি স্টেশনের পাশাপাশি অবরোধ হয়েছে আসানসোলের(Asansol) কালিপাহাড়ি স্টেশনেও। আর তার জেরে পূর্ব ও দক্ষিণ পূর্ব রেলের ট্রেন চলাচল কিছুটা হলেও ধাক্কা খেয়েছে। পুরুলিয়ায় আটকে গিয়েছে, রাঁচি-হাওড়া বন্দেভারত এক্সপ্রেস। ব্যাহত হয়েছে দক্ষিণ পূর্ব রেলের পুরুলিয়া চান্ডিল শাখায় ট্রেন চলাচল। আরও একাধিক ট্রেন অন্যান্য স্টেশনে থমকে রয়েছে। পুলিশের তরফে চেষ্টা চালানো হলেও, এখনও পর্যন্ত জট কাটার কোনও ইঙ্গিত নেই। পরিস্থিতির গুরুত্ব বিচার করে মোতায়েন করা হয়েছে RPF ও GRP। আবার বনধের জেরে জঙ্গলমহলের ৪ জেলায় এবং উত্তরবঙ্গের আদিবাসী অধ্যুষিত এলাকায় দোকানপাট, বাজারহাট বন্ধ রয়েছে। বন্ধ আছে বেসরকারি বাস পরিষেবাও।
পৃথক সারনা ধর্মের কোড চালু করার দাবিতে এর আগেও একাধিকবার আন্দোলনে নেমেছে নানা আদিবাসী সংগঠন। কিন্তু সেই দাবি এখনও পূরণ হয়নি। সেই একই দাবিতে শনিবার সকাল থেকে ফের রেল অবরোধ শুরু করেছেন আদিবাসী সেঙ্গেল অভিযানের সদস্যরা। পুরুলিয়ার কাঁটাডি স্টেশনে অবরোধ চলছে। অবরোধের জেরে ভোগান্তির মধ্যে পড়েছেন রেলযাত্রীরা। পুলিশের তরফে ইতিমধ্যেই জট কাটানোর চেষ্টা শুরু করা হয়েছে। পুলিশের কর্তারা কথা বলেছেন আদিবাসী নেতাদের সঙ্গে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত অবরোধ ওঠেনি। আদিবাসী সেঙ্গেল অভিযানের সদস্যরা এখনও রেল লাইনের ওপরেই বসে অবরোধ চালাচ্ছেন। সেখানে বসেই মিটিং করছেন তাঁরা। সাত সকালে এই অবরোধের জেরে বন্দে-ভারত এক্সপ্রেস থেকে শুরু করে অন্য আরও একাধিক ট্রেন অন্যান্য স্টেশনে থমকে রয়েছে। রেল সূত্র মারফত জানা যাচ্ছে, পুরুলিয়া স্টেশনে থমকে থাকা বন্দে ভারত এক্সপ্রেসকে চান্ডিলের দিক দিয়ে ঘুরিয়ে হাওড়ার দিকে পাঠানো হতে পারে।
অবরোধকারীদের বক্তব্য, ‘আদিবাসী সেঙ্গেল অভিযানের রাষ্ট্রীয় নেতৃত্বের তরফে ১২ ঘণ্টার ভারত বনধের ডাক দেওয়া হয়েছে। তার জন্যই এই রেল অবরোধ। আমাদের বনধ ১২ ঘণ্টার। অন্তত ৫-৬ ঘণ্টার বনধ রাখতে চাইছি আমরা।’ এদিন আবার পোস্টার নিয়ে অবরোধ শুরু হয়েছে। আবার বনধের প্রভাব কিছুটা হলেও পড়েছে রাজ্যের আদিবাসী অধ্যুষিত এলাকাগুলিতে। অনান্য অংশে অবশ্য বনধের ছিঁটেফোঁটা কোনও প্রভাব পড়েনি। আসানসোলের কালিপাহাড়িতে আপাতত অবরোধ উঠলেও ট্রেন চলাচল পুরোপুরি স্বাভাবিক হয়নি বলে রেল সূত্রে খবর। উপরন্তু নতুন করে খবর মিলেছে, বনধ কর্মসূচির অঙ্গ হিসাবে মালদার আদিনা স্টেশনেও রেল অবরোধ শুরু করেছেন আদিবাসীরা।
আবার ছাতনার জোড়হীড়ায় পথ অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখানো শুরু হওয়ায় সকাল থেকেই বাঁকুড়া শালতোড়া রাজ্য সড়কে যান চলাচল বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। আদিবাসীদের মধ্যে সারনা ধর্ম যাঁরা মানেন, তাঁদের ‘রাষ্ট্রীয় গুরু’ সালখান মুর্মুর নেতৃত্বে এ দিনের বনধ ডাকা হয়েছে। সেই মতো অবরোধ বিক্ষোভ চলছে। অবরোধকারীদের বক্তব্য, সারনা ধর্মকে মান্যতা দিতে হবে। ভারতে আগে ৩৮ শতাংশ আদিবাসী ছিল। কমতে কমতে আজকে তা ২৬ শতাংশে নেমে এসেছো আদিবাসীদের বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে ধর্মান্তিত করা হচ্ছে। ঝাড়খণ্ডের প্রধান ভাষা হিসেবে সাঁওতালিকে স্বীকৃতি দেওয়ার দাবিও তোলা হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গের পুরুলিয়া জেলায় অযোধ্যা পাহাড়কেও তাঁদের হাতে ফিরিয়ে দেওয়ার দাবি জানানো হয়েছে।