নিজস্ব প্রতিনিধি: সময় অনেক ক্ষতের ওপর প্রলেপ দিয়ে দিতে পারে। সন্দেশখালিতেও(Sandeshkhali) দিচ্ছে। যারা মানুষকে ভুল বুঝিয়ে তাঁদের তৃণমূল(TMC) বিরোধী করে তুলেছিল, তাঁরা আজ পায়ের নীচে জমি হারিয়ে পিছু হঠছে। তাই যত দিন যাচ্ছে নিজেদের ভুল বুঝতে পেরে ফের তৃণমূলের দিকেই ঝুঁকছেন সন্দেশখালির আন্দোলনকারীরা(Agitators)। এই বদল এখন খালি চোখেই সন্দেশখালিতে দেখা যাচ্ছে। বাম-বিজেপির যে ষড়যন্ত্র সন্দেশখালিকে উত্তপ্ত করে তুলেছিল তা রাজ্য সরকার এবং রাজ্যের শাসক দলের ধৈর্য এবং শান্ত মনোভাবের কাছে পরাস্ত হয়েছে। সন্দেশখালিকে কেন্দ্র করে বসিরহাট লোকসভা কেন্দ্রজুড়ে অশান্তি ছড়িয়ে দেওয়ার যে প্রচেষ্টা শুরু হয়েছিল, তা প্রতিহত হয়েছে। আর তাই আন্দোলনকারীদের সঙ্গে তৃণমূলের ভুল বোঝাবুঝি মিটে যেতেই ফের তাঁরাও জোড়াফুলেই আস্থা রাখছেন। গতকাল অর্থাৎ সোমবার সন্দেশখালির দক্ষিণদাঁড়ির জঙ্গল এলাকায় ভোটের প্রচারে যান স্থানীয় বিধায়ক সুকুমার মাহাত ও তৃণমূল নেতা দিলীপ মল্লিক সহ দলের কয়েকজন কর্মী। তাঁরা সেখানে পৌঁছনোর সঙ্গে সঙ্গেই প্রতিবাদী মহিলারা এসে ফুলের মালা পরিয়ে বিধায়ক সহ তৃণমূল কর্মীদের অভ্যর্থনা জানান। তারপর সবুজ আবির উড়িয়ে হোলির উৎসবে মেতে ওঠেন।
স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব জানিয়েছেন, ভোট ঘোষণা হওয়ার পর তৃণমূল নেতৃত্ব বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে কার কী সমস্যা তা জানার চেষ্টা করছেন। কারও বিরুদ্ধে নির্দিষ্ট অভিযোগ থাকলে সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে ডেকে সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে। সন্দেশখালি জুড়ে যে অশান্তি ছড়িয়েছিল, তা যত দিন যাচ্ছে, মিইয়ে যাচ্ছে। মনোবল ভেঙে পড়েছে আন্দোলনকারীদের। মজার কথা সন্দেশখালির আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আর কোনও যোগাযোগই নেই রেখা পাত্রের, যাকে বিজেপি বসিরহাট লোকসভা কেন্দ্রে প্রার্থী করেছে। এ নিয়ে ক্ষুব্ধ গ্রামের মহিলারা। সন্দেশখালির বিধায়ক সুকুমার মাহাত জানিয়েছেন, ‘মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে প্রত্যেক মহিলাকে লক্ষ্মীর ভাণ্ডার থেকে শুরু করে সব সরকারি প্রকল্পের সুযোগ সুবিধা দেওয়ার চেষ্টা করেছি আমরা। ভুল বুঝে বেশ কিছু মহিলা আমাদের থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছিলেন। আমরা তাঁদের পাশে এসে দাঁড়িয়েছি। যে সব নেতার বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল, তাঁদের দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। ফলে পুনরায় আন্দোলনকারীরা আমাদের পক্ষে ফিরে এসেছেন।’
এদিকে তৃণমূলের বিরুদ্ধে বসিরহাটের বিজেপি প্রার্থী রেখা পাত্রের ব্যক্তিগত তথ্য প্রকাশ্যে আনার অভিযোগ তুলে নির্বাচন কমিশনের দ্বারস্থ হয়েছে বিজেপি। সোমবার রাজ্য বিজেপির প্রতিনিধি দল মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের দফতরে যায়। সেখানে অভিযোগ জানানোর পর বাইরে বেরিয়ে এসে বিজেপি নেতা শিশির বাজোরিয়া বলেন, ‘আমাদের বসিরহাটের প্রার্থী রেখা পাত্রের ব্যক্তিগত তথ্য জনসমক্ষে নিয়ে এসেছে তৃণমূল। রাজ্য সরকারের থেকে ওই তথ্য পেয়েছে তারা। এমনকি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের তথ্যও বাইরে আনা হয়েছে। একই ভাবে অন্য মহিলাদের গিয়েও ভয় দেখাতে পারে শাসকদল। তাই এ নিয়ে তদন্ত হওয়া প্রয়োজন।’ তবে রেখা পাত্রের বদলে যাওয়া মন থেকে মেনেন নিতে পারছেন না সন্দেশখালির আন্দোলনকারী মহিলারা। ফলে সন্দেশখালি থেকে বিজেপির(BJP) লিড তোলার যে পরিকল্পনা ছিল লোকসভা নির্বাচনে(Loksabha Election 2024) তা এখন মাঠে মারা গিয়েছে।