নিজস্ব প্রতিনিধি: একটা অডিও ক্লিপ। সোশ্যাল মিডিয়াতে তা ভাইরাল হতেই, ঝড় উঠেছিল রাজ্য রাজনীতিতে। সেই ঝড়ের কেন্দ্র ছিল পশ্চিম মেদিনীপুর(Paschim Midnapur) জেলার ঘাটাল(Ghatal) লোকসভা কেন্দ্র যেখান থেকে ১০ বছর ধরে তৃণমূল কংগ্রেসের সাংসদ(TMC MP) হিসাবে রয়েছেন বাংলা চলচ্চিত্রের নায়ক সুপারস্টার দেব(Deb) থুড়ি দীপক অধিকারী। সম্প্রতি লোকসভার শেষ অধিবেশনের শেষ দিনে এক আবেগময় বক্তব্যে দেব কার্যত বুঝিয়ে দিয়েছিলেন তিনি আর ভোটে দাঁড়াচ্ছেন না। কিন্তু হাল ছাড়েনি তৃণমূল। গতকালই জোড়া বৈঠকে তাই বসতে হয়েছে দেবকে। প্রথম বৈঠক ছিল রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের(Abhishek Banerjee) সঙ্গে এবং দ্বিতীয় বৈঠক ছিল খোদ দলের সুপ্রিমো তথা বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের(Mamata Banerjee) সঙ্গে। সেই জোড়া বৈঠক সেরে দেব জানিয়েছিলেন, তিনি রাজনীতি ছাড়তে চাইলেও রাজনীতি তাঁকে ছাড়বে না। অগত্যা তিনিই যে ঘাটাল থেকে ২৪’র ভোটে(General Election 2024) তৃণমূলের প্রার্থী হতে চলেছেন সেই ইঙ্গিতও দিয়ে দিলেন। সেই বৈঠকের ২৪ ঘন্টার মধ্যেই ধাক্কা খেলেন শঙ্কর দলুই(Shankar Dolui)। দেবের বিরোধী হিসাবে পরিচিত এই তৃণমূল নেতার এদিন পদই কেড়ে নিয়েছেন মমতা ও অভিষেক।
তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে, শঙ্কর দলুই দেবের বিরুদ্ধে অপপ্রচার করতে ওই অডিও ক্লিপটি সোশ্যাল মিডিয়াতে ভাসিয়ে দিয়েছিলেন। লক্ষ্য ছিল, নিজে ঘাটালে প্রার্থী হওয়া। কিন্তু সেই গুড়ে বালি ঢেলে দিয়েছে খোদ মমতা ও অভিষেক দুইজনই। কেননা তাঁরা জানেন দেবকে ধরে রাখা মানে তৃণমূলের পক্ষে গ্রাম বাংলার ভোটকে ধরে রাখা। শঙ্করকে কয়জন চেনে বা মানে! দল পাশ থেকে সরে দাঁড়ালে তিনি জিরো ভিন্ন কিছুই থাকবেন না। দেব কিন্তু হিরো হয়েই থাকবে। অগ্যতা কোপ শঙ্করের পদে। এদিন দলের তরফে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, তৃণমূলের ঘাটাল সাংগঠনিক জেলার চেয়ারম্যান পদ থেকে অপসারিত করা হচ্ছে শঙ্কর দলুইকে। তাঁর জায়গায় ঘাটাল সাংগঠনিক জেলার নতুন চেয়ারম্যান হচ্ছেন রাধাকান্ত মাইতি। শঙ্কর যে শুধু তৃণমূলের ঘাটাল সাংগঠনিক জেলার চেয়ারম্যান ছিলেন তাই নয়, তিনি ঘাটালের প্রাক্তন তৃণমূল বিধায়কও। কিন্তু তার সঙ্গেই দেবের লাগাতার সঙ্ঘাত চলছিল বলে খবর। দেব নিজে সেই সঙ্ঘাত কোনওদিন প্রকাশ্যে আনেননি। কিন্তু শঙ্কর তাঁর কদর্য রাজনীতির খেলা খেলতে পিছুপা হননি। দেবের ঘনিষ্ঠ মহল সূত্রে জানা গিয়েছে ২৪’র ভোটে ঘাটাল থেকে দেব ফের তৃণমূলের প্রার্থী হলে শঙ্কর পিছন থেকে ছুরি মারতে পারেন। তাঁকে হারিয়ে দিতে পারেন। কিন্তু মমতা আর অভিষেকের খেলায় সেই ভোটের আগেই নিজেই হেরে গেলেন শঙ্কর। জিতে গেলেন দেব।