নিজস্ব প্রতিনিধি: পরিযায়ী শ্রমিকদের ঝাড়খণ্ডের পাকুড় থেকে উত্তরপ্রদেশের লখনউয়ে নিয়ে যাওয়ার পথে বুধবার রাতে বড়সড় দুর্ঘটনার মুখে পড়লো একটি বেসরকারি বাস। উত্তর দিনাজপুর জেলার সদর মহকুমার রায়গঞ্জ থানার রূপাহার এলাকায় ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে নয়ানজুলিতে গিয়ে পড়ে ওই বাসটি। বাসের বেশির ভাগ যাত্রীই তখন ঘুমিয়ে ছিলেন। বাসে ছিলেন প্রায় ৫০জন যাত্রী। রাত সাড়ে ১১টা নাগাদ ওই দুর্ঘটনা আর তার জেরে যাত্রীদের আর্তনাদ শুনে আশেপাশের লোকেরাই এগিয়ে আসেন তাঁদের উদ্ধার করতে। বাসের মধ্যে আটকে থাকা যাত্রীদের বেশির ভাগকেই তাঁরা উদ্ধার করেন। পরে পুলিশ এসেও উদ্ধারের চেষ্টা চালায়। রাত তিনটে নাগাদ শেষ হয় উদ্ধার কাজ। দুর্ঘটনায় এখনও অবধি ছ’জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। তিন জন আশঙ্কাজনক অবস্থায় রায়গঞ্জ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
পুলিশ জানিয়েছে, বাসের মধ্যেই পাঁচ জন মৃত অবস্থায় ছিল। অপর এক জনকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পর মৃত্যু হয়। স্থানীয়দের অভিযোগ, জাতীয় সড়ক চার লেনের করার কাজ দীর্ঘ সময় ধরে চলছে। তার জেরেই চার লেনের জাতীয় সড়ক এখন পরিণত হয়েছে দুই লেনের রাস্তায়। ফলে নিত্যদিনের যানজটের পাশাপাশি দুর্ঘটনাও ঘটছে। বুধবার রাতের প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, দুর্ঘটনার সময় বাসের গতি বেশি ছিল। তারওপর দ্রুত ওভারটেক করতে গিয়ে নরম মাটিতে চাকা পিছলে যায় বাসটির। আর তখনই তা নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে উল্টে গিয়ে পড়ে নয়ানজুলিতে। তবে দুর্ঘটনায় আহত এক পরিযায়ী শ্রমিক জানিয়েছেন, বাসচালক মত্ত অবস্থায় ছিলেন। জানা গিয়েছে নিহতেরা বিহারের সাহেবগঞ্জের বাসিন্দা। রাত দেড়টা নাগাদ জখমদের দেখতে রায়গঞ্জ মেডিক্যাল হাসপাতালে আসেন ইটাহারের বিধায়ক মোশারফ হোসেন এবং রায়গঞ্জ পুলিশ সুপার সানা আখতার-সহ পুলিশ আধিকারিকরা।
রায়গঞ্জ মেডিকেল হাসপাতালে জখমদের খোঁজ খবর নিয়ে ফেরার পথে ইটাহারের বিধায়ক মোশারফ হোসেন বলেন, ‘বাসে অন্তত ১১০ জন পরিযায়ী শ্রমিক ছিলেন। তার মধ্যে ইটাহারের কয়েকজন বাসিন্দাও ছিলেন। তাঁরা দিল্লিতে কাজ করতে যাচ্ছিলেন। কিন্তু তার আগেই ৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। তবে উদ্ধারকাজ এখনও চলছে। আরও কতজনের প্রাণ গিয়েছে জানি না।’ পুলিশের তরফে অবশ্য জানানো হয়েছে কারোর নিখোঁজ হওয়ার কোনও খবর নেই। নয়ানজুলিতেও সম্ভবত কারও দেহ আর পড়ে নেই।