নিজস্ব প্রতিনিধি: একটু বেশি বৃষ্টি হলেই বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে পূর্ব মেদিনীপুরের বিস্তীর্ণ এলাকায়। মাঠঘাট তো ডুবছেই সেই সঙ্গে ডুবছে জনপদও। কোথাও এক কোমর, কোথাও একবুক সমান জল দাঁড়িয়ে যাচ্ছে। সঙ্গে কিছু কিছু ক্ষেত্রে থাকছে প্রাণহানীর ঘটনাও। কোথাও কোথাও জল নামতেও বেশ সময় লাগছে। এবার এই ঘটনার জন্য রাজ্যের সেচমন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্র কাঠগড়ায় তুললেন অবৈধ ভেড়ি আর ইটভাটার রমরমাকে। রাজ্যের সেচমন্ত্রী ও তমলুকের তৃণমূল বিধায়ক সৌমেন মহাপাত্র বলেছেন, অবৈধ ভাবে ইটভাটা ও ভেড়ি হওয়ার ফলেই আজ এই বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। তবে একই সঙ্গে তিনি এই অবস্থা তৈরি হওয়ার জন্য নাম না করেই অধিকারীদেরই কাঠগড়ায় তুলেছেন।
চলতি মরশুমে বার বার অতি অল্প সময়ে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির ঘটনা ঘটছে দক্ষিনবঙ্গের বুকে। আর তার জেরেই বার বার বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে দক্ষিনবঙ্গের বুকে। এর মধ্যেই এবারে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার ভগবানপুর, ময়না, পটাশপুর প্রভৃতি এলাকায় দেখা যাচ্ছে সামান্য বৃষ্টি হলেই সেখানে বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হচ্ছে। এর সঙ্গে নদীর বাঁধ ভাঙলে তো আর কথাই নেই। গ্রামের পর গ্রাম ডুবে যাচ্ছে বন্যার জলে। কোথাও কোথাও একতলা বাড়ি সমান জল দাঁড়িয়ে যাচ্ছে। আর এই অবস্থার জন্যই রাজ্যের সেচমন্ত্রী কাঠগড়ায় তুলেছেন ভগবানপুর, পটাশপুর ও ময়না এলাকায় কার্যত অবৈধ ভাবে গড়ে ওঠা মাছের ভেড়ি ও ইটভাটাগুলিকে। পূর্ব মেদিনীপুর জেলার অবৈধ ভেড়ির বাড়বাড়ন্তের অভিযোগ দীর্ঘদিনের। কোথাও নদীর চর দখল করে, কোথাও আবার কৃষি জমি দখল করে গজিয়ে উঠেছে মাছের ভেড়ি। এমনকি সেই সব ভেড়ির দখল নিয়ে সংঘর্ষ, প্রাণহানির ঘটনা পর্যন্ত ঘটতে দেখা গিয়েছে।
সৌমেনবাবুর বক্তব্য, ‘নদী তীরবর্তী এলাকায় অবৈধ ভাবে ইটভাটা ও ভেড়ি হওয়ার ফলেই আজ এই বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। শুধুমাত্র ভগবানপুর, পটাশপুর নয়। তমলুক, ময়না, শহিদ মাতঙ্গিনী, পাঁশকুড়া, কোলাঘাট, বিভিন্ন জায়গায় একই সমস্যা রয়েছে। এতদিন যাঁরা জেলার রাজনীতি পরিচালনা করেছেন, তাঁদের মদতেই বেআইনি ভেড়ি ও ইটভাটার রমরমা হয়েছে। মাছের অবৈধ ভেড়ি আর ইটভাটায় রুদ্ধ হয়েছে নদীর গতিপথ। তার জেরে ভেঙে পড়েছে নিকাশি ব্যবস্থা। তাঁর জেরেই বৃষ্টির জল না বার হওয়ার রাস্তা পাচ্ছে না বন্যার জল।’