নিজস্ব প্রতিনিধি: বাংলায়(Bengal) প্রায় ৬ শতাংশ জমির মালিকানা রয়েছে মহিলাদের নামে। সংখ্যাটি জাতীয় গড়(National Average) ১৩.৮৭-এর তুলনায় অনেকটাই কম। এই পরিস্থিতিতে মহিলাদের নামে থাকা জমি সুরক্ষিত রাখতে বিশেষ উদ্যোগ নিচ্ছে রাজ্য সরকার(West Bengal State Government)। আর তাই রাজ্য পঞ্চায়েত দফতরের(Panchayat Department) আনন্দধারা প্রকল্পের(Anand Dhara Project) অধীনে প্রতিটি জেলার প্রতিটি ব্লকের প্রতিটি গ্রাম পঞ্চায়েতে মহিলাদের নামে থাকা জমি সুরক্ষা নিশ্চিত করতে খোলা হচ্ছে বিশেষ ইউনিট। স্বনির্ভর গোষ্ঠী পরিচালিত এই কেন্দ্রগুলির মাধ্যমে অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে মহিলাদের জমি সংক্রান্ত সমস্ত পরিষেবা দেবে রাজ্য সরকার।
এই কেন্দ্রগুলি থেকে মহিলাদের জন্য কী কী পরিষেবা মিলবে? পঞ্চায়েত দফতরের আধিকারিকেরা জানিয়েছেন, জমির রেকর্ড করানোর আবেদন, জমির শ্রেণি পরিবর্তনের আবেদন, দাগের তথ্য, খতিয়ানের প্রত্যয়িত নকল, জমির নথি সংশোধন, খাজনা প্রদানসহ বিভিন্ন সুবিধা একছাতার তলায় পাবেন মহিলারা। ফলে এই কেন্দ্রগুলির মাধ্যমে মহিলারা দু’ভাবে উপকৃত হবেন। প্রথমত, পরিষেবা প্রদানকারী স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলাদের কিছু টাকা আয় হবে। অন্যদিকে, পরিষেবা গ্রহণকারী মহিলারা সরকার নির্ধারিত মূল্যে পরিষেবা পাবেন। কয়েক বছর আগে পরীক্ষামূলকভাবে মহিলাদের জমি-সাক্ষরতা প্রশিক্ষণের কাজ শুরু হয় মালদা এবং বীরভূম জেলায়। ভূমি ও ভূমি সংস্কার দপ্তরের আধিকারিকদের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে একটি প্রশিক্ষণ সহায়িকাও প্রস্তুত করা হয়। পরবর্তীকালে প্রতিটি জেলায় তৈরি করা হয় ৫টি করে কেন্দ্র। সেগুলির মাধ্যমে এখনও পর্যন্ত সুবিধা পেয়েছেন ২৭ লক্ষ ২৬ হাজার ৭৭৬ জন মহিলা।
এই সাফল্যের ওপর ভিত্তি করেই এবার প্রতিটি গ্রাম পঞ্চায়েতে এই ধরনের কেন্দ্র চালু করার উদ্যোগ নিয়েছে রাজ্য সরকার। মহিলাদের স্বনির্ভরতার ক্ষেত্রে জমির ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্রথমত, গ্রামীণ জীবন ও জীবিকা জমি কেন্দ্রিক। তাতে মহিলারা যোগ দেন বিশেষভাবে। দ্বিতীয়ত, জমি একটি মূল্যবান সম্পদ। সেটির মালিকানা সুরক্ষিত রাখতে পারলে অর্থনৈতিক এবং সামাজিক সুরক্ষাও নিশ্চিত করা সহজ হয়। এই বিষয়ে মহিলাদের জমির সুরক্ষা নিয়ে ওয়াকিবহাল করে তুলতে আগামী ৬ নভেম্বর রাজ্য পঞ্চায়েত দফতর একটি কর্মশালারও আয়োজন করেছে। সেখানে যোগ দেওয়া মহিলাদের বুঝিয়ে দেওয়া হবে তাঁদের নামে জমি থাকলে কী কী সুবিধা মিলবে।