নিজস্ব প্রতিনিধি: দীর্ঘ কুড়ি মাস বন্ধ থাকার পর আগামী ১৬ নভেম্বর থেকে স্কুল খুলছে রাজ্যে। উত্তরবঙ্গ সফরে গিয়ে উত্তরকন্যা থেকেই এই কথা জানিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। করোনা কাঁটাতে দীর্ঘদিন স্কুলে পঠনপাঠন বন্ধ ছিল। সেই কারণেই স্কুল বাড়ির অবস্থা ভালো নেই অনেক জায়গায়। তাই নবান্নের তরফে অর্থ বরাদ্দ করে সংস্কার করে চলছে উন্নয়ন। এর মাঝেই স্কুলে গিয়ে পড়ুয়াদের পড়াশুনা নিয়ে চিন্তিত ছিলেন অভিভাবকরা। আর সেই কথা মাথায় রেখেই একগুচ্ছ নির্দেশিকা জারি করেছে স্কুল শিক্ষা দফতর। ১৬ নভেম্বর থেকে কী কী নির্দেশিকা মেনে চলতে হবে তা একটি নির্দেশিকায় জানিয়েছে শিক্ষা দফতর।
দফতরের তরফে জানানো হয়েছে, স্কুলে পোস্টার-সহ নানা ভাবে পড়ুয়াদের করোনা-সচেতন করতে বলা হয়েছে নির্দেশিকায়। স্কুল শুরু হওয়ার আগে করোনা নিয়ে পড়ুয়াদের সচেতন করতে ১০ মিনিট সময় বরাদ্দ রাখতে হবে। পারস্পরিক দূরত্ব রক্ষার জন্য প্রতি বেঞ্চে দু’জনের বদলে এক জন পড়ুয়া বসাতে হবে। ক্লাস শুরুর আগে যাতে কোনও রকম হুড়োহুড়ি না-হয়, সেই জন্য স্কুল শুরুর ৬০ মিনিট আগে থেকে পড়ুয়াদের ঢোকার অনুমতি দিতে হবে। সব পড়ুয়া নিজের জলের বোতল নিয়ে আসবে। নিজস্ব বই বা পেন অন্যদের ব্যবহার করতে দেওয়া যাবে না। মাস্ক পরতেই হবে। সঙ্গে রাখতে হবে স্যানিটাইজার। করোনার কারণেই আপাতত মিড ডে মিল চালু হচ্ছে না। মিড ডে মিলে বরাদ্দ খাদ্য অভিভাবকদের হাতে আগের মতই তুলে দিতে হবে। দফতরের তরফে জানানো হয়েছে একই বেঞ্চে পড়ুয়াদের চাপ কমাতে দরকারে দুবেলা অর্থাৎ সকাল ও দুপুরে ভাগাভাগি করে ক্লাস নেওয়া যেতে পারে।
প্রধান শিক্ষকদের বলা হয়েছে, রোজ স্কুলবাড়ি, প্রত্যেকটা ঘর, বেঞ্চ, ল্যাবরেটরি, শৌচালয়, গ্রন্থাগার জীবাণুমুক্ত করতে হবে। রাখতে হবে পর্যাপ্ত মাস্ক ও জীবাণুনাশক। স্কুলের পরিস্থিতির উপরে নজর রাখার জন্য গড়তে হবে বিশেষ কমিটি। নির্দেশে বলা হয়েছে ক্যাম্পাস, খেলার মাঠ, গ্রন্থাগার, ল্যাবরেটরি, ক্লাসঘর এবং হস্টেলে পারস্পরিক দূরত্ব বজায় রাখতেই হবে। ক্যাম্পাসে ঢোকার সময় শরীরের তাপমাত্রা পরীক্ষার জন্য ‘থার্মাল স্ক্যানিং’-এর ব্যবস্থা রাখা আবশ্যিক। মাস্ক পরা, ঘনঘন হাত ধোয়া বাধ্যতামূলক। কলেজের ক্ষেত্রে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে হস্টেল ব্যবহারে অনুমতি দিতে হবে। যারা হস্টেলে থাকবেন কারোর করোনা হলে তাঁকে আলাদা ঘরে আইসোলেশনে কিংবা স্থানীয় হাসপাতাল ও প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলে বিশেষ ব্যবস্থা করতে হবে। বিভিন্ন ধরনের পোস্টার, সিম্বল বা প্রতীক দিয়ে দূরত্ব রক্ষার বিষয়ে ক্যাম্পাসের সকলকে সদা-সচেতন রাখতে হবে। গ্রন্থাগার, জিমনাসিয়াম, ক্যান্টিন, প্রেক্ষাগৃহ, কনফারেন্স হলেও যাতে পারস্পরিক দূরত্বের বিধি যথাযথ ভাবে মেনে চলা হয়, সে-দিকে বিশেষ নজর রাখা জরুরি। সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যথেষ্ট স্যানিটাইজার স্টেশন, স্যানিটাইজার, সাবানের বন্দোবস্ত রাখার কথাও বলা হয়েছে।
অভিভাবকদের চিন্তার বিষয় রয়েছে ট্রেন। কারণ করোনার বিধিনিষেধে ট্রেন এখনও স্বাভাবিক পরিষেবা দিতে পারছে না রাজ্যে। তাই শিক্ষা দফতরের নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, স্কুল বা বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজ কর্তৃপক্ষ ট্রেনে যাতায়াত করা পড়ুয়াদের আবেদনের ভিত্তিতে বিশেষ পাসের ব্যবস্থা করবে। পড়ুয়াদের জন্য ১৬ তারিখ থেকে হলেও প্রধান শিক্ষক ও অন্যান্য শিক্ষক আর স্টাফদের জন্য ১ তারিখ থেকেই খুলছে স্কুল ও কলেজ।