নিজস্ব প্রতিনিধি: বিপর্যয়ের ধাক্কা কাটিয়ে স্বাভাবিক ছন্দে ফেরার চেষ্টা করছে বাংলা(Bengal) ও সিকিম(Sikkim)। আর তারই মাঝে দুই রাজ্য থেকেই উদ্ধার হচ্ছে একের পর এক মৃতদেহ। শনি সকাল পর্যন্ত দুই রাজ্য মিলিয়ে ৫৩টি দেহ উদ্ধার(Body Recover) করা হয়েছে। এদের মধ্যে ২৭টি দেহ উদ্ধার হয়েছে তিস্তার বুক থেকে। বাকিগুলি উদ্ধার হয়েছে হড়পা বানের স্রোত যেখান যেখান দিয়ে গিয়েছে সেই সব এলাকা থেকে। কিছু কিছু দেহ আবার ছিন্নভিন্ন হয়ে গিয়েছে। হাত আছে তো পা নেই, দেহ আছে তো মাথা নেই। কিছু কিছু দেহ তো আবার শনাক্ত করার অবস্থাতেও নেই। সিকিম সরকার নিহতদের পরিবারকে এককালীন ৪ লক্ষ টাকা অনুদান দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছে। যদিও এটা পরিষ্কার নয় যে সেই ক্ষতিপূরণ সিকিম ভিন্ন অন্য কোনও রাজ্যের বাসিন্দারা পাবেন কিনা। এখনও পর্যন্ত সরকারি ভাবে নিখোঁজের(Missing People) সংখ্যা ১৪০ হলেও বেসরকারি ভাবে তা ২০০’র বেশি।
তিস্তার বুকে নেমে আসা হড়পা বানের জেরে(Teesta Flash Flood Disaster) সিকিমে হাজারের বেশি ঘরবাড়ি সম্পূর্ণ ভাবে বিনষ্ট হয়েছে। সেই ঘরবাড়ির বাসিন্দাদের মধ্যে অনেকেই নিখোঁজ। খাস বাংলারই ৫০জন বাসিন্দা এই হড়পা বানের ঘটনায় নিখোঁজ হয়েছেন যাদের কেউ কর্মসূত্রে সিকিমে থাকতেন বা গিয়েছিলেন কিংবা ঘুরতে গিয়েছিলেন। নিখোঁজদের মধ্যে বীরভূম জেলার একই পরিবারের ৮জন সদস্য যেমন আছেন তেমনি কলকাতার একই পরিবারের ৩জন সদস্য আছেন। বালুরঘাটের ৭জন যুবক যারা কর্মসূত্রে সিকিমে গিয়েছিলেন তাঁদের কোনও সন্ধানই মিলছে না। রায়গঞ্জের ৩ যুবক এবং কল্যাণীর এক সম্পতি নিখোঁজ রয়েছেন। এছাড়াও আরও বেশ কিছু মানুষ নিখোঁজ রয়েছেন যাদের সঙ্গে না যোগাযোগ করা যাচ্ছে না তাঁদের কোনও খবর পাওয়া যাচ্ছে। এই নিখোঁজের সংখ্যা প্রায় ৫০। তবে এখন চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে উত্তর সিকিমের ল্যাচেং ও লাচ্যুং এই দুই এলাকায় আটকে পড়া প্রায় ৩ হাজার পর্যটককে উদ্ধার করে আনা। কেননা খারাপ আবহাওয়ার জন্য সেখানে হেলিকপ্টার নামানোই যাচ্ছে না।
ভারতীয় বিমানবাহিনী Mi-17 Helicopter দিয়ে সেখানে উদ্ধারকার্য শুরু করার চেষ্টা করা হলেও খারাপ আবহাওয়ার জন্য ল্যাচেং ও লাচ্যুং এই দুই এলাকায় হেলিকপ্টার নামানোই যাচ্ছে না। যদিও সিকিম সরকারের তরফে জানানো হয়েছে, রাজ্যের অনান্য প্রান্তে আটকে পড়া ২ হাজার ৪১৩জন পর্যটককে উদ্ধার করে নিরাপদে গ্যাংটকে আনা হয়েছে বা সমতলের পথে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। হড়পা বানের ঘটনায় সে রাজ্যের প্রায় ২৫ হাজার মানুষ ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন। নানা ত্রাণশিবিরে প্রায় ৭ হাজার মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন। রাজ্যে প্রায় ১৪টি সেতু সম্পূর্ণ ভাবে ধুয়ে মুছে সাফ হয়ে যাওয়ায় সে রাজ্যে সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা কবে ফের স্বাভাবিক হবে তা কেউই জোর গলায় বলতে পারছেন না।