নিজস্ব প্রতিনিধি, নয়াদিল্লি: পৌনে দুই বছরের কাছাকাছি বঙ্গ বিজেপির মুখিয়ার পদে রয়েছেন সুকান্ত মজুমদার। কিন্তু তার ‘সুযোগ্য’ নেতৃত্বে বাংলায় কোনও নির্বাচনেই প্রত্যাশিত ফলের ধারেকাছে পৌঁছতে পারেনি পদ্ম শিবির। উল্টে ক্রমশই ভোট কমছে। পায়ের নিচ থেকে মাটি সরছে। বিধানাসভার উপনির্বাচন থেকে পুর নির্বাচন, এমনকি সদ্য সমাপ্ত পঞ্চায়েত নির্বাচনে মুখ থুবড়ে পড়ছে বিজেপি। আর তাতেই চটেছেন পদ্ম শিবিরের শীর্ষ নেতারা। সূত্রের খবর, ‘অকেজো’ সুকান্তকে সরিয়ে বঙ্গ বিজেপির সেনাপতির দায়িত্ব নতুন কারও হাতে তুলে দিতে চাইছেন অমিত শাহ-জেপি নাড্ডারা। ইতিমধ্যেই রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘের পদাধিকারীদের সঙ্গে আলোচনা শুরু করে দিয়েছেন তাঁরা।
বিধানসভা ভোটে নরেন্দ্র মোদি-অমিত শাহদের গলার শিরা ফুলিয়ে দাবি করা ‘অব কি বার, দোশো পার’ স্লোগান ভূমিশয্যা নেওয়ার পরেই রাজ্য বিজেপি সভাপতির পদ থেকে দিলীপ ঘোষকে সরিয়ে দিয়েছিলেন জে পি নাড্ডা। ২০২১ সালের ২০ সেপ্টেম্বর বঙ্গ বিজেপির মুখিয়ার দায়িত্ব তুলে দিয়েছিলেন সুকান্ত মজুমদারের কাঁধে। কিন্তু সংগঠন চালানোর মতো অভিজ্ঞতা না থাকায় গুরুদায়িত্ব নিয়ে ল্যাজেগোবরে হন বালুরঘাটের সাংসদ। দলের মধ্যে গোষ্ঠী খেয়োখেয়ি তুঙ্গে ওঠে। রাস্তায় নেমে আন্দোলনের পরিবর্তে সেজেগুজে প্রতিদিন বিকেল-সন্ধেয় সাংবাদিকদের সামনে বিবৃতি দিয়ে প্রচারমাধ্যমে ভেসে থাকার দিকে বেশি নজর দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে বঙ্গ বিজেপির মুখিয়ার বিরুদ্ধে।
দলের দায়িত্ব পাওয়ার পরেই সংগঠনে নিজের আজ্ঞাবহদের বিভিন্ন পদে বসানোরও অভিযোগ উঠেছে সুকান্তের বিরুদ্ধে। আন্দোলনহীনতার কারণে বিজেপির অনেক নেতাই নিস্ক্রিয় হয়ে বসে গিয়েছেন। শুধু তাই নয়, যোগ্য নেতাদের উপেক্ষা করে নিজের ইয়েসম্যানদের দিয়ে সংগঠন চালানোর অভিযোগ তুলে সুকান্তের বিরুদ্ধে শাহ-নাড্ডার কাছে একাধিকবার নালিশ জানিয়েছেন বঙ্গ বিজেপির একাধিক সাংসদ-বিধায়ক। একাধিকবার বঙ্গ বিজেপির মুখিয়াকে ডেকে দিলীপ ঘোষ-সহ রাজ্যের পোড়খাওয়া নেতাদের কাছে লাগানোরও নির্দেশ দিয়েছিলেন শাহ-নাড্ডা। কিন্তু সেই নির্দেশ কার্যকর না করারও মারাত্ম অভিযোগ উঠেছে বালুরঘাটের সাংসদের বিরুদ্ধে। গ্রামবাংলার ভোটে দল ভূমিশয্যা নেওয়ার পরেই সুকান্তকে সরানোর বিষয়ে চিন্তাভাবনা শুরু করেছেনবিজেপি শীর্ষ নেতৃত্ব।