নিজস্ব প্রতিনিধি, ফুলিয়া: টাঙ্গাইল কথাটার উৎপত্তি ওপার বাংলা থেকে। টাঙ্গাইল বর্তমান বাংলাদেশের একটি জেলার নাম। দেশ স্বাধীন হওয়ার সময় ওপার বাংলার টাঙ্গাইল জেলার বহু মানুষ এপার বাংলায় উদ্বাস্তু হয়ে এসে ঘর বাঁধেন নদীয়ার শান্তিপুর(Shantipur) ও ফুলিয়াতে।আর বেশ কিছু মানুষ পূর্ব বর্ধমানের ধাত্রীগ্রাম ও সমুদ্রগড়ে বসবাস করতে শুরু করেন। এই এলাকাগুলোতে হস্ত চালিত তাঁতে যে শাড়ি তৈরি হয় তা টাঙ্গাইল শাড়ি(Tangail Saree) নামে খ্যাতি লাভ করে। সম্প্রতি পশ্চিমবঙ্গের এই টাঙ্গাইল শাড়ি জিআই ট্যাগের স্বীকৃতি পেল। যদিও শংসাপত্র পাওয়া সময়ের অপেক্ষা।
জানা গিয়েছে, মুর্শিদাবাদ ও বীরভূমের গরদ ও কোরিয়াল শাড়িও পেতে চলেছে জি আই ট্যাগ। এছাড়াও জি আই ট্যাগ পেতে চলেছে সুন্দরবনের মধু, উত্তরবঙ্গের জলপাইগুড়ি এলাকার সুগন্ধি কালু নুনিয়া চাল । যা প্রিন্স অফ রাইস নামে খ্যাত। শান্তিপুর ফুলিয়া সহ যেসব জায়গায় তাঁতিরা টাঙ্গাইল শাড়ি তৈরি করেন তারা রীতিমতো খুশি। কারণ এর ফলে শাড়ির দাম যেরকম বাড়বে বিদেশে রপ্তানি হবে তেমনি তাদের মজুরিও বাড়বে। জানা গেছে শান্তিপুরে যে টাঙ্গাইল শাড়ি তৈরি হয় তা ৪০০-৫০০ টাকা থেকে হাজার টাকার মধ্যে সীমাবদ্ধ। কিন্তু ফুলিয়া সহ অন্যান্য জায়গায় তাঁতিরা যে টাঙ্গাইল শাড়ি তৈরি করে সেই শাড়ি হাজার থেকে লক্ষ টাকা দামে বিক্রি হয়।
প্রসঙ্গত, মেশিনে বোনা এবং সুরাট থেকে আমদানি করা সস্তার শাড়ির দৌরাত্ম্যে হস্তচালিত তাঁতের শাড়ি কোণঠাসা হতে হতে অধিকাংশ হস্তচালিত তাঁত বন্ধ হয়ে গিয়েছে। অধিকাংশ তাঁতি বিকল্প রুজির সন্ধানে আপন পরিবার ছেড়ে পরিযায়ী শ্রমিক হয়ে ভিন রাজ্যে কর্মরত, টাঙ্গাইল শাড়ি জি আই ট্যাগ পাওয়ায় তারা ফিরতে পারবে কি নিজের বাড়িতে ? আবার কি চালু হবে হস্ত চালিত তাঁত ? এইসব প্রশ্নের উত্তর খুঁজছে সেই সব তাঁতির পরিবারগুলি। তবে জিআই ট্যাগের স্বীকৃতি পেতেই নিজের টুইটারে তা তুলে ধরেছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়(CM Mamata Banerjee)। রাজ্যের তাঁত শিল্পীদের তিনি এই সুখবর জানিয়ে খুশির বার্তা পৌঁছে দিয়েছেন।