নিজস্ব প্রতিনিধি: ভোটের আগে আবারও কোপ বাংলার(Bengal) ভাগ্যে। সেই কোপ দিয়েছে কেন্দ্রের ক্ষমতাসীন নরেন্দ্র মোদির(Narendra Modi) সরকার। বাংলার রাজ্যের রেশন গ্রাহকদের জন্য কেরোসিনের(Kerosene) বরাদ্দ এক ধাক্কায় প্রায় তিন-চতুর্থাংশ কমিয়ে দিয়েছে কেন্দ্র সরকার। জানুয়ারি পর্যন্ত বাংলায় প্রতি মাসে কেরোসিনের বরাদ্দ ছিল ৫৮ হাজার ৬৬৮ কিলোলিটার। সেটাই এক ধাক্কায় ফেব্রুয়ারি থেকে কমিয়ে ১৪ হাজার ৩০৪ কিলোলিটার করে দেওয়া হয়েছে। পেট্রলিয়াম মন্ত্রক(Ministry of Petroleum and Natural Gas) ফেব্রুয়ারি-মার্চ মাসে কেরোসিনের মোট বরাদ্দের যে পরিমাণ রাজ্য সরকারকে জানিয়েছে তাতে দেখা যাচ্ছে, দু’মাসের জন্য মোট ২৮ হাজার ৬০৮ কিলোলিটার কেরোসিন বরাদ্দ করা হয়েছে। অর্থাৎ আবারও বাংলাকে বঞ্চনা। একটি মামলায় কলকাতা হাইকোর্টের(Calcutta High Court) স্থগিতাদেশ থাকায় গত কয়েক বছরে দেশের মধ্যে শুধু বাংলার ক্ষেত্রে কেরোসিনের কোটা কমাতে পারেনি কেন্দ্র সরকার। কিন্তু চলতি ফেব্রুয়ারি মাসের শুরুতে কলকাতা হাইকোর্ট ওই মামলার চূড়ান্ত রায় দেয়। তাতেই বলা হয়, বাংলায় কেরোসিনের বরাদ্দের ব্যাপারে কেন্দ্রীয় সরকার নীতি তৈরি করুক। এরপরই দেখা যাচ্ছে বাংলার কেরোসিনের ভাগ্যে কোপ পড়েছে।
বস্তুত জানুয়ারি থেকেই কেন্দ্রীয় সরকার রাজ্যের কেরোসিন বরাদ্দ নিয়ে টালবাহানা করছিল। জানুয়ারি-মার্চ কোয়ার্টারের জন্য বিভিন্ন রাজ্যকে মোট কেরোসিন বরাদ্দ করে যে বিজ্ঞপ্তি জারি হয়, তাতে বাংলার কোনও উল্লেখ ছিল না। এরপর জানুয়ারির ১৯ তারিখে পেট্রোলিয়াম মন্ত্রক জানায়, ওই মাসের বরাদ্দ ৫৮ হাজার কিলোলিটার তেল ওই মাসের মধ্যে পুরোটা তুলে নিতে হবে। কিন্তু অন্য রাজ্যগুলিকে সাধারণ নিয়ম অনুযায়ী ৩ মাস ধরে পুরো বরাদ্দ তোলার সুযোগ দেওয়া হয়েছিল। দেরিতে বরাদ্দ করার জন্য রাজ্য জানুয়ারি মাসে বরাদ্দের মাত্র ৩০ শতাংশ তুলতে পেরেছিল। বাকিটা ফেব্রুয়ারি মাসে তোলার জন্য পেট্রলিয়াম মন্ত্রকের কাছে রাজ্যের খাদ্য দফতরের তরফে চিঠি পাঠানো হলেও সেই চিঠিতে কোনও সাড়া দেয়নি কেন্দ্র সরকার। পরিবর্তে ফেব্রুয়ারি-মার্চ মাসের বরাদ্দ এক ঝটকায় কমিয়ে দেওয়া হয়। এই ঘটনার জেরে রাজ্যের কেরোসিন ডিলারদের সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক অশোক গুপ্তের অভিযোগ, বাংলার জন্য কোনও নীতি তৈরি না করে খেয়ালখুশি বরাদ্দ কমানো হয়েছে। এতে রাজ্যের গরিব মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। কারণ, কাগজেকলমে যাই দাবি করা হোক না কেন, শেষ পর্যন্ত গ্রাহকের ভাগের কেরোসিনেই কোপ পড়বে। আর চাপ বাড়বে ডিলারদের উপর। যদিও রাজ্যের খাদ্য দফতর সূত্রে খবর, গ্রাহকদের মাথাপিছু বরাদ্দে কোনও পরিবর্তন আপাতত হচ্ছে না। তবে মোট বরাদ্দ অনুযায়ী ডিলারদের আগের তুলনায় কম কেরোসিন দেওয়া হবে।