নিজস্ব প্রতিনিধি: বছরের শুরুতেই বাঘের হামলায় থরহরি কম্পমান সুন্দরবনবাসী। তাও এক জায়গায় নয়, একাধিক জায়গায় ঘটেছে বাঘের হামলার ঘটনা। গোসাবা ও কুলতলির গ্রামে ঘটেছে এই ঘটনা। গোসাবার লাহিড়িপুরে রয়েছে চরগেরির জঙ্গল। আর সেই জঙ্গলের কাছেই রয়েছে পরেশমণি গ্রাম। সেই গ্রামেই শুক্রবার সকালে বাঘের উপস্থিতি টের পান বাসিন্দারা। দ্রুত খবর যায় বনদফতরেও। বনকর্মীরা দ্রুত ঘটবনাস্থলে গিয়ে এলাকা জাল দিয়ে ঘিরে দেন। যদিও তারপরেও বাঘ যে এলাকা ছেড়ে যায়নি বা অন্যকোথাও যাওয়ার চেষ্টা করছে না সেটা মালুম হয়েছে শনি সকালেই। এদিন ওই জঙ্গলে বাঘ রয়েছে কিনা তা দেখতে ঢুকেছিলেন বনকর্মীরা। সেই সময়েই বাঘ আচমকা হামলা চালায় তাঁদের ওপর। পার্থ হালদার নামে এক বনকর্মীকে থাবার আঘাতে জখমও করে সে। ওই বনকর্মীর মুখে ও পায়ে চোট লেগেছে। এরপর দ্রুত তাঁকে কাছের একটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসার পর তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
অন্যদিকে কুলতলিতে বর্ষশেষের রাতে বাঘের হামলায় দুই মৎস্যজীবী আহত হয়েছেন বলে জানা যাচ্ছে। শুক্রবার রাতে কুলতলির হলদিবাড়ি জঙ্গল লাগোয়া রঙমারির চরে এই ঘটনাটি ঘটে। ওই সময় বেশ কয়েক জন মৎস্যজীবী বিদ্যাধরী নদীতে নৌকা নিয়ে মাছ ধরছিলেন। তাঁদের মধ্যে একটি নৌকা নদীর পাড়ের কাছাকাছি চলে আসার পরেই তাতে বাঘ ঝাঁপিয়ে পড়ে। বাঘের থাবায় আহত হন মৈপীঠ উপকূল থানার শনিবারের হাট এলাকার শক্তির মোড়ের বাসিন্দা অমল দণ্ডপাত ও খোকন মুন্ডা নামের দুই মধ্যবয়স্ক মৎস্যজীবী। ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, বাঘটি নদীর পাড়ে অন্ধকারের মধ্যে গাছের নীচে লুকিয়ে ছিল। নৌকা পাড়ের কাছে আসতেই সে ঝাঁপ দেয়। বাঘটি প্রথমে খোকনবাবুকে এবং পরে অমলবাবুকে আক্রমণ করে। দুই মৎস্যজীবীই বৈঠা নিয়ে ক্রমাগত বাঘটিকে আঘাত করতে থাকায় বাঘ জঙ্গলে পালাতে বাধ্য হয়। অমলবাবুদের সঙ্গীরা ওই দু’জনকে উদ্ধার করে গ্রামে ফিরিয়ে আনেন। এর পর স্থানীয় চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাওয়া হয় তাঁদের। অমলবাবুর অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাঁকে কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। সেখানেই চিকিৎসা চলছে তাঁর।