নিজস্ব প্রতিনিধি: একুশের বিধানসভা নির্বাচনে যে আসন থেকে দল ৫০ হাজারেরও বেশি ভোটে জিতেছিল সেই আসনের উপনির্বাচনে কীভাবে দল প্রায় ২৩ হাজার ভোটে হারে? এই প্রশ্নটাই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়(Mamata Banerjee) ছুঁড়ে দিয়েছেন দলেরই জেলা নেতৃত্বের কাছে। শুধু তাই নয় মুর্শিদাবাদ(Murshidabad) জেলার সাগরদিঘী বিধানসভা কেন্দ্রের(Sagardighi Assembly Seat) ফলাফল নিয়ে রিপোর্টও চেয়ে পাঠিয়েছেন তিনি দলের জঙ্গিপুর সাংগঠনিক জেলা নেতৃত্বের কাছ থেকে। সেই রিপোর্টেই ‘অন্তর্ঘাত’ তত্ত্ব তুলে ধরতে চলেছেন সেখানকার নেতারা।
আরও পড়ুন উত্তরবঙ্গে BJP’র সাংসদ ও বিধায়কদের বাড়ি ঘেরাও INTTUC’র
মুর্শিদাবাদ জেলার সাগরদিঘী হল সেই কেন্দ্র যেখানে ২০১১ সালে মুর্শিদাবাদের মাটিতে প্রথমবার ঘাসফুট ফুটেছিল অধীর চৌধুরীর হাজারো চক্রান্তের পরেও। সেবার সেই ঘাসফুল ফুটিয়েছিলেন সুব্রত সাহা। শুধু সেই বছরই নয়, ২০১৬ ও ২০২১ সালেও জয়ী হয়েছিলেন তিনি। হয়েছিলেন রাজ্যের মন্ত্রীও। অথচ তাঁর মৃত্যুর পরে যখন সাগরদিঘীতে উপনির্বাচন(Bye Election) হল তখন সেখানে প্রায় ২৩ হাজার ভোটে জিতে গেলেন বাম-কংগ্রেস জোট প্রার্থী। স্বাভাবিক ভাবেই মমতা দলের জেলা নেতৃত্বকে প্রশ্ন ছুঁড়ি দিয়েছিলেন ৫০ হাজার ভোটে জেলা আসন কীভাবে ২৩ হাজার ভোটে হারতে হয়? একটি বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনের জয়-পরাজয়ে রাজ্যে ক্ষমতার অলিন্দে সামান্য অদলবদলও হওয়ার কথা নয়। তারপরও রাজ্যজুড়ে চর্চায় উঠে আসছে সাগরদিঘি কেন্দ্রের ফলাফল। তাই এই পরাজয়কে মোটেই হাল্কাভাবে নিচ্ছে না তৃণমূল(TMC) বা মমতা।
আরও পড়ুন Sector 5-এ পাঁচতলা বাড়িতে বঙ্গ বিজেপির নয়া অফিস
তৃণমূল সূত্রের খবর সাগরদিঘী নিয়ে সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে রিপোর্ট জমা দিতে চলেছেন দেবেন দলের জঙ্গিপুর সাংগঠনিক জেলা তৃণমূলের সভাপতি খলিলুর রহমান। এর পাশাপাশি রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমও একটি আলাদা করে রিপোর্ট জমা দিতে চলেছেন মমতার কাছে। সূত্রে জানা গিয়েছে দুটি রিপোর্টেই ‘অন্তর্ঘাত’ তত্ত্ব তুলে ধরা হবে। এর পাশাপাশি তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্বের দাবি, প্রচারে খামতি রাখা হয়নি। দলনেত্রী নিজে না গেলেও সভা করেছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। একাধিক নেতা-মন্ত্রী প্রচারে ঝড় তুলেছিলেন। ভোটের পর প্রতি অঞ্চলের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারাও বুথভিত্তিক খবর দিয়ে জানিয়েছিলেন, জয় নিশ্চিত। তাঁরা কি জনমত বুঝতে ব্যর্থ হয়েছেন? নাকি এক সময় দল থেকে বহিষ্কার করা দেবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায়কে প্রার্থী করার সিদ্ধান্ত মেনেন নিতে পারেননি দলেরই নেতা থেকে কর্মী বা সমর্থকেরা? ‘অন্তর্ঘাত’ তত্ত্ব প্রসঙ্গে খলিলুর রহমান জানিয়েছেন, ‘দলের মধ্যেই অন্তর্ঘাতের কিছু খবর আমরা পাচ্ছি। সবটা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’ অন্তর্ঘাত তত্ত্ব উড়িয়ে দেননি সাংগঠনিক জেলার তৃণমূল চেয়ারম্যান কানাইচন্দ্র মণ্ডলও। তিনি বলেন, ‘বুথস্তরে দায়িত্বে থাকা নেতাদের ভূমিকা খতিয়ে দেখা হবে।’