নিজস্ব প্রতিনিধি: সাড়ে ৩ দশকের রাজত্বপাটের মাঝেই দলটা পচে গিয়েছিল। এখন বাংলার বিধানসভা থেকেও তাঁরা বিলুপ্ত হয়ে গিয়েছে। সেই দলের কেউ আর আগেকার নেতানেত্রীদের খবরাখবর রাখেন না। যে যার গুছিয়ে নিয়ে কেটে পড়েছেন। কেউ কেউ ভিন দলে ভিড়েও গিয়েছেন। খালি দলঅন্তপ্রাণ মানুষগুলো এখনও লাল ঝাণ্ডা আঁকড়ে পড়ে রয়েছে যদি দল আবার ক্ষমতায় ফেরে এই আশায়। সেই দলেরই নির্বাচিত দু’বারের এক পঞ্চায়েত সদস্য দৃষ্টিশক্তি ক্রমশ ক্ষীণ হয়ে এসেছে। অথচ দল তাঁর না পাশে দাঁড়িয়েছে না তাঁর কোনও খোঁজখবর নিয়েছে। ভেতর ভেতর তাই ভেঙে পড়েছিলেন সেই কমরেড। কিন্তু আশার আলো দেখালেন TMC বিধায়ক। তাঁর চিকিৎসার যাবতীয় দায়িত্ব নিলেন তিনি। পাশাপাশি সরকারি পরিষেবা দ্রুত পাইয়ে দেওয়ারও আশ্বাস দিয়েছেন তিনি। সন্দেহ নেই বাম শিবিরে এ এক বড় ধাক্কা। নজরে উত্তর ২৪ পরগনা(North 24 Pargana) জেলার বাগদা(Bagda) বিধানসভা কেন্দ্রের TMC বিধায়ক বিশ্বজিৎ দাস(Biswajit Das) ও ওই বিধানসভা কেন্দ্রের মধ্যে থাকা গাঁড়পোঁতা গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রাক্তন CPIM পঞ্চায়েত সদস্য সুবল করাতি(Subal Karati)।
আরও পড়ুন শুভেন্দু ঘনিষ্ঠ ডিন্ডাও কী এবার তৃণমূলের পথে, ছড়ালো জল্পনা
জানা গিয়েছে, চলতি সপ্তাহের শুক্রবার বিশ্বজিৎ গাঁড়পোঁতা গ্রাম পঞ্চায়েতের নকপুল মাঠপাড়া এলাকায় ‘দিদির সুরক্ষা কবচ’ কর্মসূচিতে গিয়েছিলেন। সেখানেই তাঁর সঙ্গে দেখা করতে চলে আসেন ওই এলাকারই দুবারের বাম পঞ্চায়েত সদস্য সুবল করাতি। তিনি CPIM’র সদস্য হওয়া সত্ত্বেও দল আজ আর তাঁকে দেখে না। কার্যত তাঁর কোনও খোঁজখবরই রাখেন না লাল ঝান্ডার নেতারা। বিধায়ককে হাতের কাছে পেয়ে সেই দুঃখের কথা শোনান সুবলবাবু। সঙ্গে জানান তাঁর চোখের দুরাবস্থার কথা। নিজের প্রাণপ্রিয় দলকে নিয়ে একরাশ অভিমান ঝরে পড়ে তাঁর গলা থেকে। বিধায়ক শান্ত মেজাজে তাঁর সমস্ত অভিযোগ শোনেন। সব শুনে বিধায়ক তাঁর চিকিৎসার দায়িত্ব নেন। সঙ্গে দেন সরকারি পরিষেবার আশ্বাস। বিশ্বজিতের এহেন সিদ্ধান্ত স্তম্ভিত করেছে বাম সমর্থকদেরও। একই সঙ্গে এই ঘটনা জানাজানি হতেই মুখ লুকিয়ে কার্যত পালিয়ে বেড়াচ্ছেন এলাকার একসময়কার দাপুটে নেতারা যাদের দাপটে এলাকার বাঘ-গরু সব একঘাটে জল খেত।
আরও পড়ুন বাংলা থেকে বেমালুম গায়েব ১,২৬৬টি রাস্তা, অবাক নবান্ন
বাগদার তৃণমূল বিধায়কের ব্যবহারে অবশ্য বেশ খুশি সুবল করাতি। সংবাদমাধ্যমে তিনি জানিয়েছেন, ‘বিধায়কের ব্যবহার আমার খুব ভালো লেগেছে। তিনি আমার চোখের চিকিৎসার দায়িত্ব নিয়েছেন। পাশাপাশি সরকারি পরিষেবা যাতে দ্রুত পাই, তা দেখার জন্য পঞ্চায়েতকে বলেছেন।’ অন্যদিকে বিশ্বজিৎ দাস জানিয়েছেন, ‘বিধায়ক হিসেবে আমার দায়িত্ব এই বিধানসভা এলাকার বাসিন্দাদের দেখভাল করা। সেকারণেই তাঁর চিকিৎসার দায়িত্ব আমি নিয়েছি। পাশাপাশি বার্ধক্যভাতা, স্বাস্থ্যসাথী কার্ড থেকে শুরু করে সমস্ত সরকারি পরিষেবা যাতে তিনি পান, তার জন্য পঞ্চায়েতকে ব্যবস্থা নিতে বলেছি।’ কিন্তু এসব কী লালঝান্ডার নেতারা দেখতে পাচ্ছেন আলিমুদ্দিন থেকে? বোধহয় না, তাঁরা এখনও শীতঘুমেই আছেন।