নিজস্ব প্রতিনিধি: রাজ্য সরকারের ঘোষিত তিন শতাংশ হারে মহার্ঘ ভাতা দেওয়ার সিদ্ধান্তে অখুশি রাজ্যের সিপিএম ও বিজেপিপন্থী সরকারি কর্মচারিরা ফের কর্মনাশা কর্মবিরতি পালনের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। আগামী ২০ ও ২১ ফেব্রুয়ারি টানা দু’দিন কর্মবিরতি পালনের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন রাম-বাম মনোভাবাপন্ন সরকারি কর্মচারিরা। আর ওই কর্মবিরতির দিনক্ষণ বাছাই নিয়েই প্রশ্ন উঠেছে। অনেকেই মনে করছেন, কাজে ফাঁকি দিয়ে যাতে ‘বাবুমশাইরা’ সপরিবারে দিঘা-বকখালি আর পুরী ঘুরে আসতে পারেন তার জন্যই ২০ ও ২১ ফেব্রুয়ারি কর্মবিরতির ডাক দেওয়া হয়েছে।
বাম জমানায় ‘আসি যাই, মাইনে পাই’ মনোভাব নিয়ে অফিসে এসে তাস পিটিয়ে আর পর নিন্দা পরচর্চায় মত্ত থেকেই সময় কাটানোর অভিযোগ ছিল সরকারি বাবুদের বিরুদ্ধে। শাসকদল সিপিএমের সরকারি কর্মচারি সংগঠন কো-অর্ডিনেশন কমিটির ছত্রচ্ছায়ায় থেকে সরকারি অফিসগুলিকে পাড়ার ক্লাবে পরিণত করার মারাত্মক অভিযোগ উঠেছিল ফাঁকিবাজ সরকারি কর্মচারিদের বিরুদ্ধে। রাজ্যে পালাবদলের পরে তৃণমূল সরকার ক্ষমতায় আসার পরে সরকারি বাবুদের সেই সুখের দিন চলে গিয়েছে। কঠোর নিয়মানুবর্তিতা মেনে চলতে হচ্ছে। কিন্তু ফাঁকিবাজি যাদের অস্থিমজ্জায় মিশেছে তারা কাহাতক আর কঠোর নিয়মের বেড়াজালে আবদ্ধ থাকতে পারেন? তাই ডিএ দেওয়ার অছিলায় ফের কাজকর্ম শিঁকেয় তুলে লোকদেখানো নাটক শুরু করেছেন সিপিএমপন্থী সরকারি কর্মচারিরা। আর এ ক্ষেত্রে তাদের স্যাঙাত হয়েছেন রাজনৈতিক ডিগবাজি খেয়ে বিজেপিতে নাম লেখানো সরকারি বাবুদের একাংশ।
বকেয়া ডিএ’র নামে গত মাসখানেক ধরেই আন্দোলন চালাচ্ছেন তাঁরা। আন্দোলনের নামে সংবাদমাধ্যমে তৃণমূল সরকারের বাপ-বাপান্ত করে গায়ের জ্বালা মেটাচ্ছেন। মাঝে-মধ্যে কাজ ফাঁকিকে আড়াল করতে কর্মবিরতি নামল ঢাল ব্যবহার করছেন। বকেয়া ডিএ’র দাবিতে আগামী ২০ ও ২১ ফেব্রুয়ারি ফের কর্মবিরতির ডাক দিয়েছে রাম-বামপন্থী সরকারি কর্মচারিদের একাধিক সংগঠনকে নিয়ে রাতারাতি গজিয়ে ওঠা যৌথ সংগ্রামী মঞ্চ। আর ওই দিন বাছাই নিয়েই শুরু হয়েছে জল্পনা। কেননা ১৮ ও ১৯ ফেব্রুয়ারি শনিবার ও রবিবার হওয়ার কারণে সরকারি ছুটি। ২০ ও ২১ ফেব্রুয়ারি সোম ও মঙ্গলবার হওয়ার কারণে টানা চারদিন ছুটি মিলবে। আর এক লপ্তে চারদিন ছুটি মেলায় বউ-ছেলেমেয়ে নিয়ে দীঘা-বকখালি-পুরী গিয়ে প্রমোদ ভ্রমণও সেরে ফেলা যাবে। সাধে কী আর বলে, স্বভাব যায় না ম’লে!