নিজস্ব প্রতিনিধি: পঞ্চায়েত নির্বাচনের(Panchayat Election) ভোটগ্রহণের দিন রাজ্যের জেলায় জেলায় আক্রান্ত শাসক শিবির। কোচবিহার, উত্তর দিনাজপুর, মালদা, মুর্শিদাবাদ, নদিয়া, দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলায় মৃত্যু হয়েছে প্রায় ১০জন তৃণমূল(TMC) কর্মী। তাঁদের মধ্যে একজন আবার প্রার্থীও। আর এই মৃত্যু মিছিলের জেরেই প্রশ্ন উঠেছে কেন দিনভর শাসক শিবিরই নিশানা হয়ে উঠল? আর কেনই বা শাসক শিবিরের ওপর এহেন প্রাণঘাতী একের পর এক হামলা চালালো বিরোধীরা। কেননা প্রতিটি ক্ষেত্রেই অভিযোগ উঠেছে, বাম(Left) অথবা কংগ্রেস(INC) অথবা বিজেপির আশ্রিত দুষ্কৃতীরাই এই হামলা চালিয়েছে। কিন্তু কেন চালানো হল এই হামলা?
আরও পড়ুন নন্দীগ্রামে বসেই বিজেপি ছাড়ার ইঙ্গিত দিয়ে দিলেন শুভেন্দু
ওয়াকিবহাল মহলের দাবি, ২৪’র ভোটের আগে বাংলার রাজনীতিতে বিরোধীরা নিজেদের অস্তিত্ব তুলে ধরতে মরিয়া ছিল। কেননা এই নির্বাচনে তাঁদের অস্তিত্ব তুলে ধরতে না পারলে ২৪’র ভোটে তাঁরা আর সাধারন মানুষের কাছে ভোটটা চাইতে যেতেও পারবে না। বিশেষ করে বাম ও কংগ্রেস। এই নির্বাচন কার্যত তাঁদের কাছে ছিল অ্যাসিড টেস্টের সমান। এই নির্বাচনে তাঁরা কিছু করে দেখাতে না পারলে কোনও ভাবেই তাঁরা আর রাজ্য রাজনীতির মূল স্রোতে ফিরে আসতে পারবে না। বাংলার বিধানসভা থেকে যেভাবে তাঁরা বিলুপ্ত হয়ে গিয়েছে ঠিক সেভাবে রাজ্য রাজনীতি থেকেও তাঁরা বিলুপ্ত হয়ে যাবে। সেই বিলুপ্তি ঠেকাতেই এদিন বাম ও কংগ্রেস হার্মাদদের সঙ্গে নিয়েই হামলা চালিয়েছে শাসক শিবিরের নেতা থেকে কর্মী, প্রার্থী থেকে সমর্থকদের ওপর। লক্ষ্যণীয় ভাবে এদিন যত তৃণমূল কর্মী মারা গিয়েছে তাঁর মধ্যে ৮টি ক্ষেত্রেই অভিযোগের তীর বাম অথবা কংগ্রেসের দিকে। যা কার্যত বলে দিচ্ছে এই দুই দল এবার মরিয়া হয়ে উঠেছিল রাজ্য রাজনীতিতে নিজেদের প্রাসঙ্গিকতা তুলে ধরতে। যেন তেন প্রকারণে তাঁরা ক্ষমতা দখল করতেই এই হামলা চালিয়েছে।
আরও পড়ুন ২০১৮’র তুলনায় ভোট প্রদানের হার কিঞ্চিত কম ২৩’র সকালে
এর পাশাপাশি আরও একটি কারণ উঠে আসছে বিশেষজ্ঞদের কাছ থেকে। তাঁদের দাবি, গ্রাম বাংলার প্রায় প্রতিটি বাড়িরই কোনও না কোনও সদস্য রাজ্য সরকারের কোনও না কোনও আর্থসামাজিক প্রকল্পের সুবিধা পান। তা সে স্বাস্থ্যসাথী হোক কী লক্ষ্মীর ভাণ্ডার, খাদ্যসাথী হোক কী সবুজসাথী, কন্যাশ্রী হোক কী রূপশ্রী, ঐক্যশ্রী হোক কী মেধাশ্রী, কৃষকবন্ধু হোক কী মৎস্যবন্ধু, বিধবা ভাতা হোক কী বার্ধক্য ভাতা, সবাই কিছু না কিছু পান। সেই পাওয়ার জন্যই তাঁরা শাসক দলের সমর্থক, তাঁদের ভোটার। শাসকের সাংগঠনিক ক্ষমতাও তাই গ্রামের বুথে বুথজে যা বাংলার কোনও বিরোধী দলই গড়ে তুলতে পারেনি। শাসকের প্রতি এই জনসমর্থন আর শক্তিশালী সংগঠনের সঙ্গে যে কোনও ভাবেই বিরোধীরা এঁটে উঠতে পারবে না সেটা তাঁরা বুঝে গিয়েছে। একুশের ভোটেও সেটা ফুটে উঠেছিল। বাংলা এখন মমতাময়(Mamata Banerjee)। সেই পরিবর্তনের কাণ্ডারী, বাংলার অগ্নিকন্যার ভাবমূর্তি ও জনপ্রিয়তায় ধাক্কা দিতে পারেন না খোদ দেশের প্রধানমন্ত্রীও। সেখানে বাংলার বিরোধীরা তো কিচ্ছুটি নয়। কার্যত মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এক ফুঁৎকারে উড়ে যাবে তাঁরা সেই সব বুঝেই হার্মাদদের সঙ্গে নিয়ে নিয়ে এদিন তৃণমূলের ওপর একের পর এক প্রাণঘাতী হামলা চালিয়ে গিয়েছে বাম আর কংগ্রেস শিবির যাকে নীরবে সমর্থন করে গিয়েছে বিজেপিও।