নিজস্ব প্রতিনিধি: পাঁচ বছরের বেশি সময় ধরে চলেছে প্রেম। দুই পরিবারের তীব্র আপত্তি সত্ত্বেও, ছেলের পরিবারের হাতে মেয়ের পরিবারের অপমান সত্ত্বেও, সেই প্রেম কার্যত একা হাতেই টেনে নিয়ে যাচ্ছিল মেয়েটি। কিন্তু যাকে পাওয়ার জন্য, বিয়ে করার জন্য সেই লড়াই ছিল, সেই ছেলেটিরই বিয়ে ঠিক হয়ে যাওয়ায়, নিজের জীবনের লড়াইটাই থামিয়ে দিল মেয়েটা। চরম সিদ্ধান্ত নিয়ে নিজেকেই শেষ করে দিয়েছে সে। সোশাল মিডিয়ায়(Social Media) সমস্ত ফাঁস করে আত্মহত্যার পথে হাঁটা দিয়েছে মেয়েটি। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করেই এখন তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়েছে উত্তরবঙ্গের(North Bengal) মালদা(Malda) জেলার ইংরেজবাজার সদর মহকুমার মানিকচক(Manikchawk) থানার নাজিরপুরের পূর্বপাড়া এলাকায়। মানিকচক থানার পুলিশ মেয়েটির দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠিয়েছে। পাশাপাশি গোটা ঘটনা তদন্ত শুরু করেছেন তাঁরা।
জানা গিয়েছে, থানার নাজিরপুরের পূর্বপাড়ার বাসিন্দা মিমি রায় নাজিরপুরেরই বাসিন্দা মানব সরকারের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তুলেছিল। সেই প্রেমের সূত্রেই একাধিকবার সহবাসের সম্পর্কে জড়িয়েছিল দুইজনে। মিমি তারপর থেকে মানবকে বিয়ের জন্য চাপ দিলেও মানব কিছুতেই বিয়ের জন্য রাজী হচ্ছিল না। সম্প্রতি মিমি জানতে পারে মানব অন্য কারও সঙ্গে সম্পর্কে জড়িত। শুধু তাই নয়, তার বিয়েও ঠিক হয়ে গিয়েছে ওই মেয়েটির সঙ্গে। এরপর সোমবার মানবের বাড়িতে চলে যায় মিমি। সেখানে সে সব কথা খুলে জানালেও কোনও সহমর্মিতা বা পাশে দাঁড়ানোর ঘটনা তো ঘটেনি, উল্টে জোটে অপমান আর গঞ্জনা। তারপরেই বাড়ি ফিরে আসে সে। রাতে না ঘুমিয়ে সোশ্যাল মিডিয়াতে সব খুলে জানিয়ে দেয় সে। এদিন অর্থাৎ মঙ্গলবার সকালে তাঁদের বাড়ি থেকে কিছুটা দূরে গলায় ফাঁস লাগানো অবস্থায় তাঁর দেহ উদ্ধার হয়েছে।
মিমির আত্মহত্যার ঘটনা সামনে আসতেই মানব ও তার পরিবারের কঠোর শাস্তির দাবি তুলেছে মিমির পরিবার সহ গ্রামবাসীরা। মিমির দেহের পাশ থেকে এদিন একটি সুইসাইড নোট উদ্ধার করেছে পুলিশ। মৃত্যুর আগে সোশ্যাল মিডিয়াতে মিমির করে যাওয়া পোস্টে অভিযোগ তোলা হয়েছে যে, তাঁর প্রেমিক মানব সরকার কার্যত তাঁকে প্রতারণা করছিল। সে অন্য কারও সঙ্গেও সম্পর্ক গড়ে তুলেছিল। এমনকি বিয়েও ঠিক হয়ে গিয়েছিল মানবের। গ্রামবাসীদেরও অভিযোগ মিমির মৃত্যুর জন্য মানব ও তার পরিবারের সদস্যরাই দায়ী। একইসঙ্গে তাঁদের আশঙ্কা, মানব প্রভাবশালী পরিবারের ছেলে। প্রভাব খাটিয়ে কোনওরকম ভাবে সে তদন্তে্র হাত থেকে রেহাই পাওয়ার চেষ্টা করবে। তাই তাঁরা চান পুলিশ প্রশাসন যাতে কোনওরকম গাফিলতি না করে। সঠিক তদন্ত করে উপযুক্ত শাস্তি দিক মানবকে।