নিজস্ব প্রতিনিধি: বিস্ফোরক তথ্য। পার্থ’র(Partha Chattopadhay) মতো বুড়ো ঘুঘুকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে অর্পিতা(Arpita Mukhopadhay) ১০ কোটি টাকা নিয়ে পালিয়ে গিয়েছিল মুম্বই(Mumbai)। ইচ্ছা ছিল সেখানে ওই টাকা দিয়ে নতুন জীবন শুরু করার পাশাপাশি বলিউডের সিনেমার নায়িকা হওয়ার। কিন্তু বিধি বাম। নিজের প্রভাব খাটিয়ে পুলিশ আর ঘনিষ্ঠজনদের দিয়ে অর্পিতাকে খুঁজে বের করেন পার্থ। মুম্বই থেকে অর্পিতাকে তাঁরা ফিরিয়ে এনে তুলে দেন পার্থ’র হাতে। এই চাঞ্চল্যকর ঘটনা এখন তদন্তে নেমে জানতে পেরেছেন ইডির(ED) আধিকারিকেরা। শুধু তাই নয়, যে অর্পিতা এখন নিত্যদিন ক্যামেরার সামনে হাত-পা ছুঁড়ে কান্নাকাটির নাটক করছেন, বার বার দাবি করছেন তাঁকে নাকি ফাঁসিয়ে দেওয়া হয়েছে, বাস্তবে সেই ছবিটাই পুরো উলটো। পার্থকে রীতিমত ব্ল্যাকমেইল করত অর্পিতা। তাঁর যে বিপুল সম্পত্তি উদ্ধার হয়েছে তার নেপথ্যে ছিল পার্থ’র কাছ থেকে আদায় করা কমিশনের টাকা।
ইডির আধিকারিকেরা যেদিন অর্পিতার হরিদেবপুর ও বেলঘরিয়ার ফ্ল্যাটে তল্লাশি চালিয়েছিলেন তখন তাঁরা দেখেছিলেন সেই সব টাকা দুই ভাগে ভাগ হয়ে আছে। তার জেরে তাঁরা অর্পিতাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে জানতে পেরেছিলেন যে এক ভাগ টাকা পার্থ’র, আরেক ভাগ টাকা অর্পিতার কমিশন। ইডি সূত্রের দাবি, ২০১২ সাল নাগাদ প্রতি লক্ষ টাকায় অর্পিতার কমিশন ছিল ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা। সেই সময় ওড়িয়া সিনেমার এক অভিনেতার সঙ্গে প্রেম করছিলেন অর্পিতা। কিন্তু তারপরেও পার্থ’র কাছে কে বা কারা আসতেন, কে টাকা দিতেন, কত দিতেন, কেন দিতেন এই সব কিছু ছিল তাঁর নখদর্পণে। কীভাবে অর্পিতা সেই তথ্য পেতেন তা অবসশ্য এখনও জানতে পারেননি ইডি আধিকারিকেরা। তবে অর্পিতার এই খবরদারি পছন্দ হচ্ছিল না পার্থ’র। তার জেরে ২০১২ সালে নগদ ১০ কোটি টাকা নিয়ে মুম্বই পালিয়ে যান অর্পিতা। সঙ্গে সেই ওড়িয়া অভিনেতা। শুধু তাই নয়, অর্পিতা নিজের মোবাইলও তখন সুইচ অফ করে দিয়েছিলেন যাতে পার্থ তাঁর সন্ধান না পান। কিন্তু অর্পিতাকে ধরিয়ে দিয়েছিল সেই ওড়িয়া অভিনেতাই। বাংলার পুলিশকে কাজে লাগিয়ে অর্পিতাকে মুম্বই থেকে ফেরত আনান পার্থ। কার্যত খালি হাতেই কলকাতায়(Kolkata) ফিরতে হয় অর্পিতাকে। কেননা ওই ১০ কোটি টাকা নিয়ে তখন ধাঁ হয়ে গিয়েছেন ওই ওড়িয়া অভিনেতা।
পার্থ অর্পিতাকে কলকাতায় ফিরিয়ে এনে তাঁর সঙ্গে কোনও খারাপ ব্যবহার করেননি। খালি তাঁর কমিশন বাড়িয়ে ৩০ শতাংশ করে দিয়েছিলেন। কার্যত তার পর থেকেই অর্পিতা ফুলে ফেঁপে উঠতে থাকেন। ২০১৩ সাল থেকে অর্পিতার উত্থান ছিল রীতিমত নজরকাড়া। সেই সময় থেকেই অর্পিতার সম্পত্তি, তাঁর আত্মীয়পরিজনদের সম্পত্তি বাড়তে শুরু করে। পার্থ’র আশেপাশে অর্পিতার দাপটও সেই সময় থেকেই অনেকেরই চোখে পড়তে শুরু করে। এখন তাঁরা দেখছেন ঠিক কোন পথে এসেছিল অর্পিতার এই বিপুল সম্পত্তি আর কীভাবেই বা এত দাপট দেখাত অর্পিতা।