নিজস্ব প্রতিনিধি: সরকার অনুমোদিত রেশন দোকান মানে সেখানে বাজারের তুলনায় পণ্য সামগ্রীর দাম কম হয়, এমনটাই দেখে অভ্যস্ত সাধারণ মানুষ। কিন্তু উলটো পরিস্থিতি এখন রাজ্যের অনুমোদিত রেশন দোকানগুলিতে। সেখানে ভোজ্য তেলের দাম বাজারের তুলনায় বেশি! এমন উলটপুরাণ কাণ্ড নিয়ে শোরগোল পড়ে গিয়েছে গ্রাহকদের মধ্যে। রেশন ডিলারদের অভিযোগ, দফতরের কিছু আধিকারিকদের যোগসাজশে এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে (Mamata Banerjee) বদনাম করতে দফতরের আধিকারিকরা এই কারসাজি করছে বলে দাবি তাঁদের।
খাদ্য দফতরের তরফে একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করে জানানো হয়েছে, কেন্দ্র সরকারের তরফে অর্থাৎ জাতীয় খাদ্য সুরক্ষা আইনের আওতায় যে কার্ড রয়েছে, অর্থাৎ সেই অন্ত্যোদয় অন্ন যোজনা আর স্পেশ্যাল প্রায়োরিটি হাউস হোল্ড প্রকল্পের কার্ডে পুজোর উপহার হিসাবে সরষে এবং পাম এই দুই ধরনের ভোজ্য তেল দেওয়া হবে। দেওয়া হবে চিনি ও আটা। যদিও এই কার্ড হোল্ডাররা তা একবারই নিতে পারবেন। আগামী ২৩ সেপ্টেম্বর থেকে ৩১ অক্টোবরের মধ্যে মাত্র একবারই গ্রাহকরা এই সামগ্রী নিতে পারবেন। কিন্তু রেশন ডিলারদের অভিযোগ, ভোজ্য তেলের ক্ষেত্রে যে দাম ধার্য করে দেওয়া হয়েছে, তাতে বাজারের দামের থেকে বেশি দাম রাখা হয়েছে। রেশন ডিলারদের বক্তব্য, খোলা বাজারে যে দামে ভোজ্য তেল বিক্রি হয় সেই দামের থেকে প্রতি লিটারে ১০ থেকে ২০ টাকা করে বেশি দাম নেওয়া হচ্ছে।
সাধারণত বাজারে ১৫০ টাকা থেকে ১৬২ টাকা প্রতি লিটারে বিভিন্ন সংস্থার সরষের তেল বিক্রি হচ্ছে। কিন্তু সরকার অনুমোদিত রেশন দোকানে সেই তেলই বিক্রি করতে বলা হয়েছে ১৬৬ টাকায়! ৫০০ এমএল এর দাম রাখা হয়েছে ৮৯ টাকা। অন্যদিকে পাম তেল লিটার প্রতি ১১৫ টাকার আশপাশে বিক্রি হচ্ছে বাজারে। কিন্তু রেশনে সেই তেল মিলছে ১৩৮ টাকা প্রতি লিটার দামে। রেশনে হাফ লিটার পাম তেলের দাম রাখা হয়েছে ৭০ টাকা। চিনি বা আটার দাম বাজারের দামের সমতুল। রেশনে এমন বেনজির পরিস্থিতি নিয়ে সরব হয়েছে ডিলাররা। ইতিমধ্যে রেশন ডিলারদের সংগঠন অল ইন্ডিয়া ফেয়ার প্রাইস শপ ডিলারস ফেডারেশনের তরফে খাদ্যমন্ত্রী রথীন চক্রবর্তীকে চিঠি দিয়ে অভিযোগ জানানো হয়েছে। সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক বিশ্বম্ভর বসু জানান, খোলাবাজারের তুলনায় রেশনে এই সামগ্রী বিক্রি করতে বলা হচ্ছে বেশি দামে। কেন্দ্র তাদের কার্ডে এমন কোনও পুজো উপহার দেওয়ার নির্দেশ দেয়নি বলে দাবি তাঁর। কিন্তু খাদ্য দফতর থেকে ‘পুশ সেল’ করতে বলা হচ্ছে। তাই খাদ্য দফতরের আধিকারিকদের মধ্যে কোনও চক্র কাজ করছে বলে সন্দেহ তাঁর। তাঁর দাবি, খাদ্য দফতর এবং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বদনাম করতে চাইছেন আধিকারিকরা।
