নিজস্ব প্রতিনিধি: পঞ্চায়েত ভোট(Panchayat Election) মিটেছে। বছর ঘুরলে আরও একটা ভোট। দেশের শাসক বদলের ভোট। ২৪’র মহাযুদ্ধ(General Election)। সেই যুদ্ধের আগে এটাই শেষ একুশে জুলাই(Ekushe July)। তাই এদিনের সভার দিকে তাকিয়ে তৃণমূলের(TMC) নেতা কর্মী মায় সমর্থকেরাও। সকলেই তাকিয়ে বাংলার অগ্নিকন্যা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের(Mamata Banerjee) পানে। দলের সব স্তরের নেতা কর্মীদের এক ছাতার তলায় নিয়ে আয়োজিত এই কর্মসূচিতে লোকসভা ভোটে দলের রণকৌশল কী হতে পারে সেই নিয়ে বার্তা দিতে পারেন তৃণমূলের সুপ্রিমো। পটনা এবং বেঙ্গালুরুর বৈঠকের পর কেন্দ্রীয় স্তরে বিরোধী দলগুলির জোটের যে আবহ তৈরি হয়েছে, সেখানে সিপিএম এবং কংগ্রেসের মতো দলগুলিও রয়েছে। তাই এ দিন রাজ্যে তৃণমূলের বিরোধী সিপিএম এবং কংগ্রেসকে বিজেপির মতোই এক আসনে বসিয়ে তিনি আক্রমণ করেন কি না সেদিকে তাকিয়ে রাজ্য রাজনৈতিক মহল। যে হেতু সর্বভারতীয় স্তরে একটি জোট দানা বাঁধছে, সে ক্ষেত্রে মমতা বাম-কংগ্রেসের প্রতি খানিকটা নমনীয় হতে পারেন? এ নিয়ে রয়েছে জল্পনা। তৃণমূল কী অবস্থান নিতে চলেছে তা এদিনের সমাবশেই স্পষ্ট হয়ে যাবে।
আরও পড়ুন একুশের সকালে জনস্রোত ধর্মতলার পথে, অপেক্ষা জননেত্রীর
পঞ্চায়েত ভোটের পর লোকসভা ভোটে বিজেপি তথা নরেন্দ্র মোদীর সরকারের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের প্রস্তুতিতে নিজেদের তৈরি করার মন্ত্র এদিন একুশের সভা থেকে সঙ্গে নিয়ে ফিরবেন তৃণমূলের নেতা কর্মীরা। সেই মন্ত্র তাঁদের দেবেন বাংলার অগ্নিকন্যা। এবারে পঞ্চায়েত ভোটে জয়ের পর ২১ জুলাই বিজয়োৎসব পালনের কথা ছিল। কিন্তু প্রচুর দলীয়কর্মী প্রাণ হারিয়েছেন তাই এই দিনটিকে মমতা শ্রদ্ধা দিবস হিসেবে পালন করার কথা বলেছেন। বৃহস্পতিবার মঞ্চ পরিদর্শনে এসে সেকথা সাফ জানিয়ে দিয়েও যান তৃণমূল সুপ্রিমো। বলেন, ‘ইন্ডিয়া উইল ফাইট টুগেদার। আমরা সকলে একসঙ্গে, মেরুদণ্ড সোজা রেখে এই স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে লড়াই করব। এই বিশেষ দিনে দেশে নতুন ভোরের সূচনার জন্য শপথ নেব। বিজেপি সন্ত্রাসের সওদাগর। মণিপুরে যে হৃদয়বিদারক দৃশ্যের সাক্ষী থাকল গোটা দেশবাসী, তা নারীসুরক্ষার দিকে আঙুল তুলতে বাধ্য করছে। বিজেপির শাসনকালে নারীদের প্রতি ঘটে চলেছে একের পর এক হিংসাত্মক ঘটনা। কিন্তু এবারের হিংস্রতার চরম সীমাকে ছুঁয়ে ফেলল। আমরা কয়েকজন মুখ্যমন্ত্রী মণিপুরে যেতে চাই।এবার জয় হবে ‘ইন্ডিয়া’র।’
আরও পড়ুন গ্রামীণ উন্নয়নে বাংলাকে ২৩০০ কোটি টাকা দিচ্ছে NABARD
১৯৯৩ সালের ২১ জুলাই পুলিসের গুলিতে নিহত ১৩ জন তরতাজা যুবকের স্মরণে ফি বছর শহিদ তর্পণ আয়োজন করেন তৃণমূলনেত্রী। কিন্তু এবারের সভায় শুধু তাতে সীমাবদ্ধ থাকছে না তাঁর দল। পঞ্চায়েত ভোটে নিহত তৃণমূল কর্মী-সমর্থকদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধাও জানানো হবে। সেই সভামঞ্চ থেকেই নরেন্দ্র মোদি তথা কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে মমতা-অভিষেক যে সরব হবেন, তা বলাই বাহুল্য। ঘটনাচক্রে চলতি সপ্তাহেই দেশের বিরোধী দলগুলি মিলে তৈরি করেছে মহাজোটের মঞ্চ ‘ইন্ডিয়া’। তাকে সামনে রেখেই বিজেপির বিরুদ্ধে তাঁরা আক্রমণের ঝাঁঝ সপ্তমে তুলবেন, এটাই অনুমেয়। তাই আজ সেদিকে নজর থাকবে বাংলা সহ গোটা দেশের। কোন কোন শব্দবন্ধে মমতা নিশানা করবেন মোদি-বিজেপিকে, তার দিকেও তাকিয়ে থাকবে বাংলা সহ গোটা দেশ। নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম বৃদ্ধি, বেকারত্ব, রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা বিক্রি করে দেওয়া থেকে বিভাজন, অত্যাচার আর সন্ত্রাস—বিজেপির বিরুদ্ধে এই সব বিষয়ে মমতা কী বলেন সেই দিকেও তাকিয়ে থাকবেন সকলে।