নিজস্ব প্রতিনিধি: বাংলার(Bengal) দুই পরিযায়ী কিশোর শ্রমিককে পিটিয়ে খুন করে দেওয়া হয়েছে নরেন্দ্র মোদির(Narendra Modi) গুজরাতে(Gujrat)। মৃতরা হল রাহুল শেখ(১৮) ও সুমন শেখ(১৬)। বাড়ি পূর্ব বর্ধমান(Purba Burdwan) জেলার কালনা(Kalna)-১ ব্লকের কৃষ্ণদেবপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের নতুনচর গ্রামে। গুজরাতে কাজ শিখতে গিয়েছিল তারা। অথচ সেখানেই তাদের মিথ্যা চোর অপবাদ দিয়ে পিটিয়ে মেরে দেওয়া হয়েছে। মাসদুয়েক আগে ওই দুজন গুজরাটের রাজকোটে একটি সোনা-রুপোর দোকানে কাজ শিখতে যায়। সেই দোকান থেকেই রুপো চুরি যাওয়ায় দোকান মালিকের সন্দেহ যায় তাঁদের ওপর। অভিযোগ, এর পরই কয়েকজন মিলে বেধড়ক মারধর করে তাঁদের। যার ফলে মৃত্যু হয় তাঁদের। খবর পেয়ে স্থানীয় পুলিশ মৃতদেহ উদ্ধার করে।
রবিবার এই দুই কিশোরের পরিবারের সদস্যরা গুজরাতের পথে রওয়ানা দেন তাদের দেহ ফিরিয়ে আনার জন্য। মৃত রাহুলের কাকা আমির চাঁদ শেখ জানিয়েছেন, ‘আমরা দিন আনা দিন খাওয়া পরিবারের লোক। কোনওরকমে সংসার চালাই। জমিজমা নেই। দিনমজুরের কাজ করতে হয়। তাই ভাইপোকে কাজ শিখতে গুজরাতের রাজকোটে পাঠানো হয়েছিল। ওখানেই ওদের মিথ্যা চোর অপবাদ দিয়ে পিটিয়ে মেরে দিয়েছে। বৃহস্পতিবার ওই ঘটনার পর আমরা শুক্রবার খবর পাই।’ ছেলেদের মৃতদেহ আনতে রবিবার গুজরাতের উদ্দেশ্যে পাড়ি দিয়েছেন রাহুল ও সুমনের বাবা ফরসাদ শেখ ও নিজাম শেখ। ফরসাদ শেখ জানিয়েছেন, ‘আবাস যোজনায় ঘর মিলেছে। তাই কোনওরকমে মাথার ওপর একটা ছাদ করতে পেরেছি। ছেলে আমার সঙ্গেই দিনমজুরের কাজ করত। ওরা ছেলেটাকেই মেরে দিল।’
ছেলেদের এইভাবে মেরে ফেলার ঘটনায় দোষীদের কঠিন ও কঠোর শাস্তির দাবি জানিয়েছে দুই পরিবার। এবিষয়ে হুগলি জেলা পরিষদের সদস্য তথা তৃণমূল নেত্রী আরতি হালদার জানিয়েছেন, ‘গুজরাতে আইনের কোনও শাসন নেই। বাংলার দুই তরতাজা প্রাণকে এভাবে মেরে ফেলার ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই। প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করে মৃতদের দেহ আনানোর ব্যবস্থা করা হচ্ছে। আমরা শোকার্ত পরিবারের পাশে রয়েছি। দোষীদের শাস্তির দাবিও জানিয়েছি।’