নিজস্ব প্রতিনিধি: চলতি মাসেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়(Mamata Banerjee) কেষ্টগড় বীরভূম(Birbhum) জেলা সফরে যেতে পারেন বলে জানা গিয়েছে। ১৭-১৮ ফেব্রুয়ারি নাগাদ সেই সফর হতে পারে বলে জানা গিয়েছে। বীরভূম জেলার সদর শহর সিউড়িতে(Suri) তিনি করবেন প্রশাসনিক সভা। সেখান থেকে আমজনতার হাতে সরকারি পরিষেবা পৌঁছে দেওয়ার পাশাপাশি কয়েকশো কোটি টাকার নানা প্রকল্পের উদ্বোধন ও শিলান্যাস করবেন তিনি। আপাতত ঠিক হয়েছে সিউড়ির চাঁদমারি ডাঙাল বা মাঠে। ইতিমধ্যেই সেই মাঠ পরিদর্শন সেরে ফেলেছেন জেলার প্রশাসনিক আধিকারিকেরা। একই সঙ্গে জানা গিয়েছে, মুখ্যমন্ত্রী এই সফরে বোলপুরের(Bolpur) বাউল বিতানের(Baul Bitan) উদ্বোধন করতে পারেন। রাজ্য পর্যটন দফতর ও পর্যটন উন্নয়ন নিগমের উদ্যোগে বোলপুরের সিয়ানে গড়ে উঠেছে বাউল বিতান পর্যটন কেন্দ্র। সেখানে শান্তিনিকেতনে ঘুরতে আসা পর্যটকদের জন্য থাকছে নানা আকর্ষণ।
বীরভূম জেলা তৃণমূলের সভাপতি অনুব্রত মন্ডল(Anubrata Mondol) এখন তিহারে। এদিকে দুয়ারে কড়া নাড়ছে ২৪’র ভোট(General Election 2024)। এই অবস্থায় বীরভূমের ২টি লোকসভা কেন্দ্রই ধরে রাখতে দলনেত্রী হিসাবে মমতা কোন রণকৌশক ঠিক করে দেন এবং দলকে কী বার্তা দেন সেইদিকে সবাই তাকিয়ে থাকবেন। পরিবর্তনের আগে বীরভূম বাম দুর্গ থাকলেও পরিবর্তনের পরে এই জেলা এখন রীতিমত তৃণমূলের(TMC) গড় হয়ে উঠেছে। যদিও একুশের ভোটে সেই গড়েই একটি আসনে পদ্মফুল ফুটেছে। সেই আসন হল দুবরাজপুর, যার পাশেই অবস্থান জেলা সদর সিউড়ির। দুই শহরের মধ্যেকার দূরত্ব খুবই কম। এই অবস্থায় সিউড়ির মাটিতে দাঁড়িয়ে জেলায় পদ্মের চাষ থেকাতে মমতা জেলাবাসীকে কী বার্তা দেন সেইদিকেও সকলে তাকিয়ে থাকবেন। একই সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর জেলা সফর মানেই সেই জেলার বাড়তি কিছু পাওনা থাকে। সেই দিকেও তাকিয়ে থাকবেন জেলাবাসী। এই সফরে মুখ্যমন্ত্রী বোলপুরেও যেতে পারেন বলে গুঞ্জন আছে। তবে তাঁর সফরসূচীর দিনক্ষণ এবং কার্যাবলী এখনও চূড়ান্ত না হওয়ায় সবতাই অনুমানের ওপর দাঁড়িয়ে আছে।
তবে মুখ্যমন্ত্রীর এই সফরে বাড়তি নজর কাড়বে অবশ্যই বাউল বিতানের উদ্বোধন। প্রতিদিন কয়েক হাজার মানুষ ভিড় জমান বোলপুর ও শান্তিনিকেতনে। সম্প্রতি শান্তিনিকেতন পেয়ে গিয়েছে UNESCO’র World Heritage সম্মান। তারপর এই প্রথম মুখ্যমন্ত্রী বীরভূম জেলা সফরে আসছেন। তাই নজর থাকবে তিনি শান্তিনিকেতনে আসেন কী আসেন না সেই দিকেও। বীরভূম জেলা পরিষদের তত্ত্বাবধানে ১০ একর জায়গার ওপর বোলপুরের সিয়ানে প্রায় ১৯ কোটি টাকা ব্যয়ে গড়ে উঠছে বাউল বিতান। শান্তস্নিগ্ধ পরিবেশে গড়ে ওঠা সেই পর্যটন কেন্দ্রে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে শান্তিনিকেতনের কৃষ্টি ও সংস্কৃতিকে। সমস্ত কিছুতেই থাকছে কবিগুরুর ছোঁয়া। ইতিমধ্যেই তৈরি হয়েছে ৩২টি কটেজ। এছাড়াও থাকছে ক্যাফেটেরিয়া, ১০০ আসন বিশিষ্ট অডিটোরিয়াম, বাউল আখড়া, মুক্তমঞ্চ। প্রতিদিনই এখানে বীরভূমের বিভিন্ন এলাকার বাউল শিল্পীদের নিয়ে সেখানে নানা ধরনের অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে। পাশাপাশি হারিয়ে যেতে বসা নানা ধরনের লোকশিল্পকেও তুলে ধরা হবে।