নিজস্ব প্রতিনিধি, ঢাকা: চোরাপথে নন, সরকারি অনুমতি নিয়েই সুন্দরবনের নদীতে মাছ ধরেতে গিয়েছিলেন সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার রমজাননগরের তিন মৎস্যজীবি। জ্বালানির জন্য কাঠ সংগ্রহ করার সময়ে তিন জনের মধ্যে একজন খালের পাড়ে নামেন। আর তখনই জঙ্গল থেকে বেরিয়ে মূর্তিমান আতঙ্কের মতো তাঁর উপরে হামলে পড়ল দক্ষিণ রায়। ছিটকে পড়েন ওই মৎস্যজীবি। সঙ্গীর এমন অবস্থা দেখে আতঙ্কিত না হয়ে ঠাণ্ডা মাথায় বাকি দুই মৎস্যজীবি নৌকার বৈঠা ও দা নিয়ে বাঘকে লক্ষ্য করে ঝাঁপিয়ে পড়েন। আর তাতেই ঘাবড়ে গিয়ে বাঘ মামা গভীর জঙ্গলে চম্পট দেয়। আহত মৎস্যজীবিকে উদ্ধার করে শ্যামনগর উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি করা হয়েছে। সাক্ষাৎ মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে আসার জন্য দুই সঙ্গীকে কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন বাঘের থাবা খাওয়া মৎস্যজীবি।
বন দফতরের সুন্দরবনের সাতক্ষীরা রেঞ্জের আধিকারিক হারুন-অর-রশিদ ব্যাপারী সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, গত ২৯ জানুয়ারি মাছ ধরার অনুমতি নিয়ে সুন্দরবনে যান বাবলু সানা, আবু হায়াত ঢালী ও নূর ইসলাম গাজী। রবিবার বিকালে কৈখালীর দারং খালের পাশে কাঠ সংগ্রহ করতে যান আবু হায়াত ঢালী। তখনই বাঘের আক্রমণের মুখে পড়েন। কিন্তু বাকি দুই সঙ্গীর সাহসিকতায় প্রাণে ব্বেঁচেছেন। সোমবার সকালে বাঘের হামলায় আহত আবু হায়াত ঢালীকে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি করা হয়েছে। মুখ ও গলায় কিছুটা ক্ষত হলেও যথেষ্টই সুস্থ রয়েছেন তিনি।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী বাবলু সানা সাংবাদিকদের বলেন, ‘খালের পাড়ে নামার সঙ্গে সঙ্গে বাঘ আবু হায়াতের মুখে থাবা মারে। চোখের সামনে সঙ্গীকে আক্রান্ত হতে দেখে ভয় না পেয়ে বৈঠা আর দা নিয়ে আমরাও ঝাঁপিয়ে পড়ি। বেশ কিছুক্ষণ আমাদের দিকে তাকিয়ে শেষ পর্যন্ত গভীর জঙ্গলে ফিরে যায়।’