নিজস্ব প্রতিনিধি, ঢাকা: স্কুল।
শব্দটা কানে গেলে চোখের সামনে ভেসে ওঠে একটা সুন্দর রঙিন ছবি। আর ছোটদের স্কুল হলে সেই ছবি আরও রঙিন। কচিকাচাদের হৈচৈ। আর তাদের থামাতে মাঝে-মধ্যেই দিদিমণির ধমক। তারপর টিফিনের ঘণ্টা বাজলে হৈহৈ করে একসঙ্গে খাওয়া। বেল বাজলে নিজেদের শ্রেণিকক্ষে ফিরে ফের পড়াশোনা। আর ক্লাস শেষ হলে হৈহৈ করে বাড়ি ফেরা।
এমনও প্রাথমিক স্কুল আছে, যেখানে পড়ুয়া মাত্র একজন। শিক্ষিকা তিনজন। আর ক্লাস শুরুর ঘণ্টা সেই পড়ুয়াই বাজায়। ছুটির ঘণ্টা বাজিয়ে বাড়ি ফেরে। এবার সেই স্কুলের গল্প বলা যাক। এই স্কুলের ঠিকানা বাংলাদেশের খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলার ময়নাপুর গ্রামে। স্কুলের নাম ময়নাপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়। শিক্ষার্থী বর্তমানে দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়ে।
বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা স্বপ্না রানি জানিয়েছেন, ‘অন্যান্য স্কুলের মতো এই স্কুলেও ক্লাস হয়। ক্লাস শুরুর আগে প্রার্থনা, স্কুল শেষে ঘণ্টা। কিন্তু পড়ুয়া মাত্র একজন। তাই বলে তাঁকে তো আর ফেলে রাখা যায় না। একজন পডু়য়াকে নিয়েই আমাদের স্কুল চলে।’ একমাত্র পড়ুয়ার জন্য স্কুলে আলাদা একটি কক্ষ রয়েছে। পড়ানো হয় তিনটি বিষয়। রয়েছেন তিন শিক্ষক।
কিন্তু কেন এই করুণ চিত্র? জানা গিয়েছে, স্কুলটি যে এলাকায়, সেই এলাকায় জন্মহার কম। তাই, প্রাথমিকে পড়ুয়ার অভাব দেখা দিয়েছে। আগে এই গ্রামে প্রচুর ভারতীয় বসবাস করতেন। স্বাধীনতার পর তাঁরা ভারতে চলে এসেছেন। যে সব পরিবার বর্তমানে সেখানে বসবাস করছে, তাদের সন্তান থাকলেও স্কুলে ভর্তির বয়স হয়নি। তাই, নতুন পড়ুয়া না আসা পর্যন্ত একজনকে নিয়েই চলতে হবে।