নিজস্ব প্রতিনিধি, ইসলামাবাদ: মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দাক্ষিণ্যে অবৈধভাবে দেশের শাসনক্ষমতা দখল করার পরে এবার বিরোধী দলের উপরে দমনপীড়ন শুরু করে দিল শাহবাজ শরিফের সরকার। শনিবার এক পুরনো মামলায় বেধড়ক মারধরের পাশাপাশি দেশের প্রাক্তন মন্ত্রী তথা বিশিষ্ট মানবাধিকার নেত্রী শিরিন মাজাহারিকে গ্রেফতার করল পুলিশ। আর গ্রেফতারি নিয়ে নিন্দার ঝড় উঠেছে গোটা দেশেই। সমাজকর্মী থেকে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা শিরিন মাজাহারির গ্রেফতারির নিন্দায় সরব হয়েছেন। এমনকী সরকারের শরিক তথা প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী বেনজির ভুট্টর দল পাকিস্তান পিপলস পার্টির (পিপিপি) সেনেটর মোস্তফা নওয়াজ খোখার প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের ঘনিষ্ঠ শিরিন মাজাহারির গ্রেফতারির বিরুদ্ধে মুখ খুলে বলেছেন, ‘গ্রেফতারের ঘটনাটি দুঃখজনক। এটি রাজনৈতিক নিপীড়নের সবচেয়ে খারাপ রূপ।’
দেশের প্রাক্তন মানবাধিকার বিষয়ক মন্ত্রী শিরিন মাজাহারির গ্রেফতারের ভিডিও ইতিমধ্যেই সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। ওই ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, প্রবীণ মন্ত্রীকে টেনে-হিঁচড়ে গাড়িতে তুলছেন বেশ কয়েকজন মহিলা পুলিশ কর্মীকে। এমনকী গাড়িতে তোলার সময়ে তাঁকে মারধরও করা হচ্ছে। দুর্নীতি দমন সংস্থার পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে সম্পত্তি আত্মসাতের মামলাতেই শিরিন মাজাহারিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ধৃত মন্ত্রীর মেয়ে ইমান জয়নব টুইটারে লিখেছেন, ‘আমার মাকে পুরুষ পুলিশ কর্মকর্তারা মারতে মারতে নিয়ে গেছেন। মায়ের কিছু হলে তাদের কাউকে রেহাই দেওয়া হবে না।’
তবে মাজাহারির গ্রেফতারের খবর ছড়িয়ে পড়ার পরেই নিন্দার ঝড় উঠেছে। গ্রেফতারের ঘটনাকে রাজনৈতিক নির্যাতন হিসেবে আখ্যা দিয়েছে পাকিস্তানের মানবাধিকার কমিশন। সাংবাদিক মাজহার আব্বাস এক টুইট বার্তায় লিখেছেন, ‘বর্তমান সরকারের শীর্ষ নেতারা যে অতীত থেকে শিক্ষা নিতে মোটেও রাজি নন, তা ফের প্রমাণিত। যেভাবে মাজাহারিকে গ্রেফতার করা হয়েছে তা লজ্জাজনক।’ জাতীয় পরিষদের সদস্য (এমএনএ) ও পিপিপি’র নেত্রী নাফিসা শাহ বলেছেন, ‘শিরিনের বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ নেই। তাঁকে গ্রেফতার করা ভুল।’ ওয়াশিংটনের উইলসন সেন্টারের দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক স্কলার মাইকেল কুগেলম্যানের মতে, ‘প্রাক্তন মন্ত্রীকে অন্যায়ভাবে গ্রেফতারের ঘটনা ইমরান খান ও তার দলকে আরও শক্তিশালী করবে। পাশাপাশি নতুন সরকারকে দুর্বল করবে।’