নিজস্ব প্রতিনিধি: বাঙালি যেখানে সেখানে দুর্গাপুজো হবে না! তা কি কখনও হয়? নাই বা থাকল শরৎ এর নীল আকাশ আর পেঁজা তুলো ও প্রকৃতির বাতাসে পুজো পুজো গন্ধ। ভোররাতে বাগানে কোঁচর ভর্তি করে শিউলি কোড়ানো কিংবা সারা রাত জেগে প্যান্ডেল হপিং-এর মজা বাংলার বাইরে মেলা মুশকিল। তবে বাংলার বাইরেও দুর্গাপুজোয় যে কোনও বাঙালিই মেতে ওঠেন। তাতে হয়তো শরতের নীল আকাশ বা কাশবনের ভিতর দিয়ে ঠাকুর নিয়ে আসার দৃশ্য ধরা পড়েনা, তবে বাড়ি থেকে দূরে প্রবাসী বাঙালিরাও নিজের মতো করে মেতে ওঠেন তাঁদের এই প্রাণের উৎসবে।
সিলিকন সিটি ব্যাঙ্গালুরু। প্রচুর বাঙালি বড় বড় অফিসে আইটি সেক্টরে, ছোটখাট ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানে বাঙালিরা নিজ উদ্যোগ থেকে চাকরি সূত্রে বেশ কয়েক বছর ধরে রয়েছেন। কেউ কেউ আবার নিজেদের বাড়ি ঘর বানিয়ে এখানেই পরিবার নিয়ে দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে বসবাস করছেন। তবু পুজো এলেই পুজোর এই চারদিন মনটা বশে রাখা দায়। ব্যাঙ্গালুরুর বেশ কয়েকটি এলাকায় বেশ বড় সড় পুজো হয় বাঙালিদের। তেমন একটি নামকরা ইলেকট্রনিক সিটির অনন্তনগর এলাকার বাঙালিদের অগ্রনী সোসিও কালচারাল অ্যাসোসিয়েশন।
যদিও কোভিড প্যানডেমিক নামক এক মহিষাসুর এসে গতবছর পুজোর আনন্দ কেড়ে নিয়েছিল। এবারে কোভিড বধের দুটি ভ্যাক্সিন ডোজের পর করোনা অতিমারি যে উৎসবের আমেজ ফিকে করে দিয়েছিল তা ফিরে আসতে চলেছে। যদিও সরকারের অনুমতি শেষ মুহুর্তে ও কড়া করোনার সতর্কবিধি মেনে চলার লিখিত জমা দেবার পর অনুমতি দিয়েছে। তাই অনান্যবার যেখানে খোলা আকাশের নিচে মন্ডপ বানিয়ে ঢাক ঢোল পিটিয়ে পুজো হতো। এবার কিন্তু কোভিড বিধির জন্য সেরকমটি হবার নয়। তাই হলঘর ভাড়া নিয়ে সেখানেই দুর্গা পুজোর আনন্দে মেতে ওঠা। এবারে তাদের পুজো ১০ বছরে পদার্পন করল। সপ্তমী, অষ্টমী, নবমী এই তিনদিন মায়ের পুজোয় অঞ্জলি দেওয়া আর ভোগ খেয়ে কাটিয়ে দেবে এলাকার বাঙালি মানুষজন। সঙ্গে সন্ধ্যায় থাকছে বাঙালির নানা কালচারাল অনুষ্ঠানের মধ্যমে এই ব্যাঙ্গালুরুর মত সিলিকন সিটিতেও বাঙালিরা ও দেখিয়ে দিতে পারে তাদের সংস্কৃতির শিকড় তারা কতটা আঁকড়ে ধরে রাখতে পেরেছেন।