নিজস্ব প্রতিনিধি: গুসকরা-মানকর সড়কপথে পড়ে আনন্দময়ীতলা। মানকর একসময় ছিল শক্তি আরাধনার অন্যতম কেন্দ্র। পঞ্চ কালী, বড় কালী ও শিবাখ্যার মতো মানকরে আনন্দময়ী তলায় প্রসিদ্ধ মা আনন্দময়ী। ১৮১৫ সালে এই মন্দির নির্মান হয়েছিল বলে জানা যায়। ফলে নয় নয় করে ২০৯ বছরের প্রাচীন এই মন্দির। রাজবল্লভ গুপ্ত কর্তৃক আনন্দময়ী মাতার মন্দির প্রতিষ্ঠা হয়েছিল বলে একটি প্রাচীন ফল পাওয়া যায় মন্দির চত্বরেই। প্রাচীরে ঘেরা মন্দির অঙ্গন। মূল দেবীমন্দিরের সামনেই নাটমন্দির। মন্দির ও নাটমন্দিরের সারা গায়ে প্রাচীনত্বের ছাপ।
অনেকটা কলকাতার কালিঘাট মন্দিরের আদলে তৈরি মূল দেবীমন্দির। মন্দিরের দুই পাশে দুটি শিবমন্দির। তাতে দুটি শ্বেতপাথরের শিবলিঙ্গ। মন্দিরের ডানদিকে ভোগ রান্নাঘর, তারপরে মায়ের পুকুর। নাটমন্দিরে বলির ব্যবস্থা আছে। তবে বর্তমানে পূণ্যার্থীদের মানসিক করা বলি দেওয়া হয় মন্দির অঙ্গনের বাইরে। প্রাচীন এই মন্দিরের মূল আকর্ষণ অবশ্যই দেবীমূর্তিটি। মানকরের আনন্দময়ীতলায় অতি প্রাচীন এমন মধুর হৃদয় মন মুচড়ে দেওয়া নয়নাভিরাম বিগ্রহ আর কোথাও দেখতে পাওয়া যায় বলে মনে করতে পারেন না দর্শনার্থীরা। বেশ অভিনব বিগ্রহ, আকার ও উচ্চতায় তেমন বড় নয়।
তবে মায়ের চোখ দুটি টানা টানা, ফালা ফালা। একনাগাড়ে তাকিয়ে থাকা যায় না, এমন আকর্ষণীয় মোহিনী চোখ। মহাদেব শুয়ে আছেন টান টান হয়ে। তাঁর পেটের উপর শ্বেতপাথরের পদ্ম। পদ্মের উপরে মা কালী তথা মা আনন্দময়ী বিবসনা হয়ে বসে আছেন পদ্মাসনে। উন্নত স্তনযুগল। দেবী যোগযুক্ত হয়ে বসে আছেন যোগাসনে। দেবী ত্রিনয়নী। বস্ত্রহীন উন্মুক্ত সারা দেহে কোনও অলঙ্কার নেই, মাথায় মুকুটও নেই। কষ্টিপাথরের এই ছোট্ট কালীমূর্তি একবার দেখলে আজীবন মনের মনিকোঠায় থেকে যাবে। প্রতি কালীপুজোয় এখানে পুজো হয় মহা ধুমধামের সঙ্গে। প্রচুর ভক্ত সমাগম হয়।