নিজস্ব প্রতিনিধি: দেশের ইতিহাসে এক কালো দিন হয়ে থাকবে ২০১৬ সালের ৮ নভেম্বর। কেননা সেদিনই দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি(Narendra Modi) প্রচলিত ৫০০ ও ১০০০ টাকার নোট বাতিল করে দেন এক ঘোষণার মাধ্যমে। সেই ঘটনায় দেশের কোটি কোটি নাগরিক চরম দুর্ভোগের মধ্যে পড়েন। অনেকে মারাও যান। সেই ঘটনার কয়েকদিনের মধ্যেই বাজারে চলে আসে নতুন ২ হাজার টাকার নোট। সেই ঘটনার পরে সাড়ে ৬ বছর হতে চলল। এখন দেখা যাচ্ছে খোদ দেশের সরকারই আর ২ হাজার টাকার নোটের ওপর খুব একটা ভরসা রাখছে না। Reserve Bank of India বা RBI-ও এখন এই নোট বাজারে ছাড়ছে না, ছাপানো তো বন্ধ করেই দিয়েছে। সর্বসাকুল্যে দেশের বাজারে এখন যত নোট ঘুরছে তার মাত্র ১২ শতাংশ হল ২ হাজার টাকার নোট(2 Thousand Rupee Note)। এই ছবিটাই বলে দিচ্ছে মোদির ভারতে এখন ক্রমশই গুরুত্বহীন হয়ে পড়ছে মোদির বহু সাধের ২ হাজার টাকার নোট।
আরও পড়ুন পঞ্চায়েতে কোনভাবেই বিজেপির সঙ্গে জোট নয়, বার্তা বিমানের
সরকারি পরিসংখ্যান বলছে, বর্তমানে যে নোটগুলি দেশের বাজারে আর্থিক লেনদেনের জন্য চালু রয়েছে, তার মধ্যে সবথেকে বেশি পাওয়া যাচ্ছে ৫০০ টাকার নোট। ৭৪ শতাংশ নোটই এই ৫০০ টাকার নোট। আর পক্ষান্তরে ২ হাজার নোটের পরিমাণ মাত্র ১২ শতাংশ। দেশের মোট ২ লক্ষ ২০ হাজার এটিএম(ATM) মেশিনের মধ্যে সিংহভাগই ২ হাজার টাকার নোট আর দিচ্ছে না। কারণ, ওই মেশিনগুলিকে ২ হাজার টাকার নোট রাখাই হয় না। অর্থাৎ ২ হাজার নোটের যে ক্যাসেট থাকে মেশিনের অভ্যন্তরে সেটি শূন্য। তাই এখন ব্যাঙ্কগুলি(Banks) এটিএম মেশিনের টাকা রাখার কাঠামোর আবার বদল করার চিন্তাভাবনা করছে। সেক্ষেত্রে অতিরিক্ত একটি ক্যাসেট পাওয়া গেলে মেশিনে অতিরিক্ত টাকা রাখা যাবে। দ্রুত মেশিনের টাকা শেষ হবে না।
আরও পড়ুন ‘চোর’ টিপ্পনি জেলের অন্দরেও, অতিষ্ট পার্থ
যদিও সম্প্রতি সংসদে দেশের অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন(Nirmala Sitaraman) বলেছেন যে, ২ হাজার টাকার নোট কম সাপ্লাই দেওয়ার কোনও নির্দেশ রিজার্ভ ব্যাঙ্ককে সরকার দেয়নি। কোন নোট সাপ্লাই করা হবে, কোন নোট বেশি লেনদেন হয় এসবই রিজার্ভ ব্যাঙ্কের সিদ্ধান্ত। মানুষের চাহিদা অনুযায়ী নোটের সাপ্লাই নির্ধারণ করা হয়। মন্ত্রীর এই বক্তব্য গ্রহণ করা যেতেই পারে। কিন্তু প্রশ্ন তো সেই ঘুরে ফিরে এক জায়গাতে এসেই থমকে যাচ্ছে, নোটবন্দী করা হয়েছিল কার বা কাদের স্বার্থে? তাতে লাভই বা কাদের হল? কালোধন কী দেশে ফিরল? মানুষের অ্যাকাউন্টে অ্যাকাউন্টে কী ১৫ টাকা করে এল? অবশ্য যার এই উত্তর দেওয়ার কথা তিনি নিজেই এখন এই বিষয়ে নীরব হয়ে রয়েছেন। নীরব প্রধানমন্ত্রী মোদি।