নিজস্ব প্রতিনিধি: ‘আফগানিস্তানে যে আতঙ্কের পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে, সেই একই পরিবেশ সৃষ্টি হতে পারে জম্মু ও কাশ্মীরে’। গুয়াহাটির একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে কাশ্মীর প্রসঙ্গে এমনই উদ্বেগ প্রকাশ করলেন চিফ অফ ডিফেন্স স্টাফ জেনারেল বিপিন রাওয়াত। এদিন ভূস্বর্গ প্রসঙ্গে তাঁর মন্তব্য, ‘যুদ্ধবিধ্বস্ত আফগানিস্তান তালিবানের দখলে যাওয়ার পরই কাশ্মীরের সীমানায় নজরদারি বাড়ানো ভারতের জন্য বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। আমরা জানি, আফগানিস্তানে যা ঘটছে সেটা জম্মু ও কাশ্মীরেও ঘটতে পারে।’ পাশাপাশি তিনি দেশবাসীকে ‘সতর্ক’ থাকারও পরামর্শও দিয়েছেন।
রবিবার গুয়াহাটির একটি অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসাবে যোগ দেন চিফ অফ ডিফেন্স স্টাফ। আর সেখানেই তাঁকে ভূস্বর্গ নিয়ে একরাশ উদ্বেগ প্রকাশ করতে দেখা গিয়েছে। কাশ্মীরের নিরাপত্তা প্রসঙ্গে এদিন বিপিন রাওয়াত বলেন, আফগানিস্তান তালিবানদের দখলে চলে যাওয়ার পরেই কামসির সীমান্তে নিরাপত্তার ওপর আরও জোর দেওয়া হচ্ছে। যে কোনও খারাপ পরিস্থিতির জন্যই আমাদের সর্বদা প্রস্তুত থাকতে হবে। মূলত সেই কারণেই সমগ্র কাশ্মীর জুড়ে চেকিংয়ের পরিমাণ বাড়ানো হয়েছে। বাড়ানো হয়েছে টহলদারি। তবে এতে যে ভূস্বর্গের সাধারণ মানুষদের নিয়মিত অসুবিধার সম্মুখীন হতে হচ্ছে তা এদিন তিনিও স্বীকার করে নিয়েছেন। এই প্রসঙ্গে তাঁর বক্তব্য, ‘এটা সত্যি যে জম্মু ও কাশ্মীরের স্থানীয় মানুষ এবং বাইরে থেকে আসা পর্যটকদের এই উচ্চ স্তরের সতর্কতার জেরে প্রতিদিন ভারী চেকিংয়ের ঝক্কি পোহাতে হতে পারে। তবে তাঁদের বোঝা উচিত যে এটি তাঁদের নিজস্ব নিরাপত্তা এবং সুরক্ষার জন্যই করা হচ্ছে। ভারতের প্রতিটি নাগরিকের নিজেদের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা সম্পর্কে শিক্ষিত হওয়া উচিত।’
পাশাপাশি এদিন বিপিন রাওয়াত প্রত্যেক মানুষকেই ব্যক্তিগত নিরাপত্তার ওপর জোর দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। এদিন তিনি বলেন, আমাদের নিজেদের নিরাপত্তা নির্ভর করছে নিজেদের ওপরই। তাই আমাদের প্রত্যেকের কর্তব্য হল নিজের নিরাপত্তার বিষয়টি আগে সুরক্ষিত করা। এর জন্য সর্বদা চোখ, কান খোলা রাখতে হবে। আশেপাশে সন্দেহজনক কিছু দেখলে নিকটবর্তী থানায় তা জানাতে হবে। আমরা যদি সর্বদা নিজেদের চোখ, কান খোলা রাখি তাহলে শত্রুপক্ষও আমাদের ওপর সহজে আক্রমণ করতে পারবে না।’
উল্লেখ্য, বিগত কয়েকদিন ধরেই জম্মু কাশ্মীর সীমান্তে পাক জঙ্গিদের অনুপ্রবেশ এবং তার জেরে নাশকতা উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। চলতি মাসেই জঙ্গিদের সঙ্গে গুলির লড়াইয়ে শহিদ হয়েছেন অন্ততপক্ষে ১০ জন ভারতীয় সেনা আধিকারিক। অন্যদিকে, কাশ্মীরে বসবাসকারী সাধারণের ওপরও একাধিক হামলা চালিয়েছে জঙ্গিরা। এর ফলে চলতি মাসে একাধিক সাধারণ মানুষ জঙ্গি হামলায় মারা গিয়েছে।